গবেষণা কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মঞ্চেই বাকযুদ্ধে জড়ালেন কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। কার্যত রেফারির ভূমিকায় নেমে পরিস্থিতি সামলালেন কেন্দ্রীয় সার ও রয়াসনমন্ত্রী অনন্তকুমার।
গত কাল গুয়াহাটিতে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’-এর (নিপার) স্থায়ী ক্যাম্পাসের উদ্বোধনে সর্বানন্দ বলেন, ‘‘কেন্দ্রের উদ্যোগে এই প্রকল্পের জন্য ৮৯ একর জমি এত কম সময়ে দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।’’ জবাবে ফুঁসে ওঠেন গগৈ। তিনি বলেন, ‘‘২০০৮ সালে রাজ্য সরকারই এই প্রতিষ্ঠান তৈরির প্রস্তাব কেন্দ্রে দিয়েছিল। ২০০৯ সালেই জমির ব্যবস্থা করেছিলাম। এর পিছনে বর্তমান কেন্দ্র সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সর্বানন্দ এই প্রকল্পের কৃতিত্ব বিজেপিকে দিতে চেয়ে রাজনীতি করছেন। কিন্তু, এটি সরকারি অনুষ্ঠান। রাজনীতির আখড়া নয়। তা হলে আমিও যুদ্ধ করতে পারতাম। আমি তাঁর চেয়ে ছোট যোদ্ধা নই। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ ব্যবহার করে জনতাকে ভুল বোঝানো ঠিক নয়।’’
পরিস্থিতি সামলাতে নামেন অনন্ত। তিনি বলেন, ‘‘গগৈও যোদ্ধা। আমিও যোদ্ধা। রাজনীতির ময়দানে সকলেই লড়তে নেমেছি। কিন্তু, সরকারের ৫ বছরের শাসনকালে সাড়ে চার বছর হাতে হাত মিলিয়ে উন্নয়ন করব। লড়াই হবে ভোটের আগে শেষ ৬ মাস।’’ সর্বানন্দ পরে বলেন, ‘‘আমি রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদই জানিয়েছিলাম। কিন্তু, কংগ্রেসের ভিত দুর্বল হয়ে পড়ায় মুখ্যমন্ত্রী সবকিছুতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।’’ গগৈ ভাষণে জানান, কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপ্লব এসেছে। নিপার ছাড়াও তৈরি হতে চলেছে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, কো-অপারেটিভ ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস, আইআইআইটি, লক্ষ্মীবাই জাতীয় শরীরচর্চা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি দাবি করেন, দেশের খুব কম রাজ্যেই এত রকম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
নিপারের ক্ষেত্রে রাজ্যে ঔষধি গাছগুলির ব্যবহার বাড়ানো, প্রথাগত ইউনানি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় গুরুত্ব দেওয়া ও সাধারণের আয়ত্বে থাকা ওষুধ তৈরির উপরে জোর দেন গগৈ। পাশাপাশি বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে অসমে ফার্মা পার্ক গড়ার ব্যাপারেও আলোচনা করেন।
অনন্ত বলেন, ‘‘মোহালির নিপারের মতোই গুয়াহাটির নিপারও দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হবে।’’ তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ের নির্মাণে ১৬০ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় বরাদ্দ ৫৫০ কোটি টাকা। নিপারকে ঘিরে উত্তর-পূর্বে গড়ে উঠবে ফার্মাসিউটিক্যাল হাব।
অনন্ত জানিয়েছেন, অসমের ১০০টি হাসপাতালে জেনেরিক সেন্টার গড়ার জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে কেন্দ্রের চুক্তি হবে।
কেন্দ্রীয় ফার্মাসিউটিক্যাল দফতরের সচিব ভি কে সব্বুরাজ জানান, বিশ্বের ২২০টি দেশে ওষুধ রফতানি করে ভারত। ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে এ দেশ বিশ্বে পয়লা নম্বরে রয়েছে। গত এক দশকে দেশে এই ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ বিকাশ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy