গত কয়েক দিন ধরে ইন্টারনেট দুনিয়া থেকে উধাও অন্তত ৮৫৭টি সাইট। সব ক’টিই পর্ন সাইট। কেন্দ্রের নির্দেশেই নীল ছবির দুনিয়ায় এই কড়াকড়ি শুরু হয়েছে বলে দাবি। যদিও ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা (আইএসপি) এবং টেলিকম সংস্থাগুলি খোলসা করে বলেনি যে এর পিছনে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ রয়েছে। কিন্তু ভারতের কোনও নাগরিক তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত পরিসরে কী দেখবেন বা দেখবেন না, তা কেন রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ করবে? এই প্রশ্নেই এখন তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া।
অনেকেরই বক্তব্য, এ ভাবে পর্ন সাইট বন্ধ করে লাভ হবে না। সরকারি নির্দেশেই যে এই সাইটগুলি বন্ধ করা হয়েছে, তা কেউ বলতে চাইছেন না। গোটা বিষয়টি নিয়েই বেশ ঢাক ঢাক গুড়গুড় চলছে। যে সব দেশে এ সব পর্ন সাইট দেখা বেআইনি, সেখানে এই সাইট খোলার চেষ্টা করলে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা জানিয়ে দেয়, সরকারি নির্দেশে এই সাইট বন্ধ। ভারতে কিন্তু তেমনটাও হচ্ছে না। পর্ন দুনিয়ায় ঢুকতে গেলে দেখা যাচ্ছে শুধুই সাদা স্ক্রিন। সরকারি সূত্রে খবর, নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। বিষয়টি শীঘ্রই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত হবে। সাইট ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, শিশুদের নিয়ে তৈরি পর্ন ছবির প্রচার রুখতে নাগরিকদের ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকছে সরকার। যা সমর্থনযোগ্য নয়। টেলিকম সংস্থাগুলির দাবি, এ ভাবে সব পর্ন সাইট বন্ধ করা সম্ভব নয় সরকারের পক্ষে। তথ্য আদানপ্রদানের যুগে এই দাবি এক অর্থে হাস্যকর।
গত মাসে শিশুদের নিয়ে পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ না করতে পারায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, সেই নির্দেশ কার্যকর করার চেষ্টা হচ্ছে। নীতি পুলিশ হওয়ার ইচ্ছে তাদের নেই। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব অনেকেই মনে করাচ্ছেন জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর মন্তব্য। তিনি বলেছিলেন, কোনও নাগরিককে তাঁর বেডরুমে বসে প্রাপ্তবয়স্কদের সাইট দেখা থেকে বিরত করা যায় না। আইনি পদক্ষেপের অর্থ ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ।