Advertisement
২৬ মার্চ ২০২৩
CPM

জোটে জট ছাড়ানোর চেষ্টা, ফিরেই যাচ্ছেন মানিক

কংগ্রেসের জন্য ত্রিপুরায় ১৩টি আসন ছেড়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু শনিবার কংগ্রেস ত্রিপুরার ১৭টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে।

CPM leader Manik Sarkar along with Sitaram Yechury and Surjya Kanta Mishra in Central Committee\'s meeting.

কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সীতারাম ইয়েচুরি ও মানিক সরকার।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:৩৮
Share: Save:

একে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে দেরিতে। তার উপরে আবার দাবি, পাল্টা দাবির জটিলতা। ত্রিপুরায় কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগের জট ছাড়াতে শেষ মুহূর্তের চেষ্টা চালাচ্ছে সিপিএম। হাতে সময় বলতে গেলে ৪৮ ঘণ্টা!

Advertisement

কংগ্রেসের জন্য সে রাজ্যে ১৩টি আসন ছেড়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু শনিবার কংগ্রেস ত্রিপুরার ১৭টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। এআইসিসি-র তরফে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বড়জলা, মজলিশপুর, বাধারঘাট ও রাধাকিশোরপুর কেন্দ্রে প্রার্থীদের নাম রয়েছে। এই চার আসনের মধ্যে প্রথম দু’টিতে সিপিএমের প্রার্থী আছে। আর পরের দু’টি বরাদ্দ দুই বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপির-র জন্য। কংগ্রেসের এই পদক্ষেপে যে জট তৈরি হয়েছে, তা ছাড়ানোর চেষ্টায় নানা স্তরে সক্রিয় হয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার এ দিন ছিলেন কলকাতায়। রাতে ঠিক হয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ, রবিবারই ফিরে যাবেন মানিকবাবু। আগরতলায় জরুরি ভিত্তিতে সিপিএমের রাজ্য কমিটি এবং বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবার। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও এআইসিসি-র নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে সূত্রের খবর।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের সূচনায় এ দিন ইয়েচুরি বলেছেন, দেশে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় এ বারের বিধানসভা ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপিকে হারাতে তাই সর্বাত্মক লড়াইয়ে নেমেছে দল। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিজেপির ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসনের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে একজোট করার ডাক দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছে, তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হচ্ছে। সূত্রের খবর, ত্রিপুরা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তপন চক্রবর্তী (যিনি এ বার আর প্রার্থী হননি) সে রাজ্যের পরিস্থিতি রিপোর্ট করেছেন। কংগ্রেসের বাড়তি দাবির কথা তিনি বৈঠকে জানিয়েছেন। জনজাতি এলাকায় প্রভাবের কথা মাথায় রেখে তিপ্রা মথা-কে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সমঝোতায় শামিল করার চেষ্টার কথাও এসেছে। প্রথমে কংগ্রেসের বিরোধী অবস্থান নিয়েও এখন ভোটের সময়ে তাদের হাত ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভিন্ রাজ্যের কোনও কোনও প্রতিনিধির কটাক্ষের সুরও আবার শুনতে হচ্ছে ত্রিপুরা সিপিএম নেতৃত্বকে!

সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের কথায়, ‘‘বাংলাতেও আসন সমঝোতার সময়ে এই রকম পরিস্থিতি হয়েছিল। আশা করছি, জট কাটানো যাবে। দু’পক্ষই (বাম ও কংগ্রেস) বুঝতে পেরেছে পরস্পরের সহায়তা দরকার। এটাই সমঝোতাকে ধরে রাখার সব চেয়ে বড় উপাদান।’’ তবে বিজেপি শেষ পর্যন্ত আইপিএফটি-কে আসন ছাড়ায় গেরোয় পড়ে মথা কী করবে, সে দিকে নজর রাখছে সিপিএম। পাশাপাশিই কথা বলা হচ্ছে বাম শরিকদের সঙ্গে।

Advertisement

বাড়তি চার আসনে প্রার্থী দেওয়া প্রসঙ্গে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহের ব্যাখ্যা, তাঁরা আগেই জানিয়েছিলেন যে, ১৩ আসনে হবে না। এখন দিল্লির দিকেই বল ঠেলে দিয়েছেন তাঁরা। তবে ঘরেও শান্তিতে নেই কংগ্রেস। প্রার্থী ঘোষণা হতেই দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মাতাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ব্লক অফিসে তালা ঝোলানো হয়েছে। ধর্মনগর বিধানসভার কংগ্রেস ভবনে ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মীরা ভাঙচুর করেছেন বলেও অভিযোগ। বিক্ষুব্ধদের দাবি, ‘সিপিএম থেকে আসা প্রার্থী’ চয়ন ভট্টাচার্যকে তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.