বিহারে বিধানসভা ভোটের প্রথম দফার জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ, শুক্রবার। তার আগের রাতেও বিরোধীদের মহাজোটে আসন-রফার চূড়ান্ত সূত্র মিলল না। আরজেডি-র নেতা তেজস্বী যাদবের বাড়িতে বৃহস্পতিবার দফায় দফায় গিয়ে আলোচনা চালিয়েছেন কংগ্রেস এবং বাম নেতৃত্ব। কিন্তু এখনও তেজস্বীদের তরফে তেমন নমনীয়তার ইঙ্গিত মেলেনি। বরং, কংগ্রেসের প্রার্থী বেছে রাখা ২৫ আসনের মধ্যে কয়েকটিতে লড়াইয়ের দাবি থেকেও সরেননি তিনি!
শাসক এনডিএ জোটেও টানাপড়েন জিইয়ে রেখেছিলেন লোক জনশক্তি পার্টির (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসোয়ান। তবে সূত্রের খবর, বিজেপির তরফে প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই এবং পরে বিহারের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ধর্মেন্দ্র প্রধান তাঁর সঙ্গে কথা বলে জটিলতা কাটার ইঙ্গিত পেয়েছেন। বিজেপি চাইছে, বিহারে এনডিএ-র শরিক পাঁচ দলকে নিয়েই সামগ্রিক ভাবে প্রথম তালিকা ঘোষণা হোক। তার পরে দলগুলি নিজস্ব প্রার্থী ঘোষণা করুক। বিজেপির সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকের পরে রবিবার এনডিএ-র প্রথম তালিকা ঘোষণা হতে পারে।
পটনা গিয়ে নীতীশ কুমারের সরকারের বিরুদ্ধে ‘চার্জশিট’ দিয়ে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের ঘোষণা-পত্র প্রকাশ করেছেন এআইসিসি-র তিন সিনিয়র পর্যবেক্ষক অশোক গহলৌত, ভূপেন্দ্র বঘেল ও অধীর চৌধুরী। ছিলেন জয়রাম রমেশও। নীতীশের জমানাকে নিশানা করে তাঁদের ‘চার্জশিটে’র নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিশ সাল, বিনাশ কাল’। তেজস্বী আবার ঘোষণা করে দিয়েছেন, রাজ্যে মহাজোটের সরকার ক্ষমতায় এলে ২০ মাসের মধ্যে প্রতি পরিবারে একটি চাকরির ব্যবস্থা হবে।
পরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তেজস্বীর বাসভবনে কথা বলতে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। সূত্রের খবর, সেই দৌত্যে তেমন ফল পেলেনি। এখনও প্রায় ১৪-১৫টি আসন ঘিরে কংগ্রেস এবং আরজেডি-র টানাপড়েন রয়েছে। কংগ্রেসের প্রার্থী ঠিক করে ফেলা আসনেও দাবি ছাড়তে চাইছেন না তেজস্বীরা। কংগ্রেসের নেতারা আজ ফের পটনায় জট খোলার চেষ্টা চালাবেন বলে সূত্রের খবর। আরজেডি-র সঙ্গে বামেদের জটও কাটেনি। তেজস্বীর বাড়িতে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে সন্ধ্যায় কথা বলতে গিয়েছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবিও।
এর মধ্যে প্রশান্ত কিশোরের ( পি কে) দল ‘জন সুরাজ’ই বিহারে প্রথম প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। জন সুরাজের তরফে প্রথম দফায় যে ৫১টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তার মধ্যে বিহারের জনবিন্যাসের সঙ্গে আনুপাতিক হারে তফসিলি, দলিত, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) এবং সংখ্যালঘু প্রার্থী রাখা হয়েছে। তাঁরা কোনও পক্ষের সঙ্গে জোটে যাচ্ছেন না বলে জানিয়ে প্রাক্তন ভোট-কুশলী তথা জন সুরাজের প্রতিষ্ঠাতা-নেতা প্রশান্তের দাবি, গত বার এনডিএ এবং মহাজোটের বাইরে যে ২৮% ভোট ছিল, তার সবই তাঁদের দিকে আসবে এ বার। প্রশান্ত নিজে অবশ্য ভোটে লড়ছেন না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)