Advertisement
E-Paper

অনলাইনে ছাড়পত্র দিতে উদ্যোগী দিল্লি

ইউপিএ জমানার শেষ দিকে পরিবেশমন্ত্রীর পদ হারান জয়ন্তী নটরাজন। তাঁর বিরুদ্ধে শিল্পমহলের অভিযোগ ছিল, কার্যত পরিবেশ আন্দোলনকারীর মতো আচরণ করছেন জয়ন্তী। মন্ত্রকের ছাড়পত্রের অভাবে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প আটকে গিয়েছে। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে অর্থনীতির রথের গতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৪ ০৩:৫৪

ইউপিএ জমানার শেষ দিকে পরিবেশমন্ত্রীর পদ হারান জয়ন্তী নটরাজন। তাঁর বিরুদ্ধে শিল্পমহলের অভিযোগ ছিল, কার্যত পরিবেশ আন্দোলনকারীর মতো আচরণ করছেন জয়ন্তী। মন্ত্রকের ছাড়পত্রের অভাবে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প আটকে গিয়েছে। স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে অর্থনীতির রথের গতি।

এ বার সেই পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। লক্ষ্য, এ ক্ষেত্রে গতি ও স্বচ্ছতা নিয়ে আসা। কোনও শিল্প সংস্থা একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইলে এ বার থেকে অনলাইনেই আবেদন করবে। অনলাইনেই ছাড়পত্র মিলবে। পরিবেশ মন্ত্রকের আধিকারিকদের দরজায় দরজায় ঘুরতে হবে না। মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের উপরও কিছু নির্ভর করবে না। নতুন পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস থেকেই অনলাইন পরিষেবা চালু হয়ে যাচ্ছে। জুন মাসের বাকি ২৫ দিন কাগজেও আবেদন করা যাবে। কিন্তু ১ জুলাই থেকে শুধুমাত্র অনলাইনেই আবেদন নেওয়া হবে।”

সরকারি সূত্রে খবর, পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের অভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের। জয়ন্তী মন্ত্রক ছাড়ার সময়েই প্রায় ৪০টি বিদ্যুৎ প্রকল্প আটকে ছিল। অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের অভাবে শিল্পোন্নয়ন আটকে রয়েছে। বন্ধ রয়েছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের অনেক প্রকল্পও। এগুলিকেই অগ্রাধিকার দিতে চায় মোদী সরকার।

পরিবেশ রক্ষা না আর্থিক বৃদ্ধি----ইউপিএ জমানার এই বিতর্কে ইতি টানতে চাইছে মোদী সরকার। মোদীর নীতি হল, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর্থিক বৃদ্ধি ও পরিবেশ সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য রেখেই চলতে হবে।

পরিবেশের ছাড়পত্রের অভাবে লগ্নি আটকে থাকায় বার বার মনমোহন সিংহ ও তাঁর সরকারকে লগ্নিকারীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। বাদ যাননি রাহুল গাঁধীও। গত ডিসেম্বরে তিনি বণিকসভা ফিকি-র বার্ষিক সভায় গিয়ে এই সমস্যার কথা স্বীকারও করে নেন। বস্তুত তার পরেই জয়ন্তীকে পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ বেলার এই চেষ্টায় কোনও লাভ হয়নি।

একই ভাবে অরণ্য সংক্রান্ত ছাড়পত্র আদায়ের ক্ষেত্রেও আগামী মাস থেকে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হয়ে যাচ্ছে। ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করলে নিয়মিত অনলাইনেই জানা যাবে, ফাইল কতটুকু এগিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সঙ্গেও আলোচনার বিষয় থাকে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে দু’মাসের মধ্যে পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে মোদী সরকার।

পরিবেশের ছাড়পত্রের অভাবে পশ্চিমবঙ্গের নয়াচরের তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পটিও আটকে রয়েছে। জয়ন্তী নটরাজনের আমলে কেন্দ্রের কাছে রাজ্য সরকারের তরফে বার বার এ বিষয়ে দরবার করা হয়েছিল। জয়ন্তীর পরে বীরাপ্পা মইলিকে পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তখনও নয়াচরের জট খোলেনি। এ বার নতুন জমানায়, নতুন ব্যবস্থায় নয়াচর ছাড়পত্র পাবে কি না, সেটাই এখন দেখার।

মোদীর পরিবেশ নীতি

• পরিবেশ সংরক্ষণ ও আর্থিক বৃদ্ধির মধ্যে ভারসাম্য

• নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, স্বচ্ছতার সঙ্গে ছাড়পত্র নিয়ে সিদ্ধান্ত

• উন্নয়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ মন্ত্রক বাধা—এই মনোভাব দূর করা

online submission environment clearance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy