স্যানিটাইজ করা হচ্ছে নিজামউদ্দিন এলাকা। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির নিজামউদ্দিনে বাংলেওয়ালি মসজিদের ধর্মীয় সমাবেশে হাজির বহুজনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ওই মসজিদ লাগোয়া বাসিন্দাদের জন্য রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে আশপাশের এলাকাগুলো। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রসব যন্ত্রণায় কাতর এক মহিলাকেও চিকিত্সকের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
নাজিম শেখ নামে এক ব্যক্তি তাঁর প্রসূতি স্ত্রীকে নিয়ে চিকিত্সকের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, আন্ডারপাসে পাহারারত কালে খানের বাসিন্দাদের কাছে প্রেসক্রিপশন দেখানোর পরেও যেতে দেওয়া হয়নি। বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও তাঁদের বলা হয় অন্য পথ দিয়ে ঘুরে যেতে। একই রকম পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন নিজামউদ্দিনের আরও অনেক মানুষ।
মসজিদ থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে সরাই কালে খান বস্তি। এই ঘটনার পর থেকেই নিজামউদ্দিনের সঙ্গে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন এলাকাবাসীরা। নিজামউদ্দিন রেলস্টেশন এবং সরাই কালে খান বস্তির মাঝে রয়েছে একটি আন্ডারপাস। এটাই কালে খান বস্তি এবং নিজামউদ্দিনের ধর্মীয় স্থান লাগোয়া এলাকার সংযোগস্থল। কিন্তু ধর্মীয় সমাবেশে করোনা আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আন্ডারপাসটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে সরাই কালে খানের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। ফলে রেলস্টেশনে যাওয়ার পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। চরম সমস্যায় পড়েছেন ধর্মীয় স্থানলাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: তবলিগ নিয়ে আরও কড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, কালো তালিকাভুক্ত ৯৬০ বিদেশি
আরও পড়ুন: ২৩০০ ছাড়াল দেশের করোনা আক্রান্ত, মৃত্যু বেড়ে ৫৬
কালে খানের এক বাসিন্দা আলিমুদ্দিন স্টেশনের কাছেই একটি চায়ের দোকানে কাজ করেন। তিনি বলেন, “আন্ডারপাসটি অবরুদ্ধ করে দেওয়ার জন্য গত ৩১ মার্চ থেকে বাড়িতে যেতে পারছেন না। একই রকম অবস্থা আরও অনেকের। নরেন্দ্র মোদীর লকডাউনের ঘোষণাতেও এত দিন যতটা না সাড়া পড়েছে ওই সব এলাকায়, নিজামউদ্দিনের বাংলেওয়ালে মসজিদে তাবলিগ জামাতের সমাবেশের পর থেকেই যেন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে কালে খান বস্তি-সহ আশপাশের বহু এলাকা। এমনটাই জানিয়েছেন কালে খানের বাসিন্দারা।
একটার উপর আর একটা রিকশা চাপিয়ে আন্ডারপাস বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রথমে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে রিকশা সরিয়ে দেয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। কালে খানের বাসিন্দাদের মধ্যে থেকেই একটি দল তৈরি করে আন্ডারপাসটি পাহারা দিচ্ছে। প্রত্যেকের হাতে লাঠিসোটা। সব সময়ই তাঁরা নজর রাখছেন কেউ যেন কালে খান থেকে বাইরে বেরতে না পারেন, বা বাইরে থেকে এলাকায় কেউ যেন ঢুকতে না পারেন। কালে খানের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই এলাকা থেকেই বহু মানুষ নিজামউদ্দিনে যান প্রতি দিন। কিন্তু এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক গ্রাস করেছে গোটা এলাকাকে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, নিজামউদ্দিনে যাওয়া কোনও ব্যক্তি যদি সংক্রমিত হয়ে এলাকায় ফিরে আসেন, তা হলে মহাবিপদে পড়বেন তাঁরা। তাই এটা কোনও ভাবেই হতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন কালে খানের বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy