চার মিনিটের ভিডিও ক্লিপ। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দূরদর্শনের তরুণী সঞ্চালিকা একে একে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন নিমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে। সেই সময় তিনি মুখোমুখি হন গোয়ার রাজ্যপাল মৃদুলা সিংহের। পরিচয় দিতে গিয়ে বলে বসলেন, ‘ভারতের রাজ্যপাল’!
এই পরিচয়-পর্ব নিয়েই আপাতত তোলপাড় ফেসবুক-টুইটার। আবারও প্রশ্নের মুখে প্রসার ভারতী! কিছু দিন আগেই দূরদর্শনের সংবাদ সম্প্রচারের সময় চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে ‘ইলেভেন চিনফিং’ বলে বসেন সঞ্চালক। ইংরেজিতে লেখা ‘শি’ শব্দটিকে তিনি রোমান ১১ ভেবেছিলেন। পরে সাসপেন্ড করা হয় ওই সঞ্চালককে। এর পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের খবরে পর্দায় দেখানো হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে। লাগাতার একের পর এক বিভ্রাটে জেরবার প্রসার ভারতী। এক উচ্চপদস্থ অফিসারকে তদন্তের দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। আর এক কর্তা বলেন, “গত ২০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিল দূরদর্শনে। তারই একটি অংশ কেউ ইউটিউবে দিয়েছিল। সেটাই নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে।” তাঁর কথায়, “ওই তরুণী দূরদর্শনের অস্থায়ী কর্মী। সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে, এমন অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করার মতো কোনও অভিজ্ঞতাই নেই তাঁর।”
তবে কেন এমন এক জন অনভিজ্ঞ কর্মীকে সঞ্চালনার দায়িত্ব দেওয়া হল?
জবাবটা দিলেন খোদ প্রসার ভারতীর সিইও জহর সরকার। জানালেন, তাঁদের সংস্থায় ১৮০০০ পদ শূন্য। গত ২০ বছরে একবারও কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই কাজ চালাতে অস্থায়ী কর্মী নিতে হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই ওই কর্মীদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণ নেই। আর তাই একের পর এক ভ্রান্তি ঘটছে।
অস্থায়ী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে নেওয়ার কথাও উঠেছিল বহুবার। কিন্তু তাতেও সমস্যা। জহর সরকার বলেন, “আগে যখনই পরীক্ষা নেওয়ার কথা উঠেছিল, অস্থায়ী কর্মীরা হইচই শুরু করে দিয়েছিলেন। এ বার এটা করতেই হবে। না হলে এ ধরনের মারাত্মক ভুল ঘটেই চলবে।”
যাতে কোনও ভুল খবর সম্প্রচার হয়ে না যায়, তা খতিয়ে দেখার জন্যও আলাদা পদ রয়েছে। কিন্তু সেই ১৯১টি পদের মধ্যে ১৮০টি পদ-ই খালি পড়ে রয়েছে। “ভুল ধরবেটা কে?” আক্ষেপ জহরবাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy