E-Paper

কৃষি আইনের মতো আন্দোলন কঠিন: কংগ্রেস

মোদী সরকার মনরেগা-র নাম ও খোলনলচে বদলে নতুন ধাঁচের বিকশিত ভারত-জি রাম জি বিল পাশ করানোর পরে তার বিরুদ্ধে কী ভাবে প্রতিবাদ হবে, তার রাস্তা খুঁজছে কংগ্রেস। ২৭ ডিসেম্বর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:১৮

— প্রতীকী চিত্র।

নিছক নামবদল নয়। মনরেগা-র নামের সঙ্গে খোলনলচে বদলে দিয়ে মোদী সরকার আসলে কংগ্রেস তথা সনিয়া গান্ধী-মনমোহন সিংহের ইউপিএ সরকারের ‘উত্তরাধিকার’ মুছে দিতে চাইছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব আশঙ্কা করছেন। কিন্তু একই সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের মত, তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির সীমানায় কৃষক সংগঠনগুলির যে ভাবে এক বছরের আন্দোলন হয়েছিল, যার ফলে মোদী সরকার তিন আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল, বিকশিত ভারত-জি রাম জি বিলের বিরুদ্ধে সেই আন্দোলন গড়ে তোলা মুশকিল। কারণ, তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দেশের কৃষক সংগঠনগুলি আন্দোলনে নেমেছিল। মনরেগা বা রোজগার গ্যারান্টি প্রকল্পের কর্মীদের সেই রকম কোনও সংগঠন নেই। যেখানে বামপন্থীরা রয়েছেন, সেখানে কিছু সংগঠন রয়েছে। দেশের বাকি অংশে তা অমিল।

এই পরিস্থিতিতে সংসদে মোদী সরকার মনরেগা-র নাম ও খোলনলচে বদলে নতুন ধাঁচের বিকশিত ভারত-জি রাম জি বিল পাশ করানোর পরে তার বিরুদ্ধে কী ভাবে প্রতিবাদ হবে, তার রাস্তা খুঁজছে কংগ্রেস। ২৭ ডিসেম্বর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে এ নিয়ে আলোচনা হবে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, ‘‘ইউপিএ আমলে যত অধিকারের আইন তৈরি হয়েছিল, মোদী সরকার একের পর এক তা শেষ করছে। প্রথমে তথ্যের অধিকার আইন লঘু করে দেওয়া হয়েছে। এ বার রোজগারের অধিকারের আইন শেষ করা হল। ভবিষ্যতে অরণ্যের অধিকার আইন, খাদ্যের অধিকার আইন, জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন আইনশেষ করা হবে।’’

বৃহস্পতিবার দুপুরে লোকসভায় এবং তার পরে রাত সাড়ে ১২টায় রাজ্যসভায় বিকশিত ভারত-জি রাম জি বিল পাশ করায় কেন্দ্র। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বৃহস্পতিবারই সংসদে আলোচনায় বলেন, ‘‘যে ভাবে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই ভাবেই জি রাম জি বিলও প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবেন। আপনারা কি চান, মানুষ ফের রাস্তা অবরোধ করুক? গুলিতে আহত হোক, প্রাণ হারাক? তার পরে আইন প্রত্যাহার করবেন?’’ খড়্গে এই হুঁশিয়ারি দিলেও তা বাস্তবে সম্ভব কি না, তা নিয়ে কংগ্রেস নেতারা সন্দিহান।

বৃহস্পতিবার রাতভর তৃণমূলের ধর্নার পাশাপাশি শুক্রবার সকালে সংসদ চত্বরে বিরোধীরা মহাত্মা গান্ধীর নাম বাদ নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা বলেন, ‘‘এই বিলের জোরদার বিরোধ হবে। সব বিরোধী এককাট্টা। কারণ, এই বিলে মনরেগা-কে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে।’’ প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, নতুন আইন করে মোদী সরকার ৪০ শতাংশ খরচ রাজ্যগুলির উপরে চাপিয়েছে। রাজ্যের হাতে টাকা নেই। বিশেষত যে সব রাজ্যে এই প্রকল্প বেশি দরকার, সেই রাজ্য সরকারের হাতে অর্থেরও অভাব। ফলে রোজগার চাইলেও আর মিলবে না।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কেরলের বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এর মধ্যেই রাজ্যের উপরে বোঝা নিয়ে সরব হয়েছেন। স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন। উল্টো দিকে,বিজেপি গোটা দেশে জি রাম জি বিলের পক্ষে প্রচার অভিযান শুরু করছে। বিরোধীদের অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়ে বোঝানো হবে, কী ভাবে নতুন আইন আগের তুলনায় ভাল।জয়রাম রমেশের অভিযোগ, বন্দে মাতরম্ থেকে জি রাম জি বিলে মোদী সরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জওহরলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধীর অপমান করেছে। পাল্টা প্রচারে বিজেপি রামকে নিয়ে মহাত্মা গান্ধীর ভাবনাতুলে ধরবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress MNREGA PM Narendra Modi BJP Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy