Advertisement
০৭ মে ২০২৪

বাবুলের বিয়ে, বঙ্গভবনে ঘর-সৌজন্য মমতার

এ হল ঝালমুড়ি সৌজন্যের দ্বিতীয় অধ্যায়। এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অন্য দিকে বাঙালি ভারী শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। প্রথম বার কলকাতার রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়া। এ বার দ্বিতীয় অধ্যায়ে নিজের উপহার হিসেবে বঙ্গভবনে দশটি ঘরে বিয়ের অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া।

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪১
Share: Save:

এ হল ঝালমুড়ি সৌজন্যের দ্বিতীয় অধ্যায়। এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অন্য দিকে বাঙালি ভারী শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। প্রথম বার কলকাতার রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ঝালমুড়ি খাওয়া। এ বার দ্বিতীয় অধ্যায়ে নিজের উপহার হিসেবে বঙ্গভবনে দশটি ঘরে বিয়ের অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া। এবং তা ব্যক্তিগত স্তরে। মমতার এই অপ্রত্যাশিত সৌজন্যে প্রাক্-বিবাহ লগ্নে মুগ্ধ পাত্র বাবুল। কিছুটা অবাকও, কারণ তিনি তো আবার পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির নেতা। আসানসোল থেকে নির্বাচিত সাংসদ।

ঘটনাটি কী ঘটেছে?

বাবুলের বিয়ে আগামী ৯ অগস্ট। বিয়ে উপলক্ষে দিল্লিতে একটি সরকারি হোটেলের কনভেনশন সেন্টারে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এক দিকে জনপ্রিয় শিল্পী। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বাবুলের অতিথি তালিকা সুদীর্ঘ। প্রধানমন্ত্রী থেকে বাবা রামদেব। হেমামালিনী থেকে শ্রেয়া ঘোষাল। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আলাদা করে আমন্ত্রণ জানাতে ভোলেননি বাবুল। পাশাপাশি এসএমএস করে জানতে চেয়েছেন যে দিদি আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন কি না? মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে বাবুল ও তাঁর স্ত্রীকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সে দিনের অনুষ্ঠানে আসার অপারগতা জানান। কারণ তখন তিনি ত্রিপুরায় থাকবেন। কিন্তু বিয়ের পর নতুন বউয়ের সঙ্গে বাবুলকে বিশেষ আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি।

কাহিনি এখানেই শেষ নয়। বাবুলকে তাঁর অতিথিদের বিভিন্ন হোটেল ও সরকারি নিবাসে থাকার বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে। এর মধ্যে বঙ্গভবনে অতিথিদের জন্য খানদশেক ঘর বুক করতে চেয়েছিলেন তিনি। এই কাজে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সাহায্য চান বাবুল। অরূপ বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতেই সঙ্গে সঙ্গে মমতা নির্দেশ দেন দশটি ঘর বাবুলের জন্য বুক করে দেওয়া হোক। এবং জানান যে বাবুলের কাছ থেকে ঘরের ভাড়া নেওয়া হবে না। যা খরচ হবে, তা মমতা নিজেই দিয়ে দেবেন বলেও জানান অরূপকে। বলা যেতে পারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে এ হল এক প্রতীকী উপহার।

তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘দিদির দিক থেকে তো এটা নতুন নয়। রাজনৈতিক বিরোধের জায়গায় বিরোধ থাকে। কিন্তু সৌজন্যের রাজনীতিতে দিদি সব সময়ই এগিয়ে ছিলেন। জ্যোতিবাবুর সঙ্গে যখন চূড়ান্ত লড়াই চলছে, সেই সময়েও জ্যোতিবাবুর জন্মদিনে দিদি বাড়ি গিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে এসেছিলেন।’’

মমতা-বাবুলের সৌজন্য বিনিময় ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছে দিল্লির রাজনৈতিক মহল। বাবুল নিজে বলছেন, ‘‘আমি আপ্লুত। রাজনৈতিক নয়, ক্রিকেটীয় ভাষায় বলব, ক্লিন বোল্ড।’’ ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, বিজেপির মন্ত্রী হয়েও তিনি শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ঝালমুড়ি এপিসোডের বিতর্কের মধ্যেও তিনি অবিচল থেকেছেন। কারণ ব্যক্তিগত স্তরে তিনি সর্বদাই সৌজন্যের রাজনীতির পক্ষে।

রাজ্য বিজেপি নেতাদের এই সৌজন্য হজম হবে কি না, সেটা অন্য প্রশ্ন। তবে বাবুল বলেছেন, ‘‘আশা করব এটা নিয়ে কেউ অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Babul supriyo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE