মুম্বইয়ের ক্রেতা সুরক্ষা আদালত একটি মোমো রিটেল চেনের বিরুদ্ধে দুই ব্যক্তির দায়ের করা ক্ষতিপূরণের দাবি খারিজ করে দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছিল যে, নিরামিষ খাবার অর্ডার করার পরেও রেস্তোরাঁটি আমিষ খাবার পরিবেশন করেছে। কিন্তু আদালত বলেছে, অভিযোগের স্পষ্ট প্রমাণ নেই। ফলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও কোনও ভিত্তি নেই। সেই সঙ্গে আদালত এও প্রশ্ন তুলেছে, ওই রেস্তোরাঁয় আমিষ খাবার দেওয়া হয় জেনেও অভিযোগকারীরা সেটি বেছে নিয়েছিলেন কেন।
মুম্বই শহরতলির অতিরিক্ত জেলা ক্রেতা সুরক্ষা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সদস্য গৌরী এম কাপসে এবং প্রেসিডেন্ট প্রদীপ জি কাদুরের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। অভিযোগকারীদের বক্তব্য ছিল, মুম্বইয়ের একটি মোমোর দোকানে নিরামিষ মোমোর পরিবর্তে তাঁদের চিকেন মোমো পরিবেশন করা হয়েছিল। তাঁরা দাবি করেন, এতে তাদের মানসিক হয়রানি হয়েছে এবং তাঁদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। ওই দোকান তাঁদের মূল্য ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি একটি ১২০০ টাকার ভাউচার দিয়েছিল। তার পরেও অভিযোগকারীরা ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
আদালত বলেছে যে, অভিযোগকারীদের দাবির সমর্থনে তারা কোনও জোরালো প্রমাণ পায়নি। দোকানের সরবরাহ করা চালানে স্পষ্ট ভাবে একটি আমিষ খাবারই দেখানো হয়েছে। উপরন্তু অভিযোগকারীরা নিরামিষ খাবার অর্ডার করার মজবুত প্রমাণ দিতে পারেননি। দোকানের তরফে পাল্টা অভিযোগ, অভিযোগকারীরা খাবারের দোকানের কর্মীদের শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেছেন। সম্যক প্রমাণের অভাব এবং বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় আদালত ক্ষতিপূরণের দাবি খারিজ করে দিয়েছে।
১৩ মের রায়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালত বরং অভিযোগকারীদের দিকেই প্রশ্ন তুলেছে, যদি তাঁরা নিরামিষাশী হয়ে থাকেন এবং আমিষ খাবার তাঁদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে থাকে, তা হলে এমন একটি রেস্তোরাঁ বেছে না নিলেই পারতেন যেখানে ‘একচেটিয়া ভাবে নিরামিষ’ খাবার পরিবেশন করা হয় না। একজন ‘বিচক্ষণ ব্যক্তি’ নিরামিষ এবং আমিষ খাবার খাওয়ার আগে তার পার্থক্য বুঝতে সক্ষম হয়ে থাকেন বলেও মন্তব্য করেছে আদালত। প্রসঙ্গত এপ্রিল মাসে নয়ডায় ভুল করে আমিষ খাবার পাঠানোর দায়ে একটি রেস্তোরাঁর মালিককে গ্রেফতার পর্যন্ত হতে হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)