এক শরিককে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে অন্য শরিক অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ছেন। জেডিইউ-কে বিজেপি সন্তুষ্ট করলেও চিরাগ পাসোয়ান সন্তুষ্ট ছিলেন না। আবার চিরাগ পাসোয়ানকে বোঝাতে গিয়ে জিতনরাম মাঝি, উপেন্দ্র কুশওয়াহা অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ছেন। জাতপাতের অঙ্কে এনডিএ-র ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়তৈরি হচ্ছে।
বিহারে এনডিএ-র আসন বণ্টন নিয়ে এই জট কাটাতে এ বার অমিত শাহ, জে পি নড্ডাকে আসরে নামতে হল। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা আজ একের পর এক এনডিএ-শরিকদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করে আসন বণ্টন নিয়ে রফায় পৌঁছনোর চেষ্টা করেছেন। অমিত শাহও নড্ডার বাড়িতে গিয়ে বিজেপির বিহারের নেতাদের সঙ্গে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন। কোন কোন আসনে কোন দলের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এবং শরিকদের দাবি নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) প্রধান চিরাগ পাসোয়ান সন্তুষ্ট হলেও হিন্দুস্তান আওয়ামি মোর্চার জিতনরাম মাঝি, রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চার উপেন্দ্র কুশওয়াহা এখনও অখুশি।
বিহারের বিজেপি সভাপতি দিলীপ জয়সওয়াল অবশ্য দিল্লিতে দাবি করেছেন, ‘‘আসন বণ্টন, প্রার্থী তালিকা নিয়ে রবিবারই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করবেন।’’দিল্লিতে শনিবার সকালে প্রথমে বিজেপি বিহারের কোর গ্রুপের নেতারা রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা বিনোদ তাওড়ের বাড়িতে বৈঠক করেন। তার পরে জে পি নড্ডার বাড়িতে কোর গ্রুপের বৈঠক হয়। সেখানে অমিত শাহ হাজির হন। বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়, বিহারে এনডিএ-র পক্ষে উচ্চবর্ণ, অনগ্রসর, অতি অনগ্রসর ও দলিত জাতপাতের অঙ্কে ভোটব্যাঙ্ক অটুট রেখে পাঁচ প্রধান শরিকের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে রফা হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু সেই দাবি নস্যাৎ করে উপেন্দ্র কুশওয়াহা প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন, কোনও রফা হয়নি। তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। মাঝির দলের নেতারা জানিয়ে দেন, রফা না হলে সমস্ত বিকল্প খোলা রয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, আসন নিয়ে দরাদরিতে চাপ বাড়াতে চিরাগ পাসোয়ান এত দিন জন সুরাজ পার্টির প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, চিরাগ চাইছেন তাঁকে সমস্ত জেতা আসন বা জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এমন আসন দিতে হবে। বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে জানিয়েছেন, সব এমন আসন দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সব আসনেই বিজেপি ও অন্য শরিকরা তাঁকে সাহায্য করবে। মাঝি চাইছেন, রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দল হতে হলে তাঁর ৮ জন বিধায়ক দরকার। তাই অন্তত ১৫টি ভাল আসন দরকার। না হলে তিনি আলাদা লড়ারও হুমকি দিয়েছেন। কুশওয়াহা জানিয়েছেন, বিজেপি তাঁকে ৫টি আসন দিতে চাইছে। কিন্তু তাঁর ১৫-১৬টি আসন দরকার। সূত্রের খবর, বিজেপি ১০১টি ও জেডিইউ ১০০টি আসনে লড়বে। চিরাগকে ২৯টি, মাঝিকে ৭টি ও কুশওয়াহাকে ৬টি আসন ছাড়া হবে। বিহারে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ৬ নভেম্বর। ১৭ অক্টোবর প্রথম দফার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। এনডিএ নেতৃত্বের দাবি, তার অনেক আগেই আসন বণ্টন ও প্রথম দফার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করে দেওয়া যাবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)