Advertisement
E-Paper

CPM Party Congress: বিজেপি-বিরোধিতায় কংগ্রেসের ভৃমিকা হতাশাজনক, সাঁড়াশি চাপ ইয়েচুরি-কারাটদের

ইয়েচুরি বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে সার্বিক কোনও বিরোধী ফ্রন্ট হবে বলে তাঁরা মনে করেন না।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২২ ০৫:০০
পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে বই প্রকাশ ও আলোচনা সভায় প্রকাশ কারাট

পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে বই প্রকাশ ও আলোচনা সভায় প্রকাশ কারাট —নিজস্ব চিত্র।

দলীয় নেতৃত্বের ফতোয়া অমান্য করে সিপিএমের ডাকে সাড়া দিয়ে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিলেন কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কে ভি টমাস। কংগ্রেসে এমন বিদ্রোহের দিনেই পার্টি কংগ্রেস এবং আলোচনা সভার মঞ্চ থেকে সনিয়া-রাহুল গান্ধীর দলের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়ে তাদের উপরে সাঁড়াশি চাপ তৈরি করলেন সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাট! তাঁদের মতে, জাতীয় দল হিসেবে বিজেপি-বিরোধিতায় কংগ্রেসের যে বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়ার কথা, ‘হতাশাজনক ভাবে’ তা দেখা যাচ্ছে না। যে কথা বলে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসও।

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি অবশ্য বৃহস্পতিবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে সার্বিক কোনও বিরোধী ফ্রন্ট হবে বলে তাঁরা মনে করেন না। সেই ১৯৭৭ সাল থেকে একের পর এক দৃষ্টান্ত দিয়ে তাঁর বক্তব্য, জাতীয় মোর্চা, সংযুক্ত ফ্রন্ট, এনডিএ হোক বা ইউপিএ— সব ধরনের জাতীয় জোটই তৈরি হয়েছিল নির্বাচন-উত্তর পরিস্থিতিতে। পার্টি কংগ্রেসের দ্বিতীয় দিনের বিরতিতে ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব মানুষের সমর্থন এক জায়গার আনার ডাক দিয়েছি। প্রতি বার ভোটের আগে কোনও না কোনও দল নিজেদের আকাঙ্ক্ষা থেকে নানা ধরনের ফ্রন্ট— দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ, গড়ার কথা বলে। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে, তাতে কোনও লাভ হয় না।’’

সিপিএম সূত্রের খবর, পার্টি কংগ্রেসের অন্দরে বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিই কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তার রেশ ধরে ইয়েচুরিও বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস বলে তারা কখনও বিজেপির সঙ্গে হাত মেলায়নি। কিন্তু কংগ্রেস ছেড়ে দলে দলে নেতা কেন বিজেপিতে যাচ্ছেন? আগে তো তাদের ঘর সামলাতে হবে!’’ ধর্মনিরপেক্ষতা সংক্রান্ত আলোচনা সভাও কেন কংগ্রেস নেতারা এড়িয়ে যাচ্ছেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ইয়েচুরি।

একই প্রশ্ন তুলে কান্নুরের টাউন স্কোয়ারে কংগ্রেসকে আরও কড়া আক্রমণ করেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কারাট। ধর্মনিরপেক্ষতার উপরে ওই সভায় বক্তা ছিলেন সিপিআইয়ের ডি রাজা ও কংগ্রেসের শশী তারুর। কেরল প্রদেশ কংগ্রেস এবং এআইসিসি-র পরামর্শ মেনে তারুর আসেননি। সেই প্রসঙ্গ তুলে কারাট বলেন, ‘‘তারুরের না আসা খুবই হতাশাজনক। তিনি তো ঠিকই বলেছিলেন যে, এই আলোচনার সঙ্গে কেরল রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। দলের নেতাদের এমন সভায় যেতে নিষেধ করে কংগ্রেস তার বিশ্বাসযোগ্যতা ও ভাবমূর্তির আরও ক্ষতি করল!’’

গুজরাত, রাজস্থানের মতো একাধিক রাজ্যে কংগ্রেস জনসমর্থন হারানোর ভয়ে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী নীতির মোকাবিলায় ‘নরম হিন্দুত্বে’র পথে কী ভাবে এগোচ্ছে, একাধিক উদাহরণ দিয়ে সেই অভিযোগ করে কারাটের আরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের দল বা কেরলে বাম সরকারের সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ অবশ্যই আছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার উপরে আক্রমণ সংক্রান্ত আলোচনায় সেই বিরোধকে মাঝখানে আনা হবে কেন?’’

ঠিক এই প্রশ্ন তুলেই কংগ্রেস নেতৃত্বের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কথা বলেছেন টমাস। পেশায় অধ্যাপক, প্রাক্তন ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘স্বয়ং ইয়েচুরি আমাকে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এর সঙ্গে কেরল রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। আমি ওই আলোচনায় (৯ এপ্রিল) যাব।’’ কেরল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, সিপিএমের মঞ্চে গেলে কংগ্রেস ছাড়তে হবে। টমাসের জবাব, ‘‘আমি এআইসিসি-র সদস্য। বহিষ্কার করলে এআইসিসি করতে পারে, প্রদেশের এক্তিয়ার নয় এটা।’’ আর প্রদেশ সভাপতি সুধাকরনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এখনও আশা করব, টমাস ওখানে যাবেন না। যদি সত্যিই যান, তা হলে প্রদেশ কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার জন্য এআইসিসি-র কাছে সুপারিশ পাঠাবে।’’

CPM Congress Sitaram Yechury Pinarayi Vijayan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy