অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে বন্দুকবাজের হানার পরে বা়ড়তি সতর্কতা দিল্লিতেও। রাজধানীতে ইজ়রায়েলি এবং ইহুদি প্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেছে দিল্লি পুলিশ। বর্তমানে ইহুদিদের সপ্তাহব্যাপী হনুক্কাহ্ উৎসব চলছে। জানা যাচ্ছে, এই উৎসব চলাকালীন হামলার সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েছে দিল্লি পুলিশ। তার পরেই রাজধানী দিল্লিতে ইজ়রায়েলি এবং ইহুদি প্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
১৪ ডিসেম্বর থেকে হনুক্কাহ্ উৎসব শুরু হয়েছে। চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই উৎসবের প্রথম দিনেই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের উপর গুলি চলে। গত রবিবার সিডনির ইহুদি গোষ্ঠীর হনুক্কাহ্ উৎসবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন সাজিদ আক্রম। সঙ্গে ছিলেন তাঁর পুত্র নবিদ। এলোপাথাড়ি গুলি চালান তাঁরা। মাত্র ১০ মিনিটের সেই হামলায় ১৫ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সাজিদের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর পুত্র। আততায়ী সাজিদ ভারতীয় নাগরিক। যদিও তাঁর পুত্র নবিদ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পেয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে।
বন্ডাই সমুদ্রসৈকতে ওই হামলার পরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ইহুদি গোষ্ঠীর উপর হামলার আশঙ্কা করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থা। সূত্রের খবর, বিভিন্ন শিয়া বিদ্রোহী গোষ্ঠী, ইসলামিক স্টেট, আল কায়েদা বা তাদের কোনও আঞ্চলিক শাখা বিভিন্ন দেশে ইজ়রায়েলি এবং ইহুদিদের উপর হামলা চালাতে পারে। আধিকারিক সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, গোপন সূত্রে খবর এসেছে এই হামলার সম্ভাবনার তালিকায় রয়েছে ভারতও। সেই মতো কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সতর্ক করে দিয়েছে দিল্লি পুলিশকে।
আরও পড়ুন:
দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল ইতিমধ্যে তাদের ১৫টি জেলা ইউনিটকে সতর্ক করে দিয়েছে। দিল্লি মেট্রো এবং রেল পুলিশকেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। সংবেদনশীল প্রতিটি এলাকায় কী নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, তা পর্যালোচনা করে দেখতে বলা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ইজ়রায়েলি দূতবাস এবং কূটনৈতিক দফতর, ইহুদিদের প্রার্থনাস্থল, কমিউনিটি সেন্টারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ইজ়রায়েলি পর্যটকেরা যে সব জায়গায় বেশি ভ্রমণ করেন, সেই এলাকাগুলিতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
ওই আধিকারিক আরও জানান, দিল্লি পুলিশের টহলদারি দলগুলিকে বাড়তি সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে। বিশেষ করে যে এলাকাগুলিতে বেশি জনসমাগম হয়, যেখানে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালিত হয় এবং অন্য সংবেদনশীল এলাকাগুলির আশপাশে নজরদারি বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। কোথাও যাতে কোনও খামতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত নিরাপত্তা সংক্রান্ত পর্যালোচনা বৈঠকও চলছে বলে জানান দিল্লি পুলিশের ওই আধিকারিক। জানা যাচ্ছে, দিল্লির পাশাপাশি মুম্বই, গোয়া-সহ দেশের অন্য যে শহরগুলিতে ইজ়রায়েলি পর্যটকের সংখ্যা বেশি, সেখানেও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।