ছবি: পিটিআই।
বিকেলে সংসদ থেকে বেরোচ্ছেন কংগ্রেসের এক সাংসদ। বললেন, ‘‘আমি একটা ব্রেকিং নিউজ পেয়েছি।’’ কী সেটা? একগাল হেসে জবাব দিলেন, ‘‘পাকিস্তান এ বারে দিল্লি থেকে বিহারের পথে রওনা হয়েছে।’’
নেতাটি বোঝাতে চাইলেন, দিল্লির ভোট শেষ। বিজেপির অন্যতম সেরা অস্ত্র ‘পাকিস্তান’ এ বারে ব্যবহার হবে সামনে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে। যদিও যেতে যেতে নেতাটি জানিয়ে গেলেন, ‘‘আগামিকাল আমার টিকি পাবেন না।’’ এর অর্থ, দিল্লির ভোটের ফল বেরোলে কংগ্রেসের ভরাডুবির ছবিটা ফের ভেসে উঠবে। ফলে এখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কাল মুখ লুকোবেন। কিন্তু বিজেপির কী হবে? সব বুথ-ফেরত সমীক্ষাই অনায়াস জয় দেখাচ্ছে অরবিন্দ কেজরীবালের। তা হলে এত দিন ধরে শাহিন বাগকে সামনে রেখে বিজেপি মেরুকরণের যে প্রবল চেষ্টা চালাল, ‘নীরব হিন্দু’রা ভোটে জবাব দেবে বলে প্রচার করল, তার কী পরিণতি? দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি দাবি করলেন, ‘‘দিল্লিতে সরকার গড়ছি। ৪৮ আসন পাব।’’ বিজেপির অন্য নেতারাও একই দাবি করছেন। কেজরীবালের দলের নেতারা বিজেপির দাবির হিসেব মেলাতে পারছেন না। আর বিজেপির নেতারাও বোঝার চেষ্টা করছেন শীর্ষ নেতৃত্বের মন। কিন্তু সারাদিনে দেখা নেই অমিত শাহের। দিল্লিতে বিজেপির প্রচারে যিনি প্রধান কান্ডারি। সংসদ চললে প্রতি মঙ্গলবার সকালে হয় বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক। আগামিকালের সেই বৈঠকও বাতিল করার কথা ভাবা হচ্ছে।
বিজেপির এক শীর্ষ নেতা মানলেন, কালকের ফলের পর প্রশ্ন উঠবে, মেরুকরণ ধোপে টিকবে কি না? বুথ-ফেরত সমীক্ষা বলছে, শাহিন বাগ, রামমন্দির, ৩৭০ অনুচ্ছেদ, নাগরিকত্ব আইন— কোনওটিই দিল্লিবাসীকে দাগ কাটতে পারেনি।’’ তা হলে কী মেরুকরণের পথে না হাঁটাই ঠিক ছিল? নেতাটির যুক্তি, ‘‘একেবারেই না। আগামিকাল ফলের জন্য অপেক্ষা করুন। এই মেরুকরণ না হলে বিজেপি নিজেদের মূল ভোটব্যাঙ্ককেও বুথ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারত না।’’
আরও পড়ুন: মোদীর মন্তব্যই অস্ত্র চিদম্বরমের
বিজেপির এই গোষ্ঠীর মতে, ভোটের দুই সপ্তাহ আগেও বিজেপি দূর-দূরান্তে লড়াইয়ে ছিল না। আপের জয় গোড়া থেকেই নিশ্চিত ছিল। কিন্তু অমিত শাহই প্রচারের মোড় ঘুরিয়ে দেন। গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির শোচনীয় হারের অন্যতম কারণ ছিল, দলের কর্মীরাই কাজ করেননি। মেরুকরণের হাওয়া তুলে বিজেপির মূল ভোটব্যাঙ্ককে চাঙ্গা করা গিয়েছে। ফলে এটাই বহাল থাকবে। তবে দল মানছে, বিজেপির সমর্থক নয়, এমন হিন্দুরা অতিরিক্ত মেরুকরণে বিরক্ত। যুব সম্প্রদায়ও আকৃষ্ট হচ্ছে না। ফলে দলকে নতুন করে ভাবতে হবে। সে কারণেই কী আরএসএসের সুরেশ ভাইয়াজি জোশী বলেছেন, বিজেপির বিরোধিতা করা মানে হিন্দুদের বিরোধিতা নয়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy