যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে ৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল স্পাইসজেটের এক বিমানের যাত্রীদের। সেই হয়রানির জন্য ওই উড়ানের ১৭২ জন যাত্রীকেই টিকিটের টাকা ফেরত দিতে হবে বলে স্পাইসজেটকে নির্দেশ দিল ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)। তা বাদে অপেক্ষারত যাত্রীদের খাবার ও পানীয় বিক্রি করে যে অর্থ আয় করেছিল বিমানসংস্থাটি, তাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। ভারতে অসামরিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এমন নির্দেশ সম্ভবত এই প্রথম।
বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই সিদ্ধান্তে নড়েচড়ে বসেছে বিমানসংস্থাগুলি। আর এক সস্তার বিমানসংস্থা ইন্ডিগো অবশ্য ডিজিসিএ-এর এই সিদ্ধান্তকে কার্যত স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এমন পরিস্থিতি তৈরিই হওয়া উচিত নয় সস্তার বিমানসংস্থার ক্ষেত্রে।
ঠিক কী হয়েছিল স্পাইসের ওই উড়ানে? ডিজিসিএ জানিয়েছে, ১৬ জুন স্পাইসজেটের বোয়িং বিমানটির মুম্বই থেকে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছাড়ার মুহূর্তে বিমানের ককপিটের প্যানেলে ফুটে ওঠে জরুরি সঙ্কেত। তাতে বলা হয়েছিল, বিমানটি যদি ওড়ে সে ক্ষেত্রে তার ভিতরের বাতানুকূল যন্ত্র সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে নির্ধারিত সময়ে বিমানটি উড়তে পারেনি। আর তার জেরে মুম্বই বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে বাধ্য হন যাত্রীরা। কিন্তু সে অপেক্ষার মেয়াদ যে পাঁচ ঘণ্টা দাঁড়াবে, তা ভাবতে পারেননি তাঁরা। আরও অভিযোগ, বিমানবন্দরে অপেক্ষা করার সময় নিয়ম ভেঙে তাঁদের কাছে খাবার ও পানীয় বিক্রি করেছিল বিমানসংস্থাটি। সব কিছু জানিয়ে ডিজিসিএ-র দ্বারস্থ হয়েছিলেন উড়ানেরই এক যাত্রী। ঘটনার তদন্ত করে ডিজিসিএ। তার পরেই সোমবারের এই নজিরবিহীন নির্দেশ।
ডিজিসিএ-র নির্দেশ অনুযায়ী, উড়ান চলাচল ক্ষেত্রে যে বিধি রয়েছে তা অনুযায়ী, কোনও উড়ান নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা পর ছাড়লে যাত্রীদের খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করবে সংশ্লিষ্ট বিমানসংস্থা। এ ক্ষেত্রে স্পাইসজেট তা করেনি। স্পাইসজেট সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, এই নিয়ম জানা ছিল না বিমানকর্মীদের। ডিজিসিএ-র জবাব, ভবিষ্যতে যাতে এ হেন ঘটনা আর না হয় সেজন্য কর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিক স্পাইসজেট। কিন্তু ১৬ জুনের ঘটনার মূল্য চোকাতেই হবে তাদের। সংস্থার মুখপাত্র বলেন, “বাকি বিমানসংস্থাগুলির মতো স্পাইসজেটও অপেক্ষারত যাত্রীদের খাবারের বন্দোবস্ত করে থাকে। আমরা ডিজিসিএকে খুব শীঘ্রই উত্তর দেব।”
সস্তার অন্য বিমানসংস্থা ইন্ডিগো-র মত অবশ্য ভিন্ন। একটা উড়ান পাঁচ ঘণ্টা দেরি হওয়ার মতো পরিস্থিতিই সেখানে তৈরি হবে না বলে জানিয়েছেন ইন্ডিগোর এক অফিসার। তবে, কোনও কারণে উড়ান ছাড়তে ২ ঘণ্টার বেশি দেরি হলে যাত্রীদের বিনা পয়সায় খাবার দেওয়াটা যে বাধ্যতামূলক তা মেনে নিয়েছেন এই সংস্থার কর্তারা।
ইন্ডিগো সূত্রের খবর, বিমান ছাড়ার অনেক আগে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে তা এসএমএস করে যাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হয়। কোনও যাত্রী তারপরেও বিমানবন্দরে এসে দু’ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করলে তাঁকে খাবার দেওয়া হয়। তবে এক ঘণ্টার বেশি দেরি হলেই বিকল্প বিমান ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়। অন্য সংস্থার উড়ানে যাত্রীদের গন্তব্যে পাঠিয়ে দিতে চেষ্টা করেন তাঁরা। দু’ঘণ্টার বেশি দেরি হলে উড়ান বাতিল করে যাত্রীদের টিকিটের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। তাই স্পাইসের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় না।
স্পাইসজেট অবশ্য বিকল্প উড়ানের ব্যবস্থা করেছিল। তবে পাঁচ ঘণ্টা পর। ফলে জ্বালানির খরচ তো হলই। তা বাদে এখন টিকিটের টাকাও ফেরত দিতে হবে তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy