E-Paper

সিওপি২৮: অঙ্গীকার এড়াতে পারে ভারত

৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর সম্মেলনটি হওয়ার কথা। সেখানেই বিভিন্ন দেশ সরকারি ভাবে তাদের অবস্থান জানাবে। তবে এই ব্যাপারে সাফল্যের অনেকটাই ভারত এবং চিনের উপরে নির্ভর করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৮
narendra modi

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

আগামী নভেম্বরের শেষে রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সম্মেলন ‘সিওপি২৮’ আয়োজিত হবে দুবাইয়ে। উষ্ণায়ন কমিয়ে আনতে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় কার্বন নিঃসরণে রাশ টানতে সেখানে একটি অঙ্গীকারপত্র পেশ হওয়ার কথা। সরকারি সূত্রে খবর, ভারত সম্ভবত সেটিতে সই করবে না।

সম্মেলনের আয়োজক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ কর্মসূচির শীতল-জোট বা ‘কুল কোয়ালিশন’ অঙ্গীকারপত্রটি তৈরি করেছে। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ ২০২২ সালের তুলনায় ৬৮ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে তাতে। রেফ্রিজারেটর বা বাতানুকূল যন্ত্রের মতো ঠান্ডা-করার বিভিন্ন প্রযুক্তি যাতে দীর্ঘমেয়াদে সহনীয় ও টেকসই করা যায়, সেই সংক্রান্ত উদ্ভাবনে বড়সড় বিনিয়োগের কথা থাকছে। বলা হচ্ছে এই সংক্রান্ত পণ্যে মাসুল বাড়ানোর কথাও।

৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর সম্মেলনটি হওয়ার কথা। সেখানেই বিভিন্ন দেশ সরকারি ভাবে তাদের অবস্থান জানাবে। তবে এই ব্যাপারে সাফল্যের অনেকটাই ভারত এবং চিনের উপরে নির্ভর করবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্ব-অর্থনীতি এবং কার্বন নিঃসরণে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই দু’টি দেশের মিলিত জনসংখ্যা ২৮০ কোটি। চিনও অঙ্গীকারপত্রে সই না-করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক এই অঙ্গীকারপত্রের ব্যাপারে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে এখনও ভাবনাচিন্তা চলছে। মন্ট্রিয়ল প্রোটোকল অনুসারে ওজ়ন-স্তর রক্ষায় ১৯৯২ সালে ভারত গ্রিন হাউজ় গ্যাস নিঃসরণ কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। ২০১৯-এর ‘কুলিং অ্যাকশন প্ল্যান’ অনুসারে দেশে ২০৩৮-এর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঠান্ডা-রাখার প্রযুক্তির চাহিদা ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমানোর কথা রয়েছে। সরকারি আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, তার থেকে বড় কোনও লক্ষ্যমাত্রার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে চাইছে না নয়াদিল্লি।

এক সরকারি কর্তা বলেন, ‘‘ভারতে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ এবং শক্তির ব্যবহার অত্যন্ত কম। এখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঠান্ডা করার প্রযুক্তির চাহিদা আগামী দিনে বাড়তে চলেছে। এমন কোনও বিষয়ে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ঝুঁকি নেওয়া চলে না, যাতে সেই প্রযুক্তি খরচবহুল হয়ে পড়ে।’’ বিশ্বে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণ যেখানে পাঁচ মেট্রিক টন, ভারতে সেটা দুই মেট্রিক টন। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা বা আইইএ-র গত সপ্তাহে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০৫০ সালের মধ্যে ভারতে বাতানুকূল যন্ত্রের চাহিদা বাড়তে পারে ন’গুণ। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এ দেশে বাতানুকূল যন্ত্রের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে ২১ শতাংশ। মোট বিদ্যুতের চাহিদার দশ শতাংশই আসে এই ধরনের যন্ত্রের থেকে।

সিওপি২৮-এর অঙ্গীকারপত্রটি তৈরিতে সহায়তা করেছে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। সেটির শক্তি-সাশ্রয় বিভাগের প্রধান ব্রায়ান ডিনের বক্তব্য, অঙ্গীকারটির জন্য ভারতকেই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দেশ বলা যেতে পারে। তিনি বলছেন, ‘‘দেশের জন্য যা দরকার, ‘ইন্ডিয়া কুলিং অ্যাকশন প্ল্যান’ অনুসারে ভারত সেটা করে চলেছে। তারা অঙ্গীকারপত্রে সই করলে তা বিশ্বের সামনে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হবে।’’ অঙ্গীকারটি বিভিন্ন দেশকে তহবিলপ্রাপ্তির সুযোগ করে দেবে বলে দাবি করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারত সই না করলে অন্য দেশ সেই সুযোগ
নিতে পারবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy