Advertisement
E-Paper

ভুটানের ভিতরেই গ্রাম বানিয়েছে চিন!

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, সব মিলিয়ে সীমান্তে একটি স্থায়ী চাপ তৈরি করতে চলেছে বেজিং।

চিনের সেই গ্রাম

চিনের সেই গ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৪
Share
Save

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই মাথাচাড়া দিল ভারতের পুরনো ক্ষত ডোকলাম। ভারত, চিন ও ভুটানের সংযোগস্থলে এই ডোকলাম মালভূমি এলাকাতেই তিন বছর আগে চিনা সেনার রাস্তা তৈরির চেষ্টা নিয়ে দীর্ঘদিন উত্তেজনা চলেছিল ভারতীয় ও চিনা সেনার। এ বার চিনেরই এক সংবাদ প্রযোজকের টুইটে জানা গেল, ডোকলামের সেই পুরনো এলাকা থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে, ভুটানের ভিতরে ঢুকে চিন একটি আস্ত গ্রাম তৈরি করে ফেলেছে। যদিও পরে সেই টুইট তিনি মুছে দেন। কিন্তু ওই প্রযোজকের পোস্ট করা ছবি ও উপগ্রহ মানচিত্র দেখে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভুটান সীমান্তের দু’কিলোমিটারেরও বেশি ভিতরে এসে ‘পাংদা’ নামে ওই গ্রামটি তৈরি করেছে চিন।

ভারতের সামরিক গোয়েন্দা সূত্রের খবর, শুধুমাত্র ডোকলাম বা পূর্ব লাদাখই নয়, দু’দেশের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিভিন্ন সেক্টরে লক্ষ্যণীয় ভাবে চিনের সেনা, সাঁজোয়া বাহিনী বাড়ানো হচ্ছে। মধ্য সিকিমের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়, হিমাচলের কৌরিক পাসের ও-পারে চুরুপ গ্রামে রাস্তা তৈরির কাজ করছে চিনা সেনা। উত্তরাখণ্ডে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরেই তৈরি হয়েছে বাঙ্কার।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, সব মিলিয়ে সীমান্তে একটি স্থায়ী চাপ তৈরি করতে চলেছে বেজিং। নিজেদের সুবিধাজনক শর্তে সীমান্ত নিয়ে মতবিরোধের সূত্র খোঁজাই শুধু নয়, ভারতকে কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক ভাবে স্থায়ী চাপে রেখে দক্ষিণ এশিয়া তথা গোটা অঞ্চলের নেতৃত্ব নিজের হাতে নিয়ে নেওয়াটাই মুখ্য উদ্দেশ্য শি চিনফিংয়ের।

আরও পড়ুন: ভুটানবাসীর জন্য বিশেষ ‘রুপে’ সুবিধা ভারতের

ভারতে ভুটানের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল ভেতসপ নামগিয়েল অবশ্য চিনের এই জমি জবরদখলের দাবি মানতে চাননি। তিনি স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘ভুটানের ভিতরে কোনও চিনা গ্রাম নেই।’’ বিতর্কিত ওই এলাকায় সীমান্ত নিয়ে চিন ও ভুটানের কোনও সমঝোতা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন করা হলে রাষ্ট্রদূত বলেন, সীমান্ত নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না। তবে ভুটান ও চিনের মধ্যে যে সীমান্ত আলোচনা চলছিল, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। কোভিড অতিমারির ফলে সেই আলোচনা কিছুটা মন্থর হয়েছে।

আরও পড়ুন: চিনকে নজরে রাখতেই ফের ঢুকব হু-তে’

চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল সিজিটিএন-এর সিনিয়র প্রযোজক শেন শিওয়েই গত কাল গ্রামটির বেশ কিছু ছবি টুইট করেন। নদীর ধারে রাস্তা, গ্রামের ঘরবাড়ির ছবি ছিল তার মধ্যে। শেন লেখেন, ‘‘নতুন পাংদা গ্রামে এখন আমাদের স্থায়ী বাসিন্দারা রয়েছেন। ইয়াদং কাউন্টির ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, উপত্যকা বরাবর এই গ্রাম। মানচিত্রে তার অবস্থানটা ভাল বোঝা যাবে।’’ সঙ্গে দেওয়া মানচিত্রে গ্রামের অবস্থান চিহ্নিত করে দিয়েছিলেন শেন। পরে তিনি সেটি ‘ডিলিট’ করে দেন। অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের উপগ্রহ চিত্র বিশেষজ্ঞ নেথান রাশারের মতে, শেনের দেখানো মানচিত্রে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, ভুটানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে চিন। তিনি টুইটারে লেখেন, ‘‘ওই সংবাদ প্রযোজক খোলাখুলি মেনেই নিচ্ছেন, একটি সার্বভৌম দেশের এলাকা দখল করে সেখানে বসতি স্থাপন করিয়েছে চিন। মানচিত্র অনুযায়ী, এই গ্রামটি ভুটান সীমান্তের আড়াই কিলোমিটার ভিতরে। ভুটানের ১২ শতাংশ জমিকে ভিত্তিহীন ভাবে দখল করছে চিন।’’ ভুটানের রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘জায়গাটা ডোকলাম সংঘাতের এলাকা থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে।’’ উপগ্রহ চিত্রের সঙ্গে চিনা প্রযোজকের পোস্ট করা ছবি মিলিয়ে দেখে অন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরাও বলছেন, ওই এলাকায় গ্রামটির যে অস্তিত্ব রয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।

China India Bhutan India-China Clash Doklam

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}