Advertisement
E-Paper

রামলালা সরাতে মোদীর লক্ষ্মণরেখা পেরোলেন যোগী

ফলাও করে সেই ছবি ও ভিডিয়ো টুইটও করলেন নিজেই। স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্ক বেধেছে এ নিয়ে। উঠে এসেছে বেশ কিছু প্রশ্ন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৪:৫০
িনয়ম শিকেয়: লকডাউনের মধ্যেই বেশ কয়েক জনকে সঙ্গী করে রামলালার মূর্তি অন্যত্র প্রতিষ্ঠা করতে নিয়ে যাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বুধবার অযোধ্যায়।  ছবি: পিটিআই

িনয়ম শিকেয়: লকডাউনের মধ্যেই বেশ কয়েক জনকে সঙ্গী করে রামলালার মূর্তি অন্যত্র প্রতিষ্ঠা করতে নিয়ে যাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বুধবার অযোধ্যায়।  ছবি: পিটিআই

করোনা-সংক্রমণ রুখতে তিন সপ্তাহ সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত কাল জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় হাতজোড় করে সকলকে অনুরোধ করেছেন, বাড়ির দরজায় লক্ষ্মণরেখা টেনে ২১ দিন তার বাইরে এক পা-ও না ফেলতে। সেই অনুযায়ী নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও। কিন্তু তার ১২ ঘণ্টা না-কাটতেই লক্ষ্মণরেখা শিকেয় তুলে বেরিয়ে পড়লেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ! তা-ও সরকারি কাজে নয়। অযোধ্যায় গিয়ে রামলালার মূর্তিকে নিজে হাতে করে নিয়ে এসে আপাতত অন্যত্র প্রতিষ্ঠা করলেন যোগী। তার জন্য পুজোপাঠে জনা কুড়ি লোকের সমাগম হল। ফলাও করে সেই ছবি ও ভিডিয়ো টুইটও করলেন নিজেই। স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্ক বেধেছে এ নিয়ে। উঠে এসেছে বেশ কিছু প্রশ্ন।

প্রশ্ন এক, মোদী সরকার স্পষ্টই জানিয়েছে, করোনা-সঙ্কটের এই পর্বে দেশের সব ক’টি রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত স্বাস্থ্য ক্ষেত্র। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, বিজেপিরই এই মুখ্যমন্ত্রী সেটা উপেক্ষা করেন কী ভাবে?

প্রশ্ন দুই, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকার ১০ নম্বর পয়েন্টে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, লকডাউনের পর্বে সারা দেশে সমস্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, বিনোদনমূলক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান কিংবা জমায়েত বাতিল করতে হবে। সেই নির্দেশিকা মেনে গোটা দেশে সব মন্দির-মসজিদ-গির্জা-গুরুদ্বার-মঠ জমায়েত বন্ধ রেখেছে। পথে বেরোলে রাজ্যে রাজ্যে পুলিশ লাঠিপেটা করছে, কান ধরে ওঠবোস, এমনকি হামাগুড়ি দেওয়াচ্ছে, চলছে ধরপাকড়। এর মধ্যে দেশের সব থেকে জনবহুল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যোগী কী ভাবে এমন ধর্মীয় জমায়েতের পুরোধা হতে পারেন? ফলাও করে করতে পারেন তার প্রচারও!

গত কাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পরেই উত্তরপ্রদেশের মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ মেনে চলার আর্জি জানিয়েছেন আদিত্যনাথ নিজেও। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য এই মুহূর্তে দোকান-বাজারে ভিড় জমানোর প্রয়োজন নেই। ঘরে-ঘরে তা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেবে উত্তরপ্রদেশ সরকার। যাতে ওই জমায়েত থেকেও রোগ না-ছড়ায়।

প্রশ্ন তিন, যে মুখ্যমন্ত্রী খাবার আনতেও এই মুহূর্তে ঘরের বাইরে পা না-ফেলার পক্ষপাতী, তিনি নিজে কী ভাবে ধর্মীয় জমায়েতে শামিল হন?

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অযোধ্যার দীর্ঘদিনের বিতর্কিত জমিতে এ বার শুরু হবে রামমন্দির গড়ার কাজ।

যদি না করোনার আক্রমণে আপাতত তা কিছু দিনের জন্য পিছিয়ে যায়। ওই মন্দির গড়ার জন্যই অযোধ্যায় যে তাঁবুতে রামলালার স্থায়ী মন্দির ছিল, সেখান থেকে তাঁর মূর্তি আপাতত সরিয়ে এনে রাখা হল অন্যত্র। মন্দির তৈরির পরে সেখানে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে বিগ্রহ। সাময়িক ভাবে ওই মূর্তি সরিয়ে আনার জন্যই গত কাল অযোধ্যা গিয়েছিলেন যোগী। মুখ্যমন্ত্রীর টুইটেই দেখা যাচ্ছে, এ জন্য পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। জড়ো হয়েছেন কয়েক জন। রামলালাকে নিয়ে আসার সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন অযোধ্যার জেলাশাসক। আছেন পুলিশের পদস্থ কর্তারাও।

প্রশ্ন চার, লক্ষ্মণরেখার ভিতরে থাকার ডাককে মান্যতা দিয়ে আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবতও আজ সঙ্ঘের সদস্যদের আপাতত শাখায় এসে সমবেত ভাবে ব্যায়াম কিংবা প্রার্থনা করতে বারণ করে দিয়েছেন। এত সাবধানতার মধ্যেও নিজে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ও জমায়েতে অংশ নিয়ে কী বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী? বিরোধীদের বক্তব্য, রামমন্দির নির্মাণের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নয় তাঁর কাছে! তাতে দেশে নোভেল করোনাভাইরাস আরও ছড়ায় ছড়াক!

রামলালার মূর্তিকে যোগী নিজে হাতে নিয়ে এলেও, রামনবমী উপলক্ষে অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যে বিপুল জনসমাগম হওয়ার কথা ছিল, বিতর্কের চাপে তা অবশ্য বন্ধ করে দিয়েছে যোগী সরকার।

Coronavirus Uttar Pradesh Yogi Adityanath Ramlala
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy