চিনের এই আচমকা অনুপ্রবেশ কি ইচ্ছাকৃত? (প্রতীকি ছবি)।
ফের উত্তপ্ত ভারত-চিন সীমান্ত। উত্তরাখণ্ডে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিল চিনা সেনা। জানালেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হরীশ রাওয়াত। কেন্দ্রীয় সরকারও বুধবার স্বীকার করেছে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের খবর। চিনা সেনার অনুপ্রবেশের খবর পেয়েই ভারতীয় বাহিনীও ঐ এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিল বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। দু’দেশের বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল বলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে জানা যাচ্ছে।
যে এলাকায় চিনা সেনা ঢুকেছিল বলে জানা গিয়েছে, সেই বারাহোতি উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার অন্তর্গত। ওই এলাকায় প্রায় ৮০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে একটি পাহাড়ি তৃণভূমি। স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে পশু চরাতে যান। গত ১৯ জুলাই চিনা সেনাকে ওই এলাকায় দেখা যায়। চিনের বাহিনী সেখানে আগেই ঢুকেছিল, না সে দিনই, তা স্পষ্ট নয়। ভারতীয়রা ওই এলাকায় কিছু মাপজোখের কাজ করতে গিয়ে চিনা সেখানে সেখানে দেখতে পায়। দ্রুত খবর পৌঁছয় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। ভারতীয় বাহিনীকে সঙ্গে সঙ্গে পাঠানো হয় বারাহোতির ওই এলাকায়। চিনা সেনার মুখোমুখি অবস্থান নেয় ভারতীয় বাহিনী। অন্তত এক ঘণ্টা দু’দেশের সশস্ত্র বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে ছিল বলে জানা গিয়েছে। তার পর চিনা সেনা ওই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যায়। ভারতীয় বাহিনীও ফিরে আসে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হরীশ রাওয়াত বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলেছেন ইতিমধ্যেই। তিনি বুধবার বলেন, ‘‘এটা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো ঘটনা। আমি অনেক দিন ধরেই বলে আসছি সীমান্তে টহলদারি বাড়ানোর জন্য।’’ বারাহোতির যে এলাকায় চিনা সেনা ঢুকেছিল, সেখানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাল রয়েছে বলে রাওয়াত জানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘খালটার কোনও ক্ষতি যে চিনা সেনা করেনি, সেটাই স্বস্তির বিষয়।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বুধবার বলেছেন, ‘‘আমরা রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। চিনা সেনা আমাদের এলাকার কতটা ভিতরে ঢুকেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক আদালতে বড় মামলা হারল ভারত, বিপুল অঙ্কের জরিমানা
উত্তরাখণ্ডের সঙ্গে চিনের সীমান্ত ৩৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ। সীমান্তবর্তী চামোলি জেলার বেশ কিছুটা অংশকে চিন নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। ভারতও ওই এলাকার দখল ছাড়তে রাজি নয়। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে দু’পক্ষই বিতর্কিত এলাকায় সংযম দেখায়। ভারতীয় বাহিনী সেখানে অস্ত্র নিয়ে যায় না। নজরদারি চালালেও, সাদা পোশাকেই তা চালানো হয় বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর। এক সময় চিনা সেনা বার বার চামোলিতে ঢুকে পড়ত এবং পাথরের গায়ে রং দিয়ে ‘চিন’ লিখে রেখে যেত। ভারতীয় সেনা তৎপর হওয়ার পর, সেই প্রবণতা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু ২০১৩ এবং ১৪ সালে চিনা সেনা চামোলিতে আকাশ ও স্থলসীমা লঙ্ঘন করেছিল। তার পর থেকে দীর্ঘ দিন পরিস্থিতি শান্তই ছিল। কিন্তু গত ১৯ জুলাই ফের ভারত ও চিনের বাহিনী যে ভাবে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছিল, তেমন ঘটনা আবার ঘটলে পরিস্থিতি আরও অপ্রীতিকর হয়ে উঠতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy