সামরিক বলপ্রয়োগের প্রয়োজন পড়বে না। বরং খুব তাড়াতাড়িই এমন একটা সময় আসতে চলেছে— যখন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষজন এক সুরে বলে উঠবেন, ‘ম্যায় ভি ভারত হুঁ’। অর্থাৎ— ‘আমিও ভারত’। সম্প্রতি মরক্কোয় প্রবাসী ভারতীয়দের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এমন মন্তব্য করেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রাজনাথ সিংহের ‘পিওকে-বার্তা’কে স্বাগত জানাচ্ছেন বালুচিস্তানের নেতা মির ইয়ার বালোচও। তাঁর কথায়, ‘‘মাননীয় রাজনাথ সিংহজির বিবৃতিকে বালুচিস্তানের পক্ষ থেকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।’’ এর পাশাপাশি রবিবার গভীর রাতে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পাক বিমান বাহিনীর হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন এই বালোচ নেতা। সেই সঙ্গে সকল আন্তর্জাতিক ক্রীড়ার মঞ্চে পাকিস্তানকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
মির ইয়ারের বালোচের মতে, পিওকে (পাক অধিকৃত কাশ্মীর) ভারতে মিশে গেলে, পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সেনার অধীনে থাকার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবেন সেখানকার মানুষজন। মঙ্গলবার আনন্দবাজার পত্রিকার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মির ইয়ার বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, পিওকে ভারতে মিশে গেলে তা পাকিস্তানের তথাকথিত ছায়াযুদ্ধের সমীকরণকে ভেঙে দেবে। ফলে উপমহাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরবে।’’ তিনি আরও জুড়ছেন, ‘‘সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করে ভারত যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, তার ফলে আমরা নিশ্চিত নয়াদিল্লি তার হারানো ভূখণ্ডও পুনরুদ্ধার করবে।’’
রবিবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের তিরাহ উপত্যকার কোলে অবস্থিত পাহাড়ি জনবসতি মাত্রে দারায় হামলা চালিয়েছিল পাক বিমানবাহিনী। ঘটনায় গ্রামের অন্তত পাঁচটি বাড়ি ধুলোয় মিশে গিয়েছে বলে খবর। মৃত অন্তত ৩০। যার মধ্যে মহিলা এবং শিশুর সংখ্যাই বেশি। এই প্রসঙ্গে মির ইয়ার বালোচ বলছিলেন, ‘‘সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানের নামে সাধারণ মানুষের উপর হামলা যুদ্ধাপরাধের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। অবিলম্বে আন্তর্জাতিক মহলের উচিত, পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা।’’ হামলার নিন্দা করেছে ভারতও। ভারতীয় কূটনীতিবিদ ক্ষীতিশ ত্যাগীর কথায়, ‘‘দেশের মানুষের উপর বোমাবর্ষণের ফাঁকে সময় পেলে পাকিস্তানের উচিত দেশের অর্থনীতিকে বাঁচানোর দিকে মন দেওয়া।’’
বিশ্বের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠনগুলির কাছেও বিশেষ আর্জি রেখেছেন মির ইয়ার বালোচ। তাঁর দাবি, আন্তর্জাতিক মঞ্চে আয়োজিত সকল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে পাকিস্তানকে ‘বহিষ্কার’ করা হোক। কিন্তু কেন? বালোচ নেতার যুক্তি— এই সব খেলা থেকে অর্জিত অর্থ পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে ইন্ধন দেওয়ার কাজে ব্যবহার করছে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে পাকিস্তান দেশের ভাবমূর্তিও সাফ রাখতে পারছে। মির ইয়ারের কথায়, ‘‘খেলাধুলোর মূল্যবোধের সঙ্গে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি কোনও ভাবেই খাপ খায় না।’’ ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটি (আইওসি), আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি), ফিফার মতো একাধিক সংগঠনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)