জমি বিল নিয়ে সংসদে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ‘ব্যাকফুট’-এ ঠেলে দেওয়ার পর এ বার চাপ আরও বাড়াতে চাইছে কংগ্রেস। তাদের নতুন দাবি, রাজ্যের মাধ্যমেও ঘুরপথে ২০১৩-র জমি অধিগ্রহণ আইনে সংশোধন করা যাবে না। এর সঙ্গে কৃষকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়ানোরও দাবি জানাবে কংগ্রেস। আগামিকাল দিল্লির রামলীলা ময়দানে ‘কিষাণ সম্মান র্যালি’ থেকে এই দাবি তুলতে চলেছেন সনিয়া-রাহুল।
শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ সহজ করতে ইউপিএ-সরকারের জমি অধিগ্রহণ আইনে সংশোধন করে তিন বার অধ্যাদেশ জারি করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু সংসদে কংগ্রেস ও অন্যদের বিরোধিতায় এই সংক্রান্ত বিলটি পাশ করাতে পারেনি। চাপের মুখে নতুন করে অধ্যাদেশ জারি করা থেকেও পিছিয়ে এসেছেন মোদী। সরকারের সিদ্ধান্ত, বিহার নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে এগোনো হবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্ত বদলকেই জয় হিসেবে তুলে ধরতে আগামিকাল দিল্লিতে কংগ্রেস বিরাট জনসভার আয়োজন করেছে। নিজেদের আরও কৃষক দরদী হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি মোদী সরকারের উপর আরও চাপ বাড়ানো যার উদ্দেশ্য।
কী ভাবে? কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রে জমি বিল নিয়ে হোঁচট খাওয়ার পরে রাজ্যের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ওই জমি আইন মোদী সরকার সংশোধন করাতে চাইবে। উদাহরণ হিসেবে দলের তরফে বলা হচ্ছে, এর মধ্যেই নীতি আয়োগে মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও এই দাবি তুলেছেন। এই মুখ্যমন্ত্রীদের যুক্তি, অন্যদের বিরোধিতায় আইন বদল হচ্ছে না, ফলে শিল্প হচ্ছে না রাজ্যে। বিজেপি নেতৃত্ব তাই শিল্প গড়ার স্বার্থে ওই সব রাজ্যকে বিল সংশোধনের জন্য সবুজ সঙ্কেত দিচ্ছে। এখানেই আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস।
রবিবাসরীয় জনসভার আগে আজ এ কে অ্যান্টনি, ভূপিন্দর সিংহ হুডা, মতিলাল ভোরার মতো কংগ্রেসের নেতারা একজোট হয়ে বলেছেন, যেখানে জমি বিলে সংশোধনের চেষ্টা হবে, সেখানেই আন্দোলন গড়ে তুলবে কংগ্রেস। তাদের এই কথার জবাবে বিজেপি নেতাদের খোঁচা, কংগ্রেস কৃষকদের জমি নিয়ে শিল্পপতিদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ তুলছে, অথচ তাদের জমানায় হরিয়ানায় কৃষকদের জমি সনিয়া গাঁধীর জামাতা রবার্ট বঢ়রার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। জবাবে হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা বলেছেন, ‘‘সরকারে থাকাকালীন আমরা কোনও জমি অধিগ্রহণ করে কোনও নির্মাতা সংস্থার হাতে তুলে দিইনি।’’
জমি বিল ছাড়াও কংগ্রেস সরব হয়েছে কৃষকদের ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য নিয়েও। তাদের অভিযোগ, এই সহায়ক মূল্যও ঠিক মতো বাড়ানো হচ্ছে না। এর ফলে কংগ্রেসশাসিত অসম তো বটেই, ধাক্কা খাচ্ছে এনডিএ শাসিত মহারাষ্ট্র-অন্ধ্রও। কৃষি মন্ত্রকের কর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, মাত্রাতিরিক্ত হারে খাদ্যশস্যের সহায়ক মূল্য না বাড়ানোর ফলেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, এমএস স্বামীনাথন কমিটির রিপোর্ট মেনে উৎপাদন খরচের সঙ্গে তার ৫০ শতাংশ যোগ করে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy