তাঁর নামে মন্দির গড়ার দাবি উঠেছে আগেই। হয়েছে তাঁর মূর্তি গড়ার চেষ্টাও। এ বার মৃত্যুদিবস পালন করা হল নাথুরাম গডসের।
রবিবার মহারাষ্ট্রের ঠাণে এবং উত্তরপ্রদেশের মেরঠে গডসের মৃত্যুদিন উপলক্ষে ‘বলিদান দিবস’ পালন করল অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। এ দিন মুম্বইয়ের কাছে পানভেলে গাঁধী ঘাতকের স্মৃতিতে ‘শৌর্য দিবস’ পালন করেছে হিন্দু মহাসভা, হিন্দু সেনা এবং মহারানা প্রতাপ ব্যাটেলিয়ন। হিন্দু মহাসভার জাতীয় সাধারণ সম্পাদক মুন্নাকুমার শর্মা বলেন, ‘‘গডসের ত্যাগকে মনে রাখার জন্যই ১৫ নভেম্বর দিনটি বলিদান দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। এ দিন দেশ জুড়ে হিন্দু মহাসভার ১২০টি কার্যালয়ে যজ্ঞ করা হয়েছে।’’
দেশ জুড়ে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার এখন প্রবল অস্বস্তিতে। সেই অস্বস্তি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাড়া করেছে ব্রিটেনেও। বিলেতে সাংবাদিকদের অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে তিনি ঢাল করেছেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এবং গৌতম বুদ্ধকে। আর দেশের মাটিতে সেই গাঁধী হত্যাকারী গডসের মৃত্যুদিন পালন বিজেপির অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল। বিরোধীদের হাতেও তুলে দিল আরও একটি রাজনৈতিক অস্ত্র। এই ঘটনায় জন্য বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছে কংগ্রেস। সেই কারণেই ‘বলিদান দিবস’ বা ‘শৌর্য দিবস’ পালনের সঙ্গে নিজেদের দূরত্ব তৈরিতে মরিয়া বিজেপি। দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘কিছু সংগঠন গডসের নামে কিছু অনুষ্ঠান করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। ওই সব সংগঠনের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ ‘বলিদান দিবস’ পালনের তীব্র বিরোধিতা করেছে আরএসএস-ও।
গাধীকে হত্যার অপরাধে ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর ফাঁসি হয় গডসের। হিন্দু মহাসভা এক বছর আগে ঘোষণা করেছিল, গডসের স্মৃতিতে তারা একটি মন্দির বানাতে চায়। এ দিন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি ঠাণেতে ‘বলিদান দিবস’ পালন করে। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে কংগ্রেস। পোড়ানো হয় গডসের কুশপুতুল। গডসের স্মৃতিতে মন্দির গড়ার চেষ্টার প্রতিবাদে ঠাণের রাস্তায় কালো প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সেক্রেটারি মনোজ শিন্দের অভিযোগ, মহারাষ্ট্রের বিজেপি-শিবসেনা সরকারের গাফিলতির জন্যই এই ঘটনা ঘটল।
মেরঠেও এ দিন ‘বলিদান দিবস’ পালন করে হিন্দু মহাসভা। কয়েক মাস আগে মেরঠের সারদা রোডে নিজেদের কার্যালয়ে গডসের মুর্তি বসানোর চেষ্টা করেছিল হিন্দু মহাসভা। কিন্তু উত্তেজনা ছড়ানোর ভয়ে সেই মুর্তি বসানোর অনুমতি দেয়নি পুলিশ। এমনকী মুর্তি বসানোর জায়গাটিও ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছিল।
এ দিন ‘বলিদান দিবস’ উপলক্ষে গডসের নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করে হিন্দু মহাসভা। হিন্দু মহাসভার শাখা সংগঠন বিশ্ব হিন্দুপীঠের সভাপতি মদন আচার্য বলেন, ‘‘এই ওয়েব সাইট থেকে সাধারণ মানুষ গডসে সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।’’ হিন্দু মহাসভার জাতীয় সহ-সভাপতি পণ্ডিত অশোক শর্মা জানিয়েছেন, গডসের জীবনী পাঠ্য পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানানো হবে।
এই ‘বলিদান দিবস’ পালনের তীব্র নিন্দা করেছে আরএসএস। আরএসএসের নেতা এমজি বৈদ্য বলেন, ‘‘আমি জানি না কোন সংগঠন এ সব করছে। কিন্তু আমি গডসেকে কোনও সম্মান দেখাতে রাজি নই। সে এক জন খুনি।’’ বৈদ্যর কথায়, ‘‘গডসে গাঁধীকে খুন করে হিন্দুত্বের অপমান করেছেন।’’
আরএসএস এ সব বললেও ‘বলিদান দিবস’ পালনের জন্য বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই সব হিন্দুত্ববাদী সংগঠন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গডসের মৃত্যুদিবস পালনেরও সাহস পাচ্ছে তারা।’’ এর জবাবে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘হতাশা থেকেই কংগ্রেস এ সব কথা বলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy