প্রতীকী ছবি।
গির্জায় হিন্দুরা কেন, এই প্রশ্ন তুলে বড়দিনের সন্ধ্যায় অসমের শিলচরের একটি গির্জায় চড়াও হল এক দল যুবক। ঠেলাধাক্কা করে দর্শনার্থীদের গির্জা চত্বর থেকে বার করে দেওয়া হয়। দুর্বৃত্তরা নিজেদের ‘বজরং বাহিনীর’ বলে দাবি করলেও বজরং দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘‘এরা আমাদের সদস্য নয়।’’
ওমিক্রন সতর্কতায় এ বারের বড়দিনে শিলচরের গির্জাগুলিতে আলোকসজ্জা হয়নি। কোথাও ছিল না কোনও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। সন্ধ্যার পরে তবু দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়িয়েছেন শহরের প্রেসবিটেরিয়ান চার্চ, রোমান ক্যাথলিক চার্চ, ব্যাপটিস্ট চার্চে। তাঁদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। রাত সাড়ে সাতটায় শিলচর চার্চ রোডের একটি গির্জায় আচমকা হানা দেয় এক দল যুবক। মাথায় গেরুয়া পট্টি বাঁধা। হিন্দুরা গির্জায় কেন, প্রশ্ন তুলে এরা একেবারে ভেতরে ঢুকে পড়ে। দু-এক জন প্রতিবাদের চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, কয়েক জনকে মারধরও করা হয়। নিগৃহীতদের মধ্যে রয়েছেন শিলচর এনআইটি-র একদল পড়ুয়াও।
অনির্বাণজ্যোতি গুপ্ত নামে এক অভিভাবক সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘এরাই নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি এবং তাঁর নতুন ভারত ভাবনাকে ম্লান করছে।’’ তাঁর ছেলেকে গত কাল নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনির্বাণ। অনির্বাণের বাবা বিষ্ণুমোহন গুপ্ত ছিলেন বরাক উপত্যকায় আরএসএসের প্রথম সঙ্ঘচালক। তাঁদের শিলচরের বাড়িতে গোলওয়ালকর, দীনদয়াল উপাধ্যায়রা রাত কাটিয়েছেন। অটলবিহারী বাজপেয়ীও একবার তাঁদের বাড়িতে গিয়েছেন। সেই বিষ্ণুমোহন গুপ্তের নাতিকে হিন্দুত্ববাদীদের হাতে নিগৃহীত হতে হল বলে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে। অনির্বাণের এই পোস্টে অনেকেই মন্তব্য করেন, ঘটনার নিন্দা করেন।
পরে বজরং দলের কর্মকর্তা মিঠুন নাথ শনিবার রাতে ওই গির্জায় তাঁদের কেউ যায়নি বলে জানান। তাঁর দাবি, সেখানে যারা চড়াও হয়েছিল, তাদের সঙ্গে বজরং দলের কোনও সম্পর্ক নেই।
শিলচরে গির্জায় গোলমালের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গির্জা কর্তৃপক্ষও কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। পুলিশ সুপার রমনদীপ কৌর বলেন, ‘‘ভিডিয়ো ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরই ভিত্তিতে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy