Advertisement
E-Paper

কিট অপ্রতুল, ঢালাও পরীক্ষা তাই সর্বত্র নয়

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান ধরলে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত দেশের ২৫৪৭ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৩
ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

করোনাভাইরাসে এ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ঠিক কত?

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান ধরলে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত দেশের ২৫৪৭ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আইসোলেশনে রাখা হয়েছে কয়েক হাজার মানুষকে। কিন্তু এ তো সরকারি তথ্য। সরকারের সঙ্গে যুক্ত নন এমন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, ভারতের মতো দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এত কম হতেই পারে না। বাছবিচার না-করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হলেই বোঝা যেত, ওই সংক্রমণ আসলে কতটা গভীরে ছড়িয়ে গিয়েছে।

কিন্তু শুরুর দিন থেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়ে এসেছে, উপসর্গ না-থাকলে করোনা পরীক্ষা করা হবে না। বর্তমানে রোজ যেখানে সংক্রমণ চারশো ছুঁয়ে ফেলছে, ঘটে গিয়েছে নিজামুদ্দিন বা মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তিতে সংক্রমণের ঘটনা, একাধিক এলাকায় স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন খোদ স্বাস্থ্যকর্তারাই— সেখানে কেন পুরনো নীতি আঁকড়ে রয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক? উত্তর একটাই, কিটের অপ্রতুলতা।

আরও পড়ুন: কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়েছে, দাবি মার্কিন গবেষকদের

করোনা পরীক্ষার জন্য যে কিট বর্তমানে ভারতে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বিদেশ থেকে আনা। একে তার দাম বেশি, উপরন্তু গোটা বিশ্বে চাহিদার কারণে জোগান অপ্রতুল। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে এই মুহূর্তে সরকারের হাতে ১০ লক্ষের কাছাকাছি কিট রয়েছে। যা ১৩০ কোটি জনসংখ্যার প্রশ্নে যৎসামান্য। কিট কম থাকার কারণেই শুরুতে উপসর্গের ভিত্তিতে পরীক্ষা করে দেখার নীতি হাতে নেয় সরকার। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব অগরওয়াল কম সংখ্যক কিট থাকার কথা মেনে নিয়ে বলেন, “নিজের মনকে প্রবোধ দিতে সকলেই যদি করোনা পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করেন, সেটা আদৌ সঠিক রণনীতি নয়। আমাদের যথেষ্ট সংখ্যক কিট না থাকায় আগের নিয়ম মেনেই পরীক্ষা হবে।” তবে যে এলাকাগুলি হট স্পট, অর্থাৎ বেশি আক্রান্ত একত্রে পাওয়া যাচ্ছে, সেখানকার প্রায় সব বাসিন্দার করোনা-পরীক্ষার নীতি নিয়েছে কেন্দ্র।

বিশ্বের নিরিখে

প্রতিদিন কত জনের পরীক্ষা?
• ভারত ৫,১৬৩

(১ এপ্রিল পর্যন্ত)

• আমেরিকা ১ লক্ষ ৯৮৯
• দক্ষিণ কোরিয়া ১০.৯৮৩

জনসংখ্যার সঙ্গে কি পরীক্ষার সামঞ্জস্য রয়েছে?
প্রতি লক্ষ মানুষে করোনা-টেস্ট
• ভারত ৩২
• চিন ২৩০
• আমেরিকা ৩,০৭৮
• দক্ষিণ কোরিয়া ৭,৭১০

কিন্তু তা-ও কি যথেষ্ট! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একেবারেই নয়। কিটের অপ্রতুলতার কারণে ভারতে ১ এপ্রিলে যেখানে প্রতি ১০ লক্ষে মাত্র ৩৪.৬৭ জনকে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে, সেখানে ইটালি বা দক্ষিণ কোরিয়ায় পরীক্ষা হয়েছে যথাক্রমে ৯১৪৬.১৬ ও ৮১৮৪.২৭ জনের। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সদস্য শমিকা রবি বলেন, “শুরুতেই বাছবিছার না-করে পরীক্ষা শুরু করলে নিজামুদ্দিনের ঘটনা অনেক আগেই সামনে চলে আসত।”

পাল্টা যুক্তিতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের দাবি, ইটালির মতো দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। তাই তাদের পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতেই হয়েছে। ভারতেও গোষ্ঠী সংক্রমণের ঘটনা সামনে এলে ঢালাও পরীক্ষা নীতি চালু করা হবে। সূত্রের মতে, ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ায় অ্যান্টিবডি ভিত্তিক পরীক্ষা দ্রুত শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে আইসিএমআর।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

Coronavirus India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy