সনিয়া গান্ধী ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন হিসেবে রাশিয়ায় সেন্ট পিটার্সবার্গে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সরকারি প্রথা ভেঙে পুতিন তাঁকে ‘প্রিয় শ্রীমতি গান্ধী’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। সেটা ২০০৭ সাল। ইউপিএ সরকারের আমল। মোদী জমানায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ভারত সফরে এসেও পুতিন তৎকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। অথচ এ বার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সফরসূচিতে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক নেই। আজ লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ তুললেন, নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকার ‘নিরাপত্তাহীনতা’য় ভুগছে। তাই বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বিরোধী দলনেতাদের দেখা করার অনুমতি দিচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুতিন দিল্লিতে পৌঁছেছেন। তার আগে দুপুরে সংসদ চত্বরে রাহুল গান্ধী অভিযোগ তোলেন, ‘‘সাধারণত বিদেশ থেকে রাষ্ট্রনেতা এলে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করার প্রথা রয়েছে। অটলবিহারী বাজপেয়ী, মনমোহন সিংহের সময়েও তা হয়ে এসেছে। কিন্তু এখন বিদেশি রাষ্ট্রনেতারা ভারতে এলে বা আমি বিদেশে গেলে কেন্দ্রীয় সরকার বলে দেয়, তাঁরা যেন বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা না করেন। রাহুল বলেন, ‘‘আমাদের কাছে বার্তা আসে, ওঁদের ভারত সরকার বলে দিয়েছে, ওঁরা আমার সঙ্গে দেখা করতে না করেছে।’’
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ উড়িয়ে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, রাষ্ট্রনেতাদের ভারত সফরে বিদেশ মন্ত্রক সরকারি পদস্থদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করে। তার বাইরে কারও সঙ্গে দেখা করার থাকলে সেটা রাষ্ট্রনেতার প্রতিনিধিদল ঠিক করে। মোদী সরকার রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বিরোধী দলনেতাদের দেখা করতে দিচ্ছে না বলে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, ২০২৪-এ রাহুল গান্ধী বিরোধী দলনেতা হওয়ার পরে শেখ হাসিনা, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, মরিশাস, নিউ জ়িল্যান্ডের রাষ্ট্রনেতারা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। এ বার পুতিনের সফরে রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে লোকসভা, রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা নিমন্ত্রিত।
কংগ্রেস সূত্রের পাল্টা দাবি, নেহরু-গান্ধী পরিবারের সঙ্গে পুরনো সম্পর্কের জন্য শেখ হাসিনা ও ভ্লাদিমির পুতিনকে মোদী সরকার কখনও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করায় আটকাতে পারেনি। এ বার পুতিন দেখা করতে চাইলেও মাত্র ২৪ ঘণ্টা সফরের যুক্তি দিয়ে তাতে বাধা দেওয়া হয়েছে। প্রাক্তন বিদেশসচিব, বর্তমানে রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য হর্ষবর্ধন শ্রিংলার যুক্তি, ‘‘বিদেশি রাষ্ট্রনেতা ভারতে এলে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করতেই হবে, এমন কোনও বাঁধাধরা নিয়ম নেই। সবটাই তাঁদের সময় ও ইচ্ছার উপরে নির্ভর করে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)