অবশেষে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী-পদের দৌড়ে। কংগ্রেস নেত্রী শীলা দীক্ষিতকে শুভেচ্ছা। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
আশির কোঠা ছুঁই-ছুঁই শীলা দীক্ষিতকে ফের ময়দানে নামিয়ে উত্তরপ্রদেশে দলের সংগঠন ঢেলে সাজালেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। যে টিমে ছাপ রইল প্রিয়ঙ্কা বঢরারও।
কংগ্রেসের নির্বাচনী পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের ‘ব্রাহ্মণ মুখ’ তুলে ধরার প্রস্তাব মেনেই গাঁধী পরিবার শেষ পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার জন্য রাজি করালেন শীলাকে। যে শীলার শেষ ‘সাফল্য’ দিল্লিতে পরাজয়। তার পর হয়েছিলেন রাজ্যপাল। মোদী জমানায় সেখান থেকে অপসারণের পর রাজনীতি থেকে কার্যত অবসর নেওয়া ৭৮ বছরের শীলাকে ফের ঠেলে ময়দানে নামালেন সনিয়া। যার ফলে এখন উত্তরপ্রদেশের ‘বৌমা’ শীলার দায় গোবলয়ের সব চেয়ে বড় রাজ্যে দলের হারানো ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পাওয়া। বিরোধীদের মতে, হারের দায় রাহুলের উপর পড়তে দিতে চান না সনিয়া। সে জন্যই শীলার মাথায় কাঁটার মুকুট পরানো হয়েছে।
ক’দিন আগেই রাজ্যসভার সাংসদ রাজ বব্বরকে উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি করা হয়েছে। আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে দলের প্রচার কমিটি ও সমন্বয় কমিটিও ঘোষণা করা হল। বিভিন্ন রাজ্যে সদ্য হওয়া বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দলের অনেকে রাহুলকে সভাপতি করে সংগঠনের আমূল পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের টিম ঘোষণার সময়েও প্রবীণ ও নবীনদের মধ্যে ভারসাম্যের পথেই হাঁটতে হল সনিয়া-রাহুলকে। প্রমোদ তিওয়ারি, মহসিনা কিদওয়াই, সলমন খুরশিদ, রীতা বহুগুণা, শ্রীপ্রকাশ জায়সবালের মতো পুরনো ব্রিগেডকে রাখা হল সমন্বয় কমিটিতে। আর প্রচার কমিটির প্রধান করা হল ‘অমেঠীর রাজা’ সঞ্জয় সিংহকে। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, সঞ্জয় সিংহকে প্রচারের প্রধান করার নেপথ্য কারিগর প্রিয়ঙ্কা। প্রচার কমিটিতে রয়েছেন রাহুল ব্রিগেডের জিতিন প্রসাদ, আর পি এন সিংহরা।
কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ স্পষ্ট করে দিলেন, প্রিয়ঙ্কা তাঁর মা ও দাদার নির্বাচনী কেন্দ্রের বাইরে প্রচার করলেও আর কোনও দায়িত্বে থাকছেন না। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের পুরনো উচ্চবর্ণ ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি ও মায়াবতীর ঝুলি থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্য প্রশান্ত কিশোর অনেক দিন ধরেই এক জন ব্রাহ্মণ মুখ চাইছিলেন। উমাশঙ্কর দীক্ষিতের পুত্রবধূ ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন সাংসদ শীলা প্রথমে হাইকম্যান্ডকে জানিয়ে দেন, হাতে তেমন সময় নেই। রাজনীতির অঙ্ক বলছে, এ বারে কংগ্রেসের লখনউয়ের মসনদ দখলেরও সম্ভাবনা কার্যত নেই। কিন্তু শীলা এক বার ‘না’ করে দেওয়ার পরেও হাল ছাড়েননি সনিয়া। শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছেন শীলা। তিনি আজ বলেন, ‘‘এটি গুরুদায়িত্ব। সকলে মিলে চেষ্টা করব। দল নিশ্চয়ই ভাল ফল করবে।’’ কংগ্রেস নেতাদের একাংশের মতে, সাফল্যের সম্ভাবনা যে বিশেষ নেই তা জানেন শীলা। তাই ‘সকলে মিলে চেষ্টা’র কথা বলে নিজেকে কিছুটা বাঁচিয়ে রাখতে চাইছেন।
কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার মতে, ‘‘গোটা টিমে সব ধর্ম ও জাতের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। ফলে শুধু ব্রাহ্মণ মুখের ভরসায় আমরা ভোটে লড়ছি না।’’ এরই মধ্যে শীলাকে ট্যাঙ্কার-কেলেঙ্কারিতে জেরার জন্য ডেকে পাঠিয়েছে দিল্লির দুর্নীতি-দমন শাখা। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের দাবি, ‘‘এই অভিযোগের ভিত্তি নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy