Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus update

২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৯ হাজার নতুন সংক্রমণ, মোট মৃত্যু ছাড়াল ৩০ হাজার

এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৪৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৬০২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এক দিনের নিরিখে যা সর্বোচ্চ। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৬০২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এক দিনের নিরিখে যা সর্বোচ্চ। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ১০:২৬
Share: Save:

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তা চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের আধিকারিক থেকে চিকিৎসকদের। ৩৯-৪০ হাজারের গণ্ডি ছাড়িয়ে দৈনিক বৃদ্ধি বৃহস্পতিবার এক লাফে বেড়ে হয়েছিল প্রায় ৪৬ হাজার। শুক্রবার তা পৌঁছে গেল ৪৯ হাজারে! কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ৩১০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এক দিনে আক্রান্তের নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১২ লক্ষ ৮৭ হাজার ৯৪৫ জন।

আক্রান্তের পাশাপাশি সংক্রমণের হারও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ১৩.৯৮ শতাংশ।

আক্রান্তের পাশাপাশি ধারাবাহিক ভাবে মৃত্যু বেড়ে ৩০ হাজার পার করল। যার জেরে মৃত্যুর নিরিখে স্পেনের পর ফ্রান্সকেও টপকে গেল ভারত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭৪০ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩০ হাজার ৬০১ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস।

এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১২ হাজার ৮৫৪ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৭৪৫ জনের। তিন হাজার ২৩২ জনের প্রাণহানি নিয়ে মৃত্যু-তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। গুজরাতে দু’হাজার ২৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। কর্নাটক (১,৬১৬), উত্তরপ্রদেশ (১,২৮৯) ও পশ্চিমবঙ্গে (১,২৫৫) মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ (৮৪৪), মধ্যপ্রদেশ (৭৮০), রাজস্থান (৫৯৪), তেলঙ্গানা (৪৪৭), হরিয়ানা (৩৭৮), জম্মু ও কাশ্মীর (২৮২), পঞ্জাব (২৭৭), বিহার (২১৭, গত তিন দিন অপরিবর্তিত) ও ওড়িশা (১১৪)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি। তবে শেষ ক’দিনে কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যার বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন আট লক্ষেরও বেশি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৪ হাজার ৬০২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এক দিনের নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট আট লক্ষ ১৭ হাজার ২০৮ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।

শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে বল্গাহীন ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১০ হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন তিন লক্ষ ৪৭ হাজার ৫০২ জন। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার বেড়ে তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত হলেন এক লক্ষ ৯২ হাজার ৯৬৪ জন। জুনের তুলনায় বিগত কয়েক সপ্তাহে রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ২৭ হাজার ৩৬৪ জন।

গত কয়েক দিনে কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণ। যার জেরে সংক্রমণ তালিকার চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে দক্ষিণের এই দুই রাজ্য। কর্নাটকে মোট আক্রান্ত ৮০ হাজার ৮৬৩ জন ও অন্ধ্রপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৭২ হাজার ৭১১ জন। উত্তরপ্রদেশ (৫৮,১০৪), গুজরাত (৫২,৪৭৭), পশ্চিমবঙ্গে (৫১,৭৫৭) ও তেলঙ্গানাতেও (৫০,৮২৬) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৩৩,২২০), বিহার (৩১,৯৮০), হরিয়ানা (২৮,৯৭৫), অসম (২৮,৭৯১), মধ্যপ্রদেশ (২৫,৪৭৪), ওড়িশা (২১,০৯৯), জম্মু ও কাশ্মীর (১৬,৪২৯), কেরল (১৬,১১০) ও পঞ্জাব (১১,৭৩৯)। ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও পাঁচ হাজারের আশপাশে।

গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে রোজ দু’হাজারেরও বেশি জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। যার জেরে রাজ্যের মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে দু’হাজার ৪৩৬ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ৫১ হাজার ৭৫৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। এ পর্যন্ত মোট এক হাজার ২৫৫ জন রাজ্যবাসীর প্রাণ কাড়ল করোনা।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE