Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
নাগরিক বিল

সিলেক্ট কমিটির কাছে যাবে সিআরপিসি

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের নানা শর্ত বা এনআরসিতে আদি বাসিন্দা বলে একাংশকে চিহ্নিত করা মেনে নিতে পারছে না নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটি (সিভিল রাইটস প্রোটেকশন কমিটি—সিআরপিসি)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২১
Share: Save:

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের নানা শর্ত বা এনআরসিতে আদি বাসিন্দা বলে একাংশকে চিহ্নিত করা মেনে নিতে পারছে না নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটি (সিভিল রাইটস প্রোটেকশন কমিটি—সিআরপিসি)।

তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সংসদীয় জয়েন্ট সিলেক্ট কমিটির সদস্য, ৩০ জন সাংসদের সকলের সঙ্গে পৃথক ভাবে দেখা করবেন। সংশোধনীটি কী হওয়া উচিত, তার একটি খসড়াও তৈরি করা হচ্ছে। সেটি সিলেক্ট কমিটির প্রত্যেক সদস্যের হাতে তারা তুলে দেবে। অন্য দিকে, এনআরসি নিয়ে সিআরপিসি ফের আদালতের দরজায় কড়া নাড়ার কথা ভাবছে।

দু’টি বিষয়েই সংগঠনের কর্মকর্তারা প্রথমে রাজ্যের বিভিন্ন মানুষের কথা বলছেন। আজ সংস্থার মুখ্য উপদেষ্টা হাফিজ রসিদ আহমদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় সভাপতি নৃপেন্দ্রচন্দ্র সাহা বরাক সফরে এসেছেন। কথা বলেছেন শিলচরের কর্মী-সমর্থক ও সম-মনোভাবাপন্নদের সঙ্গে। রাতে বৈঠক হয় করিমগঞ্জে। আগামী কাল সকাল ১১টা থেকে শিলচর মহিলা কলেজে এই নিয়েই নাগরিক সভা ডেকেছে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কাছাড় জেলা সভাপতি। হাফিজ রসিদ এবং নৃপেন্দ্র সাহা-ই থাকবেন আলোচনার কেন্দ্রে। বিকেলে তাঁরা যাবেন হাইলাকান্দিতে। তিন জেলা মিলিয়ে পরে বরাক উপত্যকা আঞ্চলিক কমিটি তৈরি হবে।

হাফিজ রসিদের আশঙ্কা, এনআরসি-তে আদি বাসিন্দা বোঝাতে ‘ওআই’ লাগানোর পিছনে কোনও দুরভিসন্ধি কাজ করছে। এক দিকে, অসমকে পাহাড়ি রাজ্য ঘোষণার জন্য নানা তৎপরতা, অন্য দিকে, বাসিন্দাদের একাংশকে ‘আদি বাসিন্দা’ হিসেবে চিহ্নিত করা—একই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হতে পারে। তাই তাঁর প্রশ্ন, নাগরিকত্ব আইন বা অন্য কোথাও এনআরসি-তে ‘ওআই’ লেখার কথার উল্লেখ নেই। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাতেও এ কথা বলা হয়নি। বলেনি রেজিস্ট্রার জেনারেলের দফতরও। তবে কেন ‘ওআই’ তত্ত্বটিকে অহেতুক নিয়ে আসা হল?

হাফিজ রসিদ বলেন, আসলে চক্রটি ভেবেছিল, এনআরসি হলে ২৫-৩০ লক্ষ বাঙালি নথিপত্র দেখাতে পারবে না। কিন্তু এখন তারা বুঝতে পারছেন, সংখ্যাটি ২ লক্ষও ছাড়াবে না। সে কারণেই চক্রটি নানা জটিলতার সৃষ্টি করছে। এরা শুধু বাঙালির নয়, অসমেরও শত্রু বলে মনে করেন আইনজীবী রসিদ। তাঁর বক্তব্য, আদি বাসিন্দা বা ভূমিপুত্রের সংজ্ঞাই এখনও নির্ধারণ হয়নি। গত বিধানসভাতেও এ নিয়ে কম হইচই হয়নি। কিন্তু সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় এনআরসি-র কাজে নিয়োজিত অফিসার-কর্মীরাই কি স্থির করে নেবেন, কারা ভূমিপত্র!

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে তিনি সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। হাফিজ রসিদ আহমদ চৌধুরী ও নৃপেন্দ্রচন্দ্র সাহা বলেন, আসলে বিজেপি ভোটের আগে কথা দিয়েছিল। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনতে হয় বলে ওঁরা এনেছেন। নইলে সাত বছর থাকতে হবে, বাংলাদেশে নির্যাতনের প্রমাণ দিতে হবে, ওই সব কথা কেন! তাঁদের দাবি, সাতবছর নয়, অন্যান্য শর্ত পূরণ করলে নাগরিকত্বের আবেদন জানানোর ছ’মাস পরই বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান থেকে আসা নির্যাতিতদের নাগরিকত্ব মঞ্জুর করতে হবে। নির্যাতনের প্রমাণ খোঁজাকে অযৌক্তিক বলেই মনে করছেন তাঁরা। পাশাপাশি, ধর্মীয় বিভাজনের বদলে মানবিক দৃষ্টিতে বিষয়টিকে দেখার কথা বলেন সিআরপিসি-র মুখ্য উপদেষ্টা। তাঁর কথায়, যুক্তিবাদী মুসলমানদেরও কম নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে না ওপারে!

সিআরসিপি-র প্রধান সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ-সহ সৌমিত্র নাথ, স্বদেশ বিশ্বাস, সুবীর করও সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Citizenship bill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE