Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
coronavirus

৬ মাস পর দেশের দৈনিক সংক্রমণ ফের ৮১ হাজার পেরলো, মুম্বইয়ে ৮,৬৪৬

৯-১০টি রাজ্যের আক্রান্ত বৃদ্ধি দেশে দৈনিক সংক্রমণ এই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। সবথেকে বেশি মহারাষ্ট্রে । সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪৩,১৮৩ জন।

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান।

দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২১ ১০:০৫
Share: Save:

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ক্রমেই বেসামাল হচ্ছে দেশের কোভিড পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭২ হাজার। শুক্রবার তা প্রায় সাড়ে ৮১ হাজার। ২৮ সেপ্টেম্বরের পর এত সংখ্যক লোক এক দিনে আবার আক্রান্ত হলেন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি সবচেয়ে করুণ। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা গোটা করোনাকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেখানে এক দিনে আক্রান্ত ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত ৮১ হাজার ৪৬৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ২৩ লক্ষ ৩ হাজার ১৩১ জন। করোনার নতুন প্রজাতির জন্যই সংক্রমণ এ রকম আকার নিচ্ছে বলে সম্প্রতি মত প্রকাশ করেছিলেন দিল্লি এমসের প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। দেখা যাচ্ছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এক লাফে বাড়িয়ে দিয়েছে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও। দেশের দৈনিক মৃত্যু এক মাস আগেও ছিল ১০০-র আশপাশে। গত ২৪ ঘণ্টায় তা ৪৬৯। মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ২৪৯ জনের। কর্নাটক, দিল্লি, পঞ্জাব এবং ছত্তীসগঢ়েও গত ক’দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে।

৯-১০টি রাজ্যের আক্রান্ত বৃদ্ধি দেশে দৈনিক সংক্রমণ এই পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্র তাদের মধ্যে সবার উপরে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৪৩ হাজার ১৮৩ জন। সে রাজ্যের একাধিক জেলায় হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। এর মধ্যে মুম্বইয়ের অবস্থা রোজ খারাপ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বইয়ে আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৬৪৬ জন। যা গোটা করোনা অতিমারি কালে এখনও অবধি সর্বোচ্চ। বাণিজ্য নগরীতে ইতিমধ্যেই ৮০টি এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই কন্টেনমেন্ট জোনের ৬৫০টি বহুতল সিল করে দিয়েছে মুম্বইয়ের পুর প্রশাসন। নতুন করে বিধি নিষেধ জারি করার আভাসও দিয়েছেন মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেদনেকর।

মহারাষ্ট্রের মতো রাজধানী দিল্লির অবস্থারও অবনতি হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্রবার আক্রান্ত বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৯০ জন। তামিলনাড়ুতেও আক্রান্ত ২ হাজার ৮১৭। কেরল, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি। কর্নাটকে লাগামছাড়া হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। সেখানে দৈনিক আক্রান্ত গত ক’দিনে বেড়ে ৪ হাজার ছাড়াচ্ছে। ছত্তীসগঢ়ে অবস্থাও কর্নাটকের মতোই। পঞ্জাবে দৈনিক আক্রান্ত ৩ হাজারের বেশি। উপরের রাজ্যেগুলির মতো অবস্থা না হলেও রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেলঙ্গানাতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। পশ্চিমবঙ্গেও দৈনিক সংক্রমণ শুক্রবার এক হাজার ছাড়িয়েছে।

এরই পাশাপাশি দেশে জোরকদমে চলছে করোনা টিকাকরণ। ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি বয়সীরাও টিকা পাচ্ছেন। দেশে এখনও অবধি ৬ কোটি ৮৭ লক্ষ ৮৯ হাজার ১৩৮ টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় টিকাকরণ হয়েছে গত ১০ দিনের মধ্যে সবথেকে বেশি। ৩৬ লক্ষ ৭১ হাজার ২৪২ জন দেশে টিকা পেয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। টিকাকরণ চললেও সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত রুখতে সাধারণ মানুষকে আরও সতর্ক এবং কোভিড বিধি মেনে চলার আবেদন জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। বাজারে দোকানে ভিড় না করা, মাস্ক পরে থাকার কথা বলছেন তাঁরা। কিন্তু দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই এই সচেতনতার অভাব স্পষ্ট। সে জন্য লকডাউনের পথেও হাঁটার কথা ভাবছে কিছু রাজ্যে। লকডাউন জারি করা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আজ শুক্রবার বৈঠকে বসবে মহারাষ্ট্র প্রশাসন। মুম্বইয়েও আরটি-পিসিআর করোনা পরীক্ষার দাম কমিয়ে দিয়েছে সরকার। ১০০০ থেকে দাম কমিয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে সেখানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 coronavirus Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE