হোটেলে উদ্ধার মৃতদেহ (ইনসেটে সরবজিৎ কউর)। গ্রেফতার মণীন্দ্র সিংহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
প্রেমিকাকে খুনের অভিযোগে পুলিশ তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল। বেশ কিছু দিন বেপাত্তা থাকার পর অবশেষে নিজেই পৌঁছে গেলেন একটি খবরের চ্যানেলের দফতরে। চ্যানেলের লাইভ সম্প্রচারের মধ্যেই স্বীকার করলেন খুনের কথা। আর সেই ইন্টারভিউ দেখে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে চ্যানেলের দফতরে ছুটল পুলিশ। এমনই চাঞ্চল্যকর ও নাটকীয় ঘটনা ঘিরে তোলপাড় চণ্ডীগড় শহর।
অভিযুক্ত মণীন্দ্র সিংহের (৩১) বিরুদ্ধে ২০১০ সালে আরও এক বান্ধবীকে খুনের অভিযোগ রয়েছে। সেই মামলায় জামিনে মুক্ত ছিলেন তিনি। তার পর অন্য এক তরুণী পেশায় নার্স সর্বজিৎ কৌরের (২৭) সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় একটি হোটেলে ওঠেন মণীন্দ্র। কিন্তু ১ জানুয়ারি, ২০২০ সর্বজিতের গলার নলিকাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তার পর থেকেই ফেরার ছিলেন মণীন্দ্র। খুনের তদন্ত শুরু করে মূল অভিযুক্ত হিসেবে সরবজিতকে খুঁজছিল পুলিশ।
এর মধ্যেই গতকাল মঙ্গলবার একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলের চণ্ডীগড়ের দফতরে পৌঁছে যান মণীন্দ্র। কিছুক্ষণের মধ্যেই টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরাও তাঁর সাক্ষাৎকার সরাসরি সম্প্রচার শুরু করে। সাক্ষাৎকারে মণীন্দ্র দাবি করেন, সর্বজিৎকে তিনি বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সর্বজিতের পরিবার অসবর্ণ বিয়ে মেনে নিতে চাইছিল না। তার জেরে তাঁরা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করতে চাইছিলেন।
মণীন্দ্রর দাবি, গত ছ’মাস ধরে বিয়ের কথাবার্তা চলছিল দুই পরিবারের মধ্যে। কিন্তু সর্বজিতের পরিবার কিছুতেই মেনে নিতে চাইছিল না। কখনও আবার সরকারি চাকরি না করার অভিযোগ তুলেও সর্বজিতের পরিবার বিয়ে মানতে চাইছিল না বলে দাবি করেন মণীন্দ্র। সর্বজিৎ এও অভিযোগ করেন, সর্বজিতের সঙ্গে তাঁর বৌদির ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল। এই সব কারণে ঘটনার দিন অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি রাতে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছিল এবং তার জেরে সর্বজিৎকে তিনি গলা কেটে খুন করেন বলে ওই সরাসরি সম্প্রচারের অনুষ্ঠানেই স্বীকার করেন মণীন্দ্র। শুধু তাই নয়, ২০১০ সালে অন্য বান্ধবীকে খুনের কথাও কবুল করেন তিনি।
পুলিশ মণীন্দ্রকে খুঁজছিলই। তার মধ্যে এই সাক্ষাৎকার এবং সরাসরি সম্প্রচারের খবর পৌঁছয় তিন কিলোমিটার দূরের থানায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ওই টিভি চ্যানেলের অফিসে হানা দেয় পুলিশ বাহিনী। ইন্টারভিউয়ের মাঝপথেই তাঁকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান পুলিশকর্মী-অফিসাররা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy