Advertisement
E-Paper

আমাদের উপরে চাপ তৈরি হচ্ছে: বোবডে

আজ দিল্লি হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের তরফে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মা, অভয় বর্মা ও অন্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার আর্জি জানানো হয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০২:৪০
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। ফাইল চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। ফাইল চিত্র।

আদালত কখনও দিল্লি হিংসার মতো ঘটনা রুখতে পারেনি বলে মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে। এই ধরনের ঘটনা রোখা নিয়ে আদালতকে দায়ী করলে চাপ তৈরি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। বুধবার পরবর্তী শুনানি।

আজ দিল্লি হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের তরফে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মা, অভয় বর্মা ও অন্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার আর্জি জানানো হয়। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি চলছে। সেখানে দিল্লি পুলিশের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এফআইআর করার অনুকূল নয়। আর্জির জবাব দিতে কেন্দ্রকে চার সপ্তাহ সময়ও দিয়েছে হাইকোর্ট। ১৩ এপ্রিল ফের ওই মামলার শুনানি হবে।

আজ শীর্ষ আদালতে ক্ষতিগ্রস্তদের আইনজীবী কলিন গনজালভেস বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করেন। তিনি জানান, প্রভাবশালীদের কোনও সুবিধে না দিয়ে যাতে আইন মেনে কাজ হয় তা নিশ্চিত করার জন্যই এ ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা চলছে। সেখানেই শুনানি হতে পারে। গনজালভেস বলেন, ‘‘হাইকোর্ট এই মামলার শুনানি ছ’সপ্তাহ পিছিয়ে দিয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে প্রতি দিন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে সেখানে শীর্ষ আদালতে শুনানি হতে পারে না কেন?

এর পরেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরাও চাই না কারও মৃত্যু হোক। কিন্তু আমরা সংবাদপত্র পড়ছি। জানি কী ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে। যেন এই পরিস্থিতির জন্য আদালতই দায়ী। এই ধরনের মন্তব্যের জন্য আমাদের উপরে চাপ তৈরি হচ্ছে। এই চাপ নিতে আমরা প্রস্তুত নই।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরাও শান্তি চাই। কিন্তু ক্ষমতার যে সীমাবদ্ধতা আছে, তা আপনারা জানেন।’’ বিকেলে এক আলোচনা সভায় ফের ‘চাপ’-এর প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ব্যবসা সংক্রান্ত মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আর্জি জানিয়ে আমাকে বলা হয়েছিল, বিষয়টির সঙ্গে প্রতি দিন ৩ কোটি টাকার লেনদেন জড়িত। আদালতের উপরে চাপের শেষ নেই।’’

গনজালভেস জানান, বিচারপতিরা চাপে পড়লে আইনজীবীরা তাঁদের সাহায্য করতে পারেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের ক্ষেত্রে আদালত হস্তক্ষেপ করে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে।’’

দিল্লি হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তেরা শীর্ষ আদালতে তাঁদের আবেদনে বলেছেন, ‘‘দিল্লি হাইকোর্টের শুনানি যতটা সরল মনে হচ্ছে ততটা সরল নয়।’’ তাঁরা সুপ্রিম কোর্টকে আরও কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। বিষয়গুলি হল: ১। দিল্লির বাইরের অফিসারদের নিয়ে হিংসার তদন্তের জন্য সিট গঠন। ২। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনা মোতায়েন। ৩। হিংসায় জড়িত পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করার জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি। ৪। সব ক্ষতিগ্রস্তকে দৃষ্টান্তমূলক ক্ষতিপূরণ। ৫। আটক সব ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ। ৬। আটক সব ব্যক্তিকে যে আইনি সহায়তার সুবিধে দেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করা। ৭। সংঘর্ষ বিধ্বস্ত এলাকা, হাসপাতাল ও যে সব এলাকায় আটক রাখা হয়েছে সেখানে সবাইকে রান্না করা খাবার দেওয়া। ৮। সংঘর্ষ বিধ্বস্ত এলাকার সব সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংরক্ষণ। ৯। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ।

অন্য দিকে, দিল্লির নিম্ন আদালতে অনুরাগ ঠাকুর ও প্রবেশ বর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর চেয়ে মামলা করেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাট। আজ সেই মামলায় নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল আদালতের। কিন্তু বিচারক জানান, ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টে শুনানির পরে বিষয়টি বিবেচনা করবেন তিনি। ২৩ এপ্রিল পরবর্তী শুনানি।

Delhi Violence Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy