ভাল ফুটবলার ছিলেন। নিজের খরচে স্থানীয় ছেলেদের ফুটবল শেখাতেন। রবিবার সেই ওয়াসিম সারওয়ার বাটের দেহ বান্দিপোরার ডাচিগাম গ্রামে পৌঁছতে ভিড় জমালেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুক্রবার থেকে কুলগামে শুরু হওয়া জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে আহত হন রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের জওয়ান ওয়াসিম। গত কাল তাঁর মৃত্যুর খবর জানায় সেনা। তার পর থেকে গোটা ডাচিগামেই নেমেছে শোকের ছায়া। বছর একত্রিশের ওয়াসিমের স্ত্রী ছ’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্বামী যে নেই, তা এখনও যেন বিশ্বাস করে উঠতে পারেননি তিনি। কথা বলতে পারছেন না ওয়াসিমের বাবা ওয়াসিম সারওয়ার বাট। প্রায় একই অবস্থা ওয়াসিমের মার। ওয়াসিমেরা তিন ভাই, তিন বোন। বোনেরা বিবাহিত।
ওয়াসিমের ভাই জ়ুবেরের কথায়, ‘‘দাদা শেষ বার ইদে বাড়ি এসেছিল। সন্তান হলে তাকে আর বৌদিকে নিয়ে থাকবে বলে নতুন একটা বাড়ি তৈরি শুরু করেছিল। সে স্বপ্ন আর পূরণ হল না।’’ জ়ুবের জানান, মেডিক্যাল সায়েন্সে স্নাতক ওয়াসিম তাঁদের ঠাকুর্দার পথ অনুসরণ করে ২০১৪ সালে সেনায় যোগ দেন। ২০২১ সালে বিয়ে করেছিলেন। শুক্রবার প্রথমে তাঁর আহত হওয়ার খবর পান জ়ুবের। তার পরে আসে মৃত্যুর খবর।
ভাল ফুটবলার আর বিনীত ও সৎ যুবক হিসেবে গোটা ডাচিগামে জনপ্রিয় ছিলেন ওয়াসিম। কিন্তু ফলে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে খাওয়া দাওয়া করতে পারেননি প্রতিবেশীরাও। প্রতিবেশী রফিক আহমেদের বক্তব্য, ‘‘ওর ইউনিটের অফিসার বললেন, কেবল এক জন ভাল সেনা নয়, ভাল ফুটবলারকেও হারালেন তাঁরা। ও ইউনিটের হয়ে ফুটবল খেলত।’’
তার আগে স্থানীয় ইকরা ফুটবল ক্লাবের হয়ে খেলতেন ওয়াসিম। প্রাণবন্ত যুবক হিসেবে তাঁকে মনে রেখেছেন সতীর্থেরা। বাল্যবন্ধু আজ়হার আলি লোনের কথায়, ‘‘স্থানীয় ছেলেদের ফুটবল শেখাতে পকেট থেকে পয়সা খরচ করত ও।’’ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বলা হয়েছে, স্থানীয় এলাকায় ফুটবলের প্রসারে ওয়াসিমের অনেক অবদান আছে।
ওয়াসিমের শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন সেনার কিলো ফোর্সের জিওসি মেজর জেনারেল মোহিত শেঠ, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিআইজি-সহ বাহিনী ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)