Advertisement
E-Paper

‘সারোগেসির মাধ্যমে’ পাওয়া শিশুর সঙ্গে ডিএনএ মিলছে না! প্রতারণার দায়ে চিকিৎসক-সহ আট জন গ্রেফতার হায়দরাবাদে

জেরায় ধৃত দাবি করেছেন, অভিযোগকারী দম্পতিকে যে শিশু দেওয়া হয়েছিল, তার জন্মদাতা বাবা-মা অসমের বাসিন্দা। হায়দরাবাদে তাঁরা কাজ করেন। ওই দম্পতিকে ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১৪:০৫

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

‘সারোগেসি’-র মাধ্যমে সন্তান নিয়েছিলেন এক দম্পতি। ব্যবস্থা করে দিয়েছিল হায়দরাবাদের এক ক্লিনিক। কিন্তু সন্তানকে কাছে পাওয়ার পর থেকেই জন্মায় সন্দেহ। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেই সন্তান তাঁদের নয়। ডিএনএ-র কোনও মিল নেই তার সঙ্গে। এর পরেই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের গোপালপুরম থানায় অভিযোগ জানান দম্পতি। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক আথালুরি নম্রতা, তাঁর আইনজীবী পুত্র, শিশুটির প্রকৃত বাবা-মা-সহ আট জনকে রবিবার গ্রেফতার করেছে। অভিযোগ, এক গরিব পরিযায়ী দম্পতির শিশু কিনে এনে সন্তানকামী ওই দম্পতিকে দিয়েছিলেন নম্রতা। ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে শিশু কেনাবেচা, বেআইনি ভাবে ভিন্‌রাজ্যে শুক্রাণু, ডিম্বাণু পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগকারী দম্পতি আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা। তাঁরা এখন হায়দরাবাদে থাকেন। দীর্ঘ দিন ধরে সন্তানধারণের চেষ্টা করেও পারেননি তাঁরা। ২০২৪ সালের অগস্টে হায়দরাবাদের ইউনিভার্সাল সৃষ্টি ফার্টিলিটি সেন্টারের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক নম্রতা তাঁদের সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আশ্বাস দেন, তাঁদের শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মাধ্যমে সন্তান উৎপাদন করে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সন্তানের জন্ম দেবেন ‘ধাত্রী’ মা। চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ এর জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। চলতি বছরের জুন মাসে সন্তানকে কাছে পান ওই দম্পতি। এর পরেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর জন্য অনুরোধ করেন তাঁরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়নি। শেষে ওই দম্পতি দিল্লির একটি গবেষণাগারে ডিএনএ পরীক্ষা করান। তার পরেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ২৬ জুলাই তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার পরেই রবিবার গ্রেফতার হন আট জন।

হায়দরাবাদের ডিসিপি রশ্মি পেরুমল জানিয়েছেন, জেরায় নম্রতা স্বীকার করেছেন যে, সারোগেসির মাধ্যমে শিশুর জন্ম হয়নি। গরিব গর্ভবতী মহিলাদের টাকার লোভ দেখিয়ে শিশু কিনে এনে সন্তানহীন দম্পতির কাছে বিক্রি করতেন তাঁরা। জেরায় নম্রতা আরও দাবি করেছেন, অভিযোগকারী দম্পতিকে যে শিশু দেওয়া হয়েছিল, তার জন্মদাতা বাবা-মা অসমের বাসিন্দা। হায়দরাবাদে কাজ করেন। ওই দম্পতিকে ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। মহিলাকে প্রসবের জন্য বিশাখাপত্তনমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শিশুর বয়স দু’দিন হলে তাকে অভিযোগকারী দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁদের জানানো হয়, ওই শিশু তাঁদের সন্তান। পুলিশ জানিয়েছে, মাঝের এই কয়েক মাসে দম্পতির থেকে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও দু’বার নম্রতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল— ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে। ২০১৬ সালে পাঁচ বছরের জন্য নম্রতার ডাক্তারির লাইসেন্স বাতিল করা হয়। আমেরিকার এক দম্পতি অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাঁদের যে শিশু দিয়েছিল ক্লিনিক, তার সঙ্গে তাঁদের ডিএনএর মিল নেই। সারোগেসির মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়েছিল। ২০২০ সালে নম্রতাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ শিশু পাচারের জন্য। এ বার ফের তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর হিসেবপত্র সামলাতেন তাঁর আইনজীবী-পুত্র পি জয়্ন্ত কৃষ্ণ। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৫ বছরের জয়ন্তের বিরুদ্ধে দম্পতিদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নম্রতার ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ভিন্‌রাজ্যে শুক্রাণু, ডিম্বাণু বেআইনি ভাবে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। গুজরাত, মধ্যপ্রদেশেও তা পাচার করত ক্লিনিকটি। ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনম, হায়দরাবাদ, গুণ্টুর-সহ একাধিক জায়গায় অন্তত ১০টি মামলা রুজু রয়েছে।

Surrogacy arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy