লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির আসন রফা হলেও দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে যে আসন রফা হবে না, তা আগেই স্পষ্ট ছিল। তবে শুধু আলাদা ভাবে লড়াই-ই নয়। কংগ্রেস এ বার অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আপের বিরুদ্ধে সম্মুখসমরেই নেমে পড়ল। ২০১৩-তে আপকে সমর্থন করা দিল্লিতে কংগ্রেসের পতনের সব থেকে বড় কারণ বলে জানালেন কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ তথা দিল্লির নেতা অজয় মাকেন। কেজরীওয়ালকে আজ তিনি ‘ফর্জীওয়াল’ তকমাও দিয়েছেন। কিন্তু এর ফলে ইন্ডিয়া মঞ্চের ঐক্য ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এমনিতেই ইন্ডিয়া মঞ্চে কংগ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে। উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচন ঘিরে সপা-র সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব বেড়েছে। মহারাষ্ট্রেও মহাবিকাশ আগাড়ীর মধ্যে সুসম্পর্ক আগের মতো নেই। এ বার কংগ্রেস সরাসরি ইন্ডিয়া-র অন্যতম শরিক আপের বিরুদ্ধে ময়দানে নামল। ফলে ইন্ডিয়া মঞ্চের ভবিষ্যৎ নিয়েই রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠছে।
দিল্লিতে গত ১১ বছরের আপ সরকার ও কেন্দ্রে ১০ বছরের বিজেপি সরকার কোন কোন প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি, তা নিয়ে আজ শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। সেখানে দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দেবেন্দ্র যাদব, অজয় মাকেন এবং এআইসিসি-তে দিল্লির পর্যবেক্ষক কাজী মহম্মদ নিজ়ামুদ্দিন হাজির ছিলেন। মাকেন বলেন, কেজরীওয়ালের কোনও মতাদর্শ নেই। কেজরীওয়াল রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপির ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ, সিএএ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করেছেন। সেই সূত্রেই মাকেন কেজরীওয়ালকে ‘ফর্জীওয়াল’ আখ্যা দেন।
ইতিমধ্যেই কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে কংগ্রেস নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পুত্র সন্দীপ দীক্ষিতকে প্রার্থী করেছে। মাকেনের মতে, ২০১৩ সালে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা তৈরি হওয়ায় কংগ্রেস ৪০ দিন ধরে কেজরীওয়াল সরকারকে সমর্থন করেছিল। তার পর থেকেই দিল্লিতে কংগ্রেসের করুণ দশা শুরু হয়। সম্প্রতি লোকসভা ভোটে আসন রফার খেসারতও দিতে হচ্ছে। কংগ্রেসের শ্বেতপত্রে আম আদমি পার্টির দিকে আঙুল তুলে বলা হয়েছে, কেজরীওয়াল বারবার সুযোগ পেয়েছেন, কিন্তু মানুষকে ধোঁকা দিয়েছেন। যে লোকপাল আন্দোলন করে তাঁর উত্থান, সেই জনলোকপাল দিল্লিতে গঠন হয়নি। উপরাজ্যপাল তাতে বাধা দিচ্ছেন বলে আপ-এর দাবি। পাল্টা যুক্তিতে বলা হচ্ছে, পঞ্জাবে আপ সরকার রয়েছে। সেখানে উপরাজ্যপাল না থাকা সত্ত্বেও জনলোকপাল গঠন হয়নি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)