ফাইল ছবি
ইতিহাসবিদেরা তো বটেই, বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে ইতিহাস-বিকৃতির অভিযোগ করে আসছেন সাধারণ শিক্ষা শিবির, আমজনতার সচেতন অংশও। তথ্যনিষ্ঠ ইতিহাসকে দুর্বল করা যে এমনতর বিকৃতির অন্যতম উদ্দেশ্য, সেই বিষয়ে তাঁরা একমত। এই পরিস্থিতিতে ইতিহাসের বিকৃতি ঠেকাতে ‘আর্কাইভ’ (মহাফেজখানা বা তথ্যভান্ডার)-এর গুরুত্বকেই আরও বেশি করে তুলে ধরছেন পেশাদার ইতিহাসবিদেরা।
এই বিষয়ে সম্প্রতি এক কর্মশালার আয়োজন করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে শুধু আধুনিক পর্বের ইতিহাস নয়, প্রাচীন ও মধ্য যুগের ইতিহাসের ক্ষেত্রেও আর্কাইভ গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। ইতিহাসবিদ কুণাল চক্রবর্তী মনে করিয়ে দিয়েছেন, প্রাচীন ইতিহাসের ক্ষেত্রে পুরাণের কানাগলি থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। তবে এ কথাও ঠিক যে, পুরাণ ইতিহাসের উপাদান। সেই উপাদান ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া প্রয়োজন।
তথ্যসূত্রের ভাষাও গবেষকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সুলতানি বা মোগল যুগের ইতিহাস রচনায় ফার্সি বা আরবি ভাষার সূত্র পাঠের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা দরকার বলে মন্তব্য করেন ইতিহাসবিদ সৈয়দ নাদিম আলি রেজাভি। শুধু সতর্কতাই নয়, এই কর্মশালায় উঠে এসেছে তথ্যভান্ডারের নানা রূপের কথাও। প্রাতিষ্ঠানিক আর্কাইভ বা তথ্যভান্ডারের বাইরেও আর্কাইভ থাকতে পারে। ইতিহাস রচনায় সেই রাষ্ট্রীয় বা প্রাতিষ্ঠানিক তথ্যভাণ্ডারের বাইরে থাকা আর্কাইভ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।
ইতিহাসবিদ শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন, প্রান্তিক মানুষের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় তথ্যভান্ডারের সীমাবদ্ধতা আছে। সে-ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় তথ্যভান্ডারের বাইরে থেকেই তথ্য নেওয়া উচিত। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনই একটি তথ্যভান্ডার তৈরি হয়েছে।
যাদবপুরের বিভিন্ন শিক্ষক এবং ইতিহাস সংসদের সভাপতি অধ্যাপক অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সহ-সভাপতি সুস্নাত দাশ, সম্পাদক অধ্যাপক আশিসকুমার দাস প্রমুখ সাম্প্রতিক ওই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy