Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Coronavirus

সামাজিক টিকায় ভরসা রাখছে কেন্দ্র

ইতিমধ্যেই জন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ৬ অক্টোবর শুরু হয়েছে সেই কর্মসূচি।

টিকা আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত এমন কড়া সতর্কবিধিতেই জোর দিচ্ছে কেন্দ্র।

টিকা আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত এমন কড়া সতর্কবিধিতেই জোর দিচ্ছে কেন্দ্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৩০
Share: Save:

আগামী বছরের প্রথম দিকেই হয়তো কোভিড-১৯-এর একাধিক প্রতিষেধক ভারতের হাতে চলে আসবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন আজ এ কথা উল্লেখ করে জানিয়েছেন, সরকার এখন প্রতিষেধক কী ভাবে সরবরাহ করা হবে তা নিয়ে পরিকল্পনা ও ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে।

তবে যত দিন ভাইরাসের ভ্যাকসিন না-আসে, তত দিন সরকারের ভরসা ‘সোশ্যাল ভ্যাকসিন’! কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দেশবাসীকে আপাতত ‘যথাযথ আচরণ’-এর দাওয়াই দিচ্ছে মোদী সরকার। মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। জোরদার প্রচার চালানো হবে এই তিনটিতে মানুষকে অভ্যস্ত করে তুলতে। এর জন্য ইতিমধ্যেই জন আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ৬ অক্টোবর শুরু হয়েছে তা। এই ক’দিনেই তা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আজ দাবি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও নীতি আয়োগ।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ এ দিন ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক করেন। সেখানে কোভিড যুদ্ধে ভারতের সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরেন। তবে দেশে অর্থনৈতিক কাজকর্ম আবার বাড়তে শুরু করেছে। খুলছে স্কুল-কলেজ। এর উপরে সামনে আসছে উৎসবের মরশুম ও শীতের দিনগুলি। এই সময়ে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কার কথাও বিশেষ ভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দেশবাসীর যথাযথ আচরণই এটা ঠেকাতে পারে।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দেশে এই পর্যন্ত ৬২,২৭,২৯৫ জন কোভিড রোগী সেরে উঠেছেন। সুস্থ হয়ে ওঠার হার এখন ৮৬.৭৮%, বিশ্বে যা সর্বোচ্চ। মৃত্যুর হার বিশ্বে সবচেয়ে কম, ১.৫৩%। সংক্রমণ দ্বিগুণ হওয়ার সময় ৭৪.৯ দিনে তুলে আনা গিয়েছে গত তিন দিনে। করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯২৭। এতে দিনে ১৫ লক্ষ নমুনা পরীক্ষার ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১১ লক্ষের কাছাকাছি পরীক্ষা হয়েছে গোটা দেশে।

দেশে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে দাবি করলেও কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে পশ্চিমবঙ্গের ছবিটা অন্য রকম। গত সপ্তাহে দেশে মোট সংক্রমিতের ৩.০২% ছিল পশ্চিমবঙ্গে। চলতি সপ্তাহে তা বেড়ে হয়েছে ৩.৬৫%। পশ্চিমবঙ্গ দশ থেকে উঠে এসেছে সাত নম্বরে।

সরকার চায়, ওষুধ বা প্রতিষেধক যত দিন না-আসছে, কোভিড মোকাবিলায় যথাযথ আচরণই হয়ে উঠুক সামাজিক প্রতিষেধক। প্রচারের কাজটা শুরু হয়ে যাচ্ছে এখন থেকেই। নভেম্বর-ডিসেম্বর, এই দু’মাসে এটিকে জন আন্দোলনে পরিণত করতে চায় কেন্দ্র। অন্তত আগামী মার্চ পর্যন্ত যা চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক ও সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব অমিত খারে জানান, পোস্টার-ব্যানার ও অন্যান্য ভাবে যথাযথ আচরণের জন্য জন আন্দোলনের বার্তা ৯০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। সমাজে প্রভাব রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের এ কাজে লাগানো হবে। অমিতাভ বচ্চন, শঙ্কর মহাদেবন, সানিয়া মির্জ়া, কার্তিক আরিয়ান, রাজকুমার রাও, অনিল কপূর, দিব্যা দত্ত, সাইনা নেহওয়ালের মতো অনেকেই এগিয়ে আসছেন।

৩০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ১৫ জন রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী প্রচার অভিযানে যোগ দিয়েছেন।

বর্তমানে দেশে দু’টি দেশীয় সম্ভাব্য প্রতিষেধকের পরীক্ষা দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে। একটি আইসিএমআর এবং ভারত বায়োটেকের। দ্বিতীয়টি জ়াইডাস ক্যাডিলার। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সম্ভাব্য প্রতিষেধকেরও দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যাযের পরীক্ষা চলছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে। আগামী বছরের গোড়ায় এক বা একাধিক প্রতিষেধক চলে এলে, গোটা দেশে তা জোগাতে কেন্দ্র কত অর্থ বরাদ্দ রাখছে, এই প্রশ্ন করা হয়েছিল সাংবাদিক সম্মেলনে। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও অঙ্ক জানানো হয়নি। তবে সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, একাধিক বিকল্প চলে এলে ভ্যাকসিনের দাম অনেকটাই কমে যাবে। ফলে বাস্তবে কত অর্থ প্রয়োজন পড়বে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। প্রতিষেধকের পরীক্ষার জন্য অর্থ সাহায্য করছে কেন্দ্র। প্রতিষেধক জোগানোর জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাতে সরকার প্রস্তুত রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE