নয়াদিল্লির মুস্তাফাবাদ এলাকায় এক ত্রাণ শিবিরে। এএফপি
দিল্লির হিংসায় নিহতের সংখ্যা বেসরকারি সূত্রের মতে ৫৩ ছুঁয়ে ফেলল। বৃহস্পতিবার ৩২ বছর নরেশ সাইনির মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে গুলি বিঁধেছিল। পরিবারের দাবি, ব্রহ্মপুরী এলাকায় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েছিলেন নরেশ। সে সময়ে সংঘর্ষের মধ্যে তাঁর গায়ে গুলি এসে লাগে।
সরকারি হিসেবে অবশ্য এখনও মৃত্যুর সংখ্যা ৪৪। কিন্তু শুধুমাত্র গুরু তেগবাহাদুর হাসপাতালেই ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে অথবা চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার পরেই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ৫ জন, লোক নায়ক জয়প্রকাশ হাসপাতালে ৩ জন ও জগপ্রবেশ চন্দ্র হাসপাতালে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তর-পূর্ব দিল্লির জেলাশাসক শশী কৌশল জানিয়েছেন, তাঁদের হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যা এখনও ৪৪। কারণ গুরু তেগ বাহাদুর ছাড়া অন্য হাসপাতালে নিহতেরা দিল্লির সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এরই মধ্যে আজ সুপ্রিম কোর্টের তিন প্রাক্তন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, বিক্রমজিৎ সেন ও এ কে পট্টনায়ক উত্তর-পূর্ব দিল্লির হিংসাদীর্ণ এলাকার পরিস্থিতি দেখতে যান। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘‘আমরা শুধুমাত্র পরিস্থিতি দেখতে দেখতে এসেছি। কে দোষী তা দেখতে যাইনি। দেখলাম, বহু মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। গাড়ি, দামি জিনিসপত্র খোয়া গিয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ। কারণ মানুষ বাড়ি ফিরতেই ভয় পাচ্ছেন।’’
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, হিংসা সংক্রান্ত মামলায় এখনও পর্যন্ত ৬৫৪টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে ৪৭টি অভিযোগ অস্ত্র আইনের। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৮২০ জনকে গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জোসেফ লিগাল সার্ভিস অথরিটিকে আইনজীবীদের সংগঠিত করে হেল্প ডেস্ক খোলার অনুরোধ করেন। তাঁর মতে, আইনজীবীরা ত্রাণ শিবিরে থাকলে হিংসা বিধ্বস্ত পরিবারগুলি সাহস পাবে। দিল্লির আইন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও ছাত্রদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাঠানোর অনুরোধ করেন তিনি। সেক্ষেত্রে পড়ুয়ারাও সাংবিধানিক মূল্যবোধ, রাষ্ট্রের দায়িত্ব বুঝতে শিখবে। হিংসায় ঘরবাড়ি, গয়না নষ্ট হয়ে যাওয়া এক পরিবারের দুই মেয়ের বিয়ের জন্যও ১ লক্ষ টাকা করে অর্থসাহায্য করেছেন তিনি। দিল্লি সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলগুলিকেও অর্থ সাহায্য করা হবে। দিল্লিতে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবির টাকা ১৫ দিনের মধ্যে মিটিয়ে দিতে বিমা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy