Advertisement
০৩ মে ২০২৪
Bilkis Bano Case

কবে, কী ভাবে বিলকিসের ধর্ষকদের জেলে ফিরতে হবে? কী কী নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত?

বিলকিস বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেয়েছে গুজরাত সরকার। মেয়াদ শেষের আগে ধর্ষকদের মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা, সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩৫
Share: Save:

বিলকিস বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেয়েছে গুজরাত সরকার। মেয়াদ শেষের আগে ধর্ষকদের মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা, সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, মুক্তি পাওয়া ওই ১১ জন অপরাধীকেই আবার ফেরত যেতে হবে জেলে। এ বার তাঁদের কী করতে হবে, সেই সংক্রান্ত নির্দেশও দিয়ে দিল আদালত।

সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, তা এক্তিয়ার বহির্ভূত। বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের পর্যবেক্ষণ, জালিয়াতি করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই ছিল না গুজরাত সরকারের। যে হেতু মামলার শুনানি মহারাষ্ট্রে হয়েছে, তাই মহারাষ্ট্র সরকারই পারে এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ১১ জন অপরাধী আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলে গিয়ে রিপোর্ট করতে হবে।

২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার ১১ অপরাধীর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছিল। এর পরই ১১ জনকে ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় আদালত। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ১১ জনের মুক্তির পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এ নিয়ে বিতর্ক বাধে। বিতর্কের মধ্যেই গুজরাত সরকার জানায় যে, জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ‘ভাল আচরণ’ করেছেন, সে কারণেই তাঁদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে। যদিও প্রতিপক্ষ দাবি করে, ওই ১১ জন বিভিন্ন সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যখন জেলের বাইরে ছিলেন, তখনও তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল। এঁদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে প্যারোলে মুক্ত থাকার সময় অপরাধ মূলক কার্যকলাপের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। মোট ১০ জনই বিভিন্ন সময়ে প্যারোলের নিয়মভঙ্গ করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারেন হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bilkis Bano Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE