Advertisement
E-Paper

উত্তরাখণ্ডে ঢোকার আগে তিন বার ভারতের আকাশে হানা দিয়ে গিয়েছে চিন!

সীমান্তে চিনের অবৈধ কার্যকলাপের আরও তথ্য সামনে এল। জুলাই মাসের শুরুর দিকে সীমান্ত পেরিয়ে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় ঢুকে পড়েছিল চিনা সেনা। তা নিয়ে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বোঝা যাচ্ছে, চামোলির বারাহোতি তৃণভূমিতে লাল ফৌজের ওই অনুপ্রবেশ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৬ ১৭:১৪
বারাহোতি তৃণভূমিতে ঢোকার পিছনে চিনের কি কোনও বৃহত্তর লক্ষ্য কাজ করছে? তদন্ত করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। —ফাইল চিত্র।

বারাহোতি তৃণভূমিতে ঢোকার পিছনে চিনের কি কোনও বৃহত্তর লক্ষ্য কাজ করছে? তদন্ত করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। —ফাইল চিত্র।

সীমান্তে চিনের অবৈধ কার্যকলাপের আরও তথ্য সামনে এল। জুলাই মাসের শুরুর দিকে সীমান্ত পেরিয়ে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় ঢুকে পড়েছিল চিনা সেনা। তা নিয়ে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু সেই ঘটনার তদন্তে নেমে বোঝা যাচ্ছে, চামোলির বারাহোতি তৃণভূমিতে লাল ফৌজের ওই অনুপ্রবেশ কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বেশ কিছু দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে, ছক কষেই বারাহোতিতে সানা পাঠিয়েছিল বেজিং।

বারাহোতিতে চিনের পিপল’স লিবারেশন আর্মি ঢুকে পড়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ভারতীয় বাহিনী। চিনা সেনাকে চ্যালেঞ্জ করা হয় প্রথমে লাল ফৌজ এলাকা ছেড়ে নড়তে রাজি হয়নি। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা ভারতীয় বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকায়, চিনা ফৌজ এলাকা ছাড়ে। ফিরে আসে ভারতীয় বাহিনীও। যে এলাকায় চিন সেনা ঢুকিয়েছিল, সেই এলাকা নিয়ে বিতর্ক বহু দিনের। ভারত বারাহোতিকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। কিন্তু চিনের দাবি, ওই এলাকার নাম বারাহোতি নয়। ওই এলাকা আসলে তাদের এবং এলাকার নাম উ-জে। বিতর্ক থাকায়, বারাহোতির বিশাল তৃণভূমি অঞ্চলকে ‘ডিমিলিটারাইজড জোন’ বা ‘বাহিনী বর্জিত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ভারত ওই অঞ্চলে নজরদারি চালায়। কিন্তু ভারতীয় বাহিনী সেখানে অস্ত্র নিয়ে যায় না। বাহিনীর জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরেও যায় না। চিনা সেনা ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে অবশ্য পুরোদস্তুর রণসাজে সজ্জিত হয়েই ভারতীয় বাহিনী পৌঁছেছিল সেখানে। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি চরম মোড় নেয়নি। তবে ভারত বিষয়টির তদন্ত করতে শুরু করেছে।

কী জানা গিয়েছে তদন্তে?

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানতে পেরেছে, উত্তরাখণ্ডে ঢোকার আগে বেশ কয়েকবার ওই এলাকায় গোপনে নজরদারি চালিয়ে গিয়েছে চিনা যুদ্ধবিমান। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে এলাকার ম্যাপিং করেছে চিনা সেনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত তিন মাসে অন্তত তিন বার হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশের আকাশে ঢুকেছিল চিনের তুপোলভ-তু ১৫৩এম নজরদারি বিমান। সোভিয়েত আমলে তৈরি একটি বিমানের প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে চিন এই নজরদারি বিমান বানিয়েছে। বিমানটি ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উড়তে পারে। অত উচ্চতার কারণে রেডারে তার উপস্থিতি ধরা পড়ে না। ফলে ভারতের আকাশসীমায় তিন বার ঢুকে নজরদারি চালিয়ে গেলেও, ভারতীয় রেডারে তা ধরা পড়েনি। তুপোলভ-তু ১৫৩এম বিমানে সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার থাকায় অনেক উঁচু থেকেই ভূপৃষ্ঠের খুব স্পষ্ট ছবি সে তুলতে পারে। খারাপ আবহাওয়ায় বা রাতের অন্ধকারেও হাই রেজোলিউশন ছবি তুলতে ওই বিমানের কোনও অসুবিধা হয় না।

তিন মাস ধরে বেশ কয়েক বার নজরদারি বিমান পাঠিয়ে ভারতীয় সেনার টহলদারি, সেনা চৌকির অবস্থান এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের সামরিক পরিকাঠামোর বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করেছিল চিন। তার পর হঠাৎ বারাহোতি তৃণভূমিতে ২০-২৫ জন জওয়ানকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

চিন যে আকাশপথে ভারতের এলাকায় নজরদারি চালিয়ে গিয়েছে, তা ভারতকে জানানো হয়েছে অন্য কোনও একটি দেশের তরফে। যে সব দেশের সঙ্গে ভারত গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান করে, সেই দেশগুলির মধ্যেই কোনও একটির কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

আরও পড়ুন: দলাই লামার বিরুদ্ধে চক্রান্তে যুক্ত বলেই বহিষ্কৃত তিন চিনা সাংবাদিক

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, চিনা বাহিনী বারাহোতিতে যখন ঢোকে, তখন সেখানে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি ছিল। চিনা সেনা তাঁদের ওই এলাকা থেকে সরে যেতে বলে। তারা জানায়, ওই এলাকা চিনের এবং ভারতীয়দের সেখান থেকে সরে যেতে হবে। স্থানীয় লোকজন তখন সেই এলাকা থেকে বেরিয়ে গেলেও দ্রুত খবর যায় ভারতীয় বাহিনীর দফতরে। অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে বারাহোতি তৃণভূমিতে সেনা পাঠানো হয়। ভারতীয় সেনা সেখানে পৌঁছনোর আগে চিনা বাহিনীকে সঙ্গ দিতে সে দেশের একটি হেলিকপ্টারও বারাহোতিতে ঢুকেছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু মিনিট পাঁচেক বারাহোতি তৃণভূমির উপর ঘোরাফেরা করেই সেটি নিজেদের সীমান্তে ফিরে যায়। ভারতীয় বাহিনী যখন বারাহোতি পৌঁছয়, তার অনেক আগেই চিনের কপ্টার ফিরে গিয়েছিল। যে কপ্টারটি চিন পাঠিয়েছিল, জানা গিয়েছে সেটি ঝিবা সিরিজের একটি অ্যাটাক হেলিকপ্টার।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy