Advertisement
E-Paper

অনশনে কংগ্রেস, কেরলে ক্ষুব্ধ বাম

সিপিএম এবং আরএসএসের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষে কিছু দিন ধরেই উত্তাল কেরল। এ বার তিরুঅনন্তপুরমের কাছে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে আরএসএসের এক কর্মীকে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৭ দুষ্কৃতীকে। খুনের জন্য সিপিএমের দিকে অভিযোগ তুলে বিজেপি রবিবার হরতালও ডাকে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৬

বাংলার নেতারা চান কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে। কেরলের নেতারা মনে করেন, কংগ্রেসের সঙ্গ বর্জনীয়। কেরল শিবিরের চাপে সীতারাম ইয়েচুরির রাজ্যসভায় যাওয়া আটকে গিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, তার মধ্যেই সিপিএমের অন্দরের দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করে দিল কংগ্রেস!

সিপিএম এবং আরএসএসের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষে কিছু দিন ধরেই উত্তাল কেরল। খুনোখুনিতে বারবার নাম জড়াচ্ছে দু’পক্ষেরই। এ বার তিরুঅনন্তপুরমের কাছে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে আরএসএসের এক কর্মীকে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৭ দুষ্কৃতীকে। খুনের জন্য সিপিএমের দিকেই অভিযোগ তুলে বিজেপি-র ডাকা হরতালে রবিবার কেরলের জনজীবন যখন অনেকটাই থমকে, সেই সময়ে কোঝিকোড়ে দিনভর অনশনে বসে প়ড়েন বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা-সহ কংগ্রেসের কিছু নেতা। সঙ্ঘ পরিবারের কর্মী খুন এবং সিপিএম অভিযুক্ত হওয়ার পরেই কংগ্রেস নেতাদের অনশনে বসা চোখ কপালে তুলে দিয়েছে বাম শিবিরের! কেরল সিপিএমের নেতৃত্ব বলতে শুরু করেছেন, এই জন্যই কংগ্রেসকে বিশ্বাস করা যায় না! সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা মাঝেমাঝেই দোলাচলে ভোগে!

কেরলে হিংসার ঘনঘটা আলো়ড়ন তৈরি করেছে জাতীয় রাজনীতিতেও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ রবিরারই ফোন করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে। কেরলের রাজ্যপাল পি সদাশিবম মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিজিপি-কে ডেকে পাঠিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। রাজনাথ পরে টুইটে বলেছেন, ‘‘কেরলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্বেগ জানিয়েছি। গণতন্ত্রে রাজনৈতিক হিংসা মেনে নেওয়া যায় না। আশা করি, হিংসা নিয়ন্ত্রণে এনে অপরাধীদের দ্রুত বিচার হবে।’’

কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের পরে যা হওয়ার কথা ছিল সিপিএম বনাম বিজেপি লড়াই, সেখানেই অন্য মাত্রা জুড়ে গিয়েছে কংগ্রেসের অবস্থানে! পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো লব্জ ব্যবহার করে রাজ্য সিপিএমের কিছু নেতা কংগ্রেসকে বিজেপি-র ‘বি টিম’ বলতেও শুরু করেছেন! তাঁদের প্রশ্ন, বাম কর্মীরা যখন আক্রান্ত বা নিহত হন, তখন কংগ্রেসের বিবেক কোথায় থাকে? চেন্নিথালা অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন, তাঁর প্রতিবাদ শুধু সিপিএমের বিরুদ্ধে নয়। তাঁর কথায়, ‘‘নিকেশের রাজনীতি করতে গিয়ে সিপিএম আর বিজেপি রাজ্যটার ভয়ঙ্কর অবস্থা করে তুলেছে। অস্ত্র ছে়ড়ে দু’পক্ষেরই আলোচনায় বসা উচিত। এগিয়ে আসা উচিত মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এবং বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি কে রাজাশেখরনের।’’

শেষমেশ চেন্নিথালার দাবিই অবশ্য বাস্তবায়িত হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের জেরে তিরুঅনন্তপুরমের একটি হোটেলে সোমবারই বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন, বালকৃষ্ণন, বিজেপি-র রাজাশেখরন এবং আরএসএস নেতা পি গোপালনকুট্টি। দু’পক্ষই শান্তি প্রক্রিয়ার উপরে জোর দিয়েছে। যদিও এ দিনই আরএসএসের একটি কার্যালয়ে পেট্রোল বোমা ছো়ড়া হয়েছে, হামলা হয়েছে সিটুর একটি কার্যালয়েও। সিপিএম-বিজেপি বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আরও কয়েকটি জেলায় শান্তি বৈঠক হবে এবং সর্বদল বৈঠক বসবে ৬ অগস্ট।

তবে কংগ্রেসের ভূমিকায় সিপিএমের অস্বস্তি থাকছেই। দলের এক পলিটব্যুরো সদস্যের দাবি, ‘‘কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত বিজেপি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, ব্যক্তিগত রেষারেষিতে খুন হয়ে থাকতে পারে। কংগ্রেস এর মধ্যে কী করতে চাইছে, বলতে পারব না!’’

Congress BJP RSS Kozhikode Kerala কোঝিকোড় কংগ্রেস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy