কাছাড়েও উদ্বোধন হল প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পূর্ত, আবগারি ও মৎস্য মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। সরকারি এই অনুষ্ঠানে সাংসদ সুস্মিতা দেবও আমন্ত্রিত ছিলেন। তিনি এলেন বটে, কিন্তু দেরির জন্য সভা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে চলে যান। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর কাছাড় জেলায় এই প্রথম কোনও অনুষ্ঠানে কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃবৃন্দকে পাশাপাশি বসতে দেখবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ফাঁকা মঞ্চে সুস্মিতা দেব উপস্থিত সবাইকে জানিয়ে যান, কৃষকদের প্রচুর সমস্যা রয়েছে। তিনি সেগুলি নিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে আগে এক বার কথা বলেছেন। দিল্লি ফিরে গিয়ে ফের দেখা করবেন। সংসদেও এ নিয়ে কথা বলবেন।
সুস্মিতা-হীন সভায় মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য জানান, ৭০ বছরেও কৃষকদের সমস্যা মেটানো গেল না। এর মূলে তিনি দুর্নীতিকে দায়ী করেন। জেলা কৃষি অফিসার জাকির হোসেন চৌধুরী, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের আহ্বায়ক কনকজ্যোতি শর্মা, কৃষি বিজ্ঞানী বিবি বরুয়া, ডিস্ট্রিক্ট ডেভেলপমেন্ট কমিশনার মধুমিতা চৌধুরীকে মঞ্চে বসিয়ে পরিমল বলেন, ‘‘দুর্নীতি আর ঘুষ সংস্কৃতি এ বার বন্ধ করতে হবে। কৃষকদের স্বাবলম্বী করার কাজে সবাইকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।’’
অনুষ্ঠানে সবাইকে বিরিয়ানি খেতে দেওয়া হয়েছিল। তাকেই উদাহরণ হিসেবে ধরে তিনি কৃষি অফিসারদের কাছ থেকে জানতে চান, চাল থেকে মরিচ কোনটা স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত। কেউ উত্তর দেওয়ার রাস্তায় যাননি।
মন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, কোন এলাকায় কোন ফিল্ড অফিসার রয়েছেন— তাঁদের কৃষকরা চেনেন কি না। প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত অধিকাংশ কৃষক ‘না-না’ বলে আওয়াজ তোলেন। কৃষিবিজ্ঞানীকে চেনেন বলে কেউ বলতেই পারলেন না।
সব দেখেশুনে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য কাজের পরিবেশ তৈরির উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘‘হতাশ হবেন না। পরিবেশ তৈরি করা গেলে সব হবে। ঘুষও বন্ধ হবে। উৎপাদন বাড়বে। কৃষকরা ফসল নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন।’’
সোনাইয়ের বিজেপি বিধায়ক আমিনুল হক লস্করও পরিবর্তনের আশায় মানুষ যে সরকার বদল করেছে, সে কথা অফিসারদের স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘বরাককে কৃষিপ্রধান উপত্যকা বলা হয়, কিন্তু এখানে কোনও উৎপাদনেই আমরা স্বনির্ভর নই। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’’ সেই দায়িত্ব যে অফিসারদেরই, তাও তিনি বারবার উল্লেখ করেন। ফসল বিমা যোজনার ব্যাখ্যা করে বিভাগীয় অফিসাররা জানান, এখন থেকে প্রাকৃতিক কারণে ফসল মার খেলে কৃষককে পথে বসতে হবে না। বিমা-তহবিল থেকে তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হবে।