শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে জল্পনা থাকলেও বিহারে সম্ভবত ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন নীতীশ কুমারই। সে ক্ষেত্রে আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবার এই নিয়ে দশম বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন নীতীশ। এনডিএ সূত্রে জানানো হয়েছে, বিহারে এ বারের ‘ঐতিহাসিক’ জয়ের পরে সেই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মূলত মোদী কবে আসতে পারবেন, তার উপরেই শপথের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়া নির্ভর করছে।
বিহারের ভোট ঘোষণার আগে থেকেই নীতীশের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জল্পনা জারি ছিল। এমনকি ভোটের ফলাফলের পরেও নীতীশের প্রকাশ্যে না-আসা নিয়ে এনডিএ শিবিরে গুঞ্জন শুরু হয়। সূত্রের মতে, শারীরিক অবস্থা যা-ই হোক না কেন, জোটের ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে নীতীশের মুখ্যমন্ত্রিত্বই আপাতত মেনে নিয়েছে বিজেপি। তবে তিনি আগামী পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে নীতীশের দলের মধ্যেই সংশয় রয়েছে বলে খবর। রাজনীতিকদের মতে, নীতীশের শরীরের অবস্থা বুঝে, প্রয়োজনে আগামী বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে নিজেদের দাবি পেশ করতে পারে বিজেপি। আপাতত মন্ত্রিসভার রূপরেখা ঠিক করতে দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেডিইউয়ের সঞ্জয় ঝা, রাজীব রঞ্জন সিংহেরা।
এ বারের নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে কার্যত পাল্লা দিয়ে আসন বাড়িয়েছে নীতীশের দল জেডিইউ। কিন্তু বেশি আসন জেতার সুবাদে নীতীশের মন্ত্রিসভায় দু’টি উপমুখমন্ত্রী পদের দাবি জানিয়ে রেখেছে বিজেপি। এ যাত্রায় ১৯টি আসন জিতেছে চিরাগ পাসোয়ানের দল এলজেপি (রামবিলাস)। সূত্রের মতে, রামবিলাস-পুত্রও একটি উপমুখ্যমন্ত্রী পদের পাশাপাশি মন্ত্রিসভায় একাধিক আসনের দাবি জানিয়ে রেখেছেন। এনডিএ-র অন্য ছোট দলগুলিও মন্ত্রিসভায় শামিল হওয়ার দাবি জানিয়েছে। সূত্রের মতে, এত মন্ত্রিত্বের দাবি নিয়ে জটিলতা এড়াতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সব দল তাদের ৬ জন বিধায়ক-পিছু এক জন করে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী পদ পাবে। সেই সূত্র মানলে নীতীশের মন্ত্রিসভায় বিজেপির ১৫ জন, জেডিইউয়ের ১৪ জন, এলজেপি (রামবিলাস)-এর তিন জন মন্ত্রী থাকার কথা। এ ছাড়া জিতন রাম মাঝির হাম ও উপেন্দ্র কুশওয়াহার দল আরএলএসপি-কে একটি করে মন্ত্রী-পদ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
সূত্রের খবর, আগামিকাল সকালে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন নীতীশ। সেখানেই বর্তমান বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার প্রস্তাব আনা হবে। তার পরেই রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের কাছে গিয়ে ইস্তফা দেওয়ার পাশাপাশি নীতীশ নতুন সরকার গড়ার দাবি পেশ করবেন বলে ঠিক রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এ বারের বিরাট জয়ের প্রেক্ষিতে পটনার গান্ধী ময়দানে শপথ নিতে পারেন নীতীশ। তবে শপথের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত ভাবে ঘোষণা করা হয়নি। সূত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী কবে উপস্থিত থাকতে পারেন, সেই অনুযায়ী আগামী ১৯ বা ২০ নভেম্বর শপথ নেবেন নীতীশ। সূত্রের মতে, মোদী-শাহ ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ও এনডিএ-র অন্য শরিক নেতারা উপস্থিত থাকবেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। সকলের দাবি মিটিয়ে বিহারের জাতপাত-ভিত্তিক রাজনীতিতে সব সমাজের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে মন্ত্রিসভা গঠনইএখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জনীতীশের সামনে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)