চার দিন পার হয়ে গেলেও রেল ইয়ার্ডের মধ্যে ঢুকে বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার স্বপন দে’কে হত্যার ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। এমনকি আটক করে কাউকে জেরা পর্যন্ত করা হয়নি। আতঙ্কে আজও উত্তরপ্রদেশের মোগলসরাই স্টেশনের মালগুদাম এলাকায় কার্যত বন্ধ রয়েছে ওয়াগন সারাইয়ের সব কাজ। অফিস খোলা থাকলেও বাঙালিবাবুর খুন নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন দফতরের কর্মীরা। এমনকি ঘটনার সময়ে স্বপনবাবুর জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন যিনি, সেই নিরাপত্তাকর্মী বাহাদুরও সে দিনের ঘটনার কথা মনে করতে চাইলেন না।
মোগলসরাই রেল ইয়ার্ডের ঘটনা সম্পর্কে জেলা পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। বেশ কয়েক জায়গায় অভিযানও চালানো হয়েছে। জেরাও করা হয়েছে এলাকার পরিচিত দাগী অপরাধীদের। যদিও চান্দৌলি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবেন্দ্রনাথ দুবে বলেন, ‘‘কারা এই খুনে জড়িত তদন্তের স্বার্থে তা এখন বলা সম্ভব নয়। আমরা শুধু রাজ্যে নয়, রাজ্যের বাইরেও অভিযান চালিয়েছি। খুব শীঘ্রই অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে।’’
আজ সকালেও দেখা গেল, রেল ইয়ার্ডে আতঙ্কের পরিবেশ এখনও রয়েছে। মালগুদামের বাইরেই চায়ের দোকান। সেই দোকানে বসেই চা খাচ্ছিলেন মালগুদামে কর্মরত রেলকর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘‘এর আগে কখনও রেল ইয়ার্ডের ভিতরে ঢুকে খুনের ঘটনা ঘটেনি। ফোনে ধমক এবং হুমকি থাকলেও খুন করার সাহস হত না দুষ্কৃতীদের। কারণ আরপিএফ এবং জিআরপির অফিসার ও জওয়ানরা সব সময়ে সেখানে থাকেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কিন্তু সে দিনই কোনও অফিসার বা জওয়ান ওই চত্বরেই ছিল না। দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে এসে সকলের সামনেই স্বপনবাবুকে গুলি করে চলে যায়।’’ তাঁর আক্ষেপ, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও তাদের ধরা যায়নি।
মোগলসরাই জিআরপি থানার ওসি আর কে সাউ এবং আরপিএফের পোস্টের ভারপ্রাপ্ত বি এন মিশ্র রেলকর্মীদের অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁদের সাফাই, ‘‘তদন্ত চলছে। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তবে রেলকর্মীদের আঙুল, পুলিশের দিকে। তাদের মদত ছাড়া কোনও ভাবেই দুষ্কৃতীরা ইয়ার্ডের ভিতরে, অফিসে ঢুকে হত্যা করতে পারত না বলে তাঁরা মনে করেন। ইয়ার্ডের বাইরের এক চায়ের দোকানদারের বক্তব্য, বাঙালিবাবু কাদের আক্রোশে পড়েছিলেন, তা পুলিশ এবং রেলের কর্তারা জানেন। কারা খুন করেছে তা-ও তাঁদের অজানা নয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অবশ্য এ কথা মানতে চাননি।
তবে যেখানে ওয়াগন সারাইয়ের কাজ হয় এবং কোটি কোটি টাকা মূল্যের ছাঁট লোহা বার হয় সেখানে ‘অপরাধ চক্র’ যে সক্রিয় থাকবে, সে কথা একান্তে স্বীকার করছেন অনেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy