Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Tripura

সরেই যাচ্ছেন মানিক, হাত ধরতে ভাগের আসন ছাড়ছে সিপিএম

আগরতলায় সোমবার প্রথমে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও পরে রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। মানিকবাবুকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে সেখানেই।

সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে মানিক সরকার ও অন্য নেতারা। আগরতলায়।

সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে মানিক সরকার ও অন্য নেতারা। আগরতলায়। নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী ও বাপী রায়চৌধুরী
কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:০১
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত পুরনো সেনাপতিকে ময়দানের বাইরে রেখেই ত্রিপুরার ভোট-যুদ্ধে লড়তে চলেছে সিপিএম! দলের পলিটব্যুরো সদস্য ও বর্তমান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার এ বার আর নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। দলের কাছে প্রাথমিক ভাবে তিনি যে নির্বাচনী রাজনীতি থেকে সরে দাড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন, আলাপ-আলোচনার পরে তা-ই মঞ্জুর হয়েছে। সিপিএম সূত্রের খবর, ধনপুর কেন্দ্রে মানিকবাবুর বদলে স্থানীয় প্রার্থী, লোকাল কমিটির সম্পাদকের নাম ঘোষণা করতে চলেছে বামফ্রন্ট।

আগরতলায় সোমবার প্রথমে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও পরে রাজ্য কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। মানিকবাবুকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে সেখানেই। পাশাপাশিই ঠিক হয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে গিয়ে বামফ্রন্টের পুরনো শরিকদের ভাগে হাত দেওয়া হবে না। সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি আগের মতোই একটি করে আসনে লড়বে। কংগ্রেসের জন্য আসন ছাড়া হবে সিপিএমের ভাগ থেকে। সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন আন্দোলনের সঙ্গী হলেও তাদের জন্য অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও আসন বরাদ্দ করেনি বামফ্রন্ট। আগরতলায় আজ, মঙ্গলবার ফ্রন্টের বৈঠকে নাম চূড়ান্ত করে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কথা।

সিপিএম সূত্রের খবর, রাজ্যের ৬০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেসের জন্য ১০টি আসন ছেড়ে দিতে রাজি আছেন মানিকবাবুরা। সেই প্রস্তাব নিয়েই শেষ পর্যায়ের আলোচনা চালানো হচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে। সব ঠিকঠাক থাকলে তারা কাল, বুধবার তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্যের দল তিপ্রা মথা-র জন্যও কিছু আসন ছেড়ে রাখার পরিকল্পনা ছিল সিপিএমের। কিন্তু মথা-র তরফে এ দিনই বি কে রাঙ্খল, জগদীশ দেববর্মারা জানিয়েছেন, কোনও সর্বভারতীয় দলই তাঁদের ‘গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডে’র দাবির বিষয়ে লিখিত আশ্বাস না দেওয়ায় তাঁরা কারও সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে চান না। আলাদা লড়ে মথা কাদের ভোট কেটে কার সুবিধা করতে পারে, শুরু হয়েছে সেই চর্চাও।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা চলছে। মথা-র জন্যও আমরা অপেক্ষা করেছি। বিজেপির অপশাসনের মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির জন্য যথাসম্ভব দরজা খোলা রেখেই আমরা এগোতে চাই।’’ সংরক্ষিত ২০টি আসন বাদেও ত্রিপুরার আরও কম-বেশি ১২টি আসনে জনজাতি প্রভাব আছে। যার মধ্যে গত বার মাত্র দু’টিতে জয়ী হয়েছিল সিপিএম।

মানিকবাবু সরে দাঁড়ানোয় এ বার নির্বাচনী ময়দানেও সামনে থাকতে হবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ও প্রাক্তন সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরীকে। দক্ষিণের অসংরক্ষিত সাব্রুম আসন থেকে প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে তাঁকে। সিপিএমের আর এক বর্ষীয়ান নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরীরও এ বার ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণে ভোট থেকে অব্যাহতি নেওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura Manik Sarkar CPM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE