Advertisement
E-Paper

‘চোরাশিকার’ রুখে দলের ত্রাতা ডিকে

কর্নাটকে আস্থাভোট-পর্ব মিটে যাওয়ার আবহে সকলের নজর এখন তাঁর দিকেই। বস্তুত তাঁর কৌশলের কাছেই হার মানতে হয়েছে অমিত শাহ, ইয়েদুরাপ্পা-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্বকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ০৩:৪২
কর্নাটক বিধানসভায় ডিকে শিবকুমার। ছবি: পিটিআই।

কর্নাটক বিধানসভায় ডিকে শিবকুমার। ছবি: পিটিআই।

সরকার গঠন নিয়ে কর্নাটকে তিন দিনের জমজমাট নাটকের মধ্যেই নিঃশব্দে নায়ক হয়ে উঠেছেন তিনি। পরপর দু’বার মুখরক্ষা করে আক্ষরিক অর্থেই রাহুল গাঁধীর দলের কাছে তিনি এখন বিপত্তারণ!

তিনি ডড্ডলাহাল্লি কেম্পেগৌড়া শিবকুমার। সংক্ষেপে ডিকে। কর্নাটকের কনকপুর কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক।

কর্নাটকে আস্থাভোট-পর্ব মিটে যাওয়ার আবহে সকলের নজর এখন তাঁর দিকেই। বস্তুত তাঁর কৌশলের কাছেই হার মানতে হয়েছে অমিত শাহ, ইয়েদুরাপ্পা-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্বকে। তাঁর জন্যই কুমারস্বামীর সামনে খুলে গেছে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দরজা।

মধ্য পঞ্চাশের এই ব্যবসায়ীকে নিয়ে গত ক’দিন ধরেই আলোচনা চলছে। এমনকী তাঁকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া রসিকতা ভরা আদালতকক্ষে শোনানোর লোভ ছাড়তে পারেননি খোদ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ কে সিক্রি। শুনানির উত্তেজনার মধ্যেই বিচারপতি সিক্রি বলেছিলেন, ‘‘ইগলটন রিসর্টের মালিককে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে রসিকতা— তিনি নাকি সংখ্যাগরিষ্ঠতা দাবি করেছেন। কারণ তাঁর কাছেই ১১৭ জন বিধায়ক!’’

বেঙ্গালুরুর অদূরে বিড়ারি এলাকায় ইগলটন রিসর্টের মালিক ডিকে অবশ্য তেমন দাবি করেননি। বরং কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে বিধায়কদের পরম যত্নে ‘চোরাশিকারি’দের হাত থেকে আড়াল করে রেখেছিলেন।

অবশ্য এটা তাঁর কাছে নতুন নয়। গত অগস্টেও গুজরাত রাজ্যসভা ভোটের আগে কংগ্রেস বিধায়কদের নিজের ‘আশ্রয়ে’ রেখে আহমেদ পটেলের জয় সুনিশ্চিত করে বিজেপির মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিলেন ডিকে। তখন থেকেই নজরে তিনি। এ বারও তাই বিজেপির সরকার গড়ার চেষ্টা ভেস্তে দিতে তাঁর উপরে ভরসা করেছিলেন কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। জেডি(এস) নেতৃত্বও ভরসা করেছিলেন ডিকে-র উপরেই। দু’দলের বিধায়কদের নিজের ইগলটন রিসর্টে নিয়ে গিয়ে তোলেন ডিকে।

বিজেপিও বসে থাকেনি। নানা ভাবে তাঁকে দলে টানার চেষ্টা চলে। তাতে কাজ না হওয়ায় অন্য পথ নেওয়া হয়। ডিকে-র বাড়িতে চলে আয়কর হানা। তাতেও লাভ হয়নি। তার মধ্যেই ইয়েদুরাপ্পা শপথ নিয়ে ইগলটন রিসর্টের উপর থেকে পুলিশি নিরাপত্তা তুলে নেন। এর পরেই শুরু হয়ে যায় টাকার থলি নিয়ে বিধায়ক কেনাবেচার চেষ্টা। পরিস্থিতি বুঝে ডিকে জানিয়ে দেন, বিধায়কদের কোচিতে সরিয়ে দেওয়া হবে। তার পরেই শুরু নাটকের।

বিধায়কদের প্রথমে চার্টার্ড বিমানে কোচি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান ডিকে। কিন্তু ডিজিসিএ-র আপত্তিতে উড়ানের অনুমতি না মেলায় সকলকে বাসে তোলা হয়। আর তার পরেই ডিকে-র ‘মাস্টার স্ট্রোক’— অন্তত তেমনই বলছেন কংগ্রেস নেতারা। মাঝপথে বাস বদলে বিধায়কদের কোচির বদলে তিনি নিয়ে যান হায়দরাবাদে! এবং সেখানে আগে থেকে ঠিক করে রাখা হোটেলও বদলে ফেলেন। এই খবর যতক্ষণে জানাজানি হয়েছে, ততক্ষণে ঘর অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছেন কংগ্রেস-জেডি(এস) নেতৃত্ব। তবে অনেকেই বলছেন, সুপ্রিম কোর্ট আস্থাভোটের দিন কমিয়ে দেওয়ায় ডিকে বাড়তি সুবিধা পেয়ে যান।

দেবগৌড়া-কুমারস্বামী পরিবারের সঙ্গে ডিকে-র দীর্ঘদিনের শত্রুতা। তবু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কথা শুনেই লড়ে গিয়েছেন তিনি। পুরস্কার মিলবে কি? কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রদেশ সভাপতি জি পরমেশ্বরকে উপ মুখ্যমন্ত্রী করা হলে ডিকে পরবর্তী প্রদেশ সভাপতি হতে পারেন। তখন তাঁর হাতেই থাকবে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের গুরুদায়িত্ব।

ডিকে তখনও সাফল্য পাবেন, আশাবাদী কংগ্রেস।

Karnataka Assembly Election 2018 D K Shivakumar Congress JD(S) Gujarat কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন ২০১৮
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy