ভোটার তালিকায় নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা বা বাদ দেওয়ার কাজে অবৈধ ভাবে হস্তক্ষেপের জন্য নির্বাচন কমিশনের অনলাইন প্রযুক্তি দেখভালের দায়িত্বে থাকা এক আধিকারিককে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয়।
পর্যবেক্ষকদের একাংশেরমতে, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারের উপস্থিতি এবং আচমকা যোগ্য ভোটারের নাম বাদ যাওয়া নিয়ে যে বিতর্ক সম্প্রতি তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে এই ঘটনার। সাসপেন্ড হওয়া আধিকারিক দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কর্মরত ছিলেন। এই একটি ঘটনার সূত্রে গত প্রায় দু’বছরের যাবতীয় তথ্য সিইও কার্যালয়ের থেকে চেয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
ভোটার তালিকায় নাম ওঠা বা বাদ যাওয়াকে কেন্দ্র করে একটি অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে কমিশন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়। তিনি যে রিপোর্ট কমিশনকে দিয়েছেন, সেই রিপোর্টে কাকদ্বীপ মহকুমায় কর্মরত একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার (এএসএম) অবৈধ ভাবে ‘অ্যাস্টিস্ট্যান্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের’ (এইআরও) ‘ইউজ়ার নেম’ এবং পাসওয়ার্ড প্রয়োগ করে ভোটারদের কিছু আবেদন অনুমতি ছাড়ানিষ্পত্তি করেন।
কমিশনের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা বাদ দেওয়ার যাবতীয় কাজ হয় অনলাইনে। তাতে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং এইআরও-দের হাতেই দায়িত্ব দেওয়া থাকে। তাঁরা নিজেদের ‘ইউজ়ার নেম’ এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে কোনও আবেদনের অনুমোদন দিতে পারেন। প্রশাসনিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সিস্টেম ম্যানেজার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অবৈধ ভাবে এইআরও-র তথ্য ব্যবহার করে বেশ কিছু আবেদনের নিষ্পত্তি করেছিলেন। তাই সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং চার্জশিট তৈরির পরে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে কমিশনসূত্রের খবর।
কমিশন সূত্রের খবর, এই ঘটনার পরেই ২০২৩ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত অনলাইনে ‘ইউজ়ার নেম’ এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে যত কাজ হয়েছে, তার সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছে দিল্লির নির্বাচন সদন। এ ব্যাপারে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রায় প্রতিটি জেলা আধিকারিককে আজ, শনিবার বৈঠকে ডাকা হয়েছে। কমিশনের এক কর্তার কথায়, “নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরিতে কমিশন দায়বদ্ধ। আধিকারিকদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দিতে দৃষ্টান্তমূলকপদক্ষেপ হবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)