E-Paper

Digital University Kerala: প্রযুক্তি শিক্ষার ধারণা বদলে দিয়েছে ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা

দেশের কোনও শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা যা দিতে পারে তার সমস্ত গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা।

বিজ্ঞাপন প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ ০৯:৩৬
ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা

ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে কেরালা। অতীতের পাতা ঘাঁটলে দেখা যাবে, কেরালা সরকার দেশের প্রথম আইটি পার্ক তৈরি করে। বিশ্বজুড়ে যখন তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিপ্লবের সৃষ্টি হয়েছিল এবং তার প্রতিধ্বনি তখনও এই দেশে পৌঁছয়নি, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে কেরালার এই পদক্ষেপ বিশ্বের ধারণাই পাল্টে দেয়। প্রায় তিন দশক পরে, দেশের প্রথম অন-ক্যাম্পাস ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির মাধ্যমে আরও এক নতুন মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে কেরালা — নাম কেরালা ইউনিভার্সিটি অফ ডিজিটাল সায়েন্সেস ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, যা ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা নামেও পরিচিত। ত্রিশ বছরের ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও, উভয় পদক্ষেপই কেরালার কাছে নিজস্ব উপায়ে অত্যন্ত উচ্চাবিলাষী হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। দেশের প্রথম আইটি পার্ক — টেকনোপার্ক মূলত তৈরি হয়েছিল উদীয়মান আইটি শিল্পের ভবিষ্যত সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে সেই পার্কের জন্য তৈরি হওয়া বিশাল কর্মজীবনের সুযোগগুলিকে কাজে লাগানোর লক্ষ্যেই চালু করা হয়েছিল কেরালা ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি। বলা যেতে পারে, তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলির কাছে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের বিপুল চাহিদার ক্রমবর্ধমান উত্তর হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়।

ভারত এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যান্য দেশে পরিচালিত একটি সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা সাম্প্রতিককালে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিস দ্বারা প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই অঞ্চলের আরও ৮৬ মিলিয়ন মানুষকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গেলে আগামী তিন বছরের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রশিক্ষিত হতে হবে। প্রযুক্তিক সংস্থাগুলি যা ইতিমধ্যেই অর্জন করে ফেলেছে। ক্লাউড কম্পিউটিং, সাইবার সিকিউরিটি এবং ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) এই তিনটি বিষয়ে দক্ষতা কোম্পানিগুলির ব্যবসার বৃদ্ধির জন্য আরও বেশি প্রয়োজন। যা সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মীদেরও এক সুরক্ষিত রাখবে। সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, অন-প্রিমিসেস সুবিধাগুলি থেকে ক্লাউডে স্থানান্তর পরিচালনা করা, ক্লাউড আর্কিটেকচার ডিজাইন এবং সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট — আগামী কয়েক বছরে এই বিষয়গুলিতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে।

ক্লাসরুম

ক্লাসরুম

এখানেই ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালার মতো একটি প্রিমিয়াম ইনস্টিটিউটের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। দেশের কোনও শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা যা দিতে পারে তার সমস্ত গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা। বিশ্বমানের শিক্ষার সুবিধা, দক্ষ অনুষদ এবং ক্যাম্পাস প্লেসমেন্টে — এগুলির ট্র্যাক রেকর্ড রীতিমতো চোখে পড়ার মতো । এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব থেকে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এখানে পড়াশুনা চলাকালীন শিক্ষার্থীরা শিল্পক্ষেত্রে সরাসরি অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়। যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এটিকে আলাদা করে দিয়েছে। এখানকার পাঠরত শিক্ষার্থীরা কোর্স শেষ করার পরে বাস্তব প্রেক্ষাপটে কাজ করা জন্য প্রস্তুত থাকে। শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নয়, ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের সংস্থাগুলির প্রযুক্তি পরামর্শদাতা হিসেবেও কাজ করে। এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের উপায় প্রদান করে। শিক্ষা ও শিল্প ক্ষেত্রে এই সরাসরি সংযোগ শিক্ষার্থীদের বাস্তব-জীবনে হাতে-কলমে প্রকল্পগুলিতে অত্যন্ত মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করে।

এই বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO), ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (IIST), কেরালা সয়েল সার্ভে বিভাগ, ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানিং অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (NATPAC), সেন্টার ফর ওয়াটার রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (CWRDM) সহ বেশ কিছু নামী সংস্থার সঙ্গে কাজ করে। পাশাপাশি, এই বিশ্ববিদ্যালয় সেমি কন্ডাক্টর ল্যাবরেটরি- ডিপার্টমেন্ট অফ স্পেস, সেন্টার ফর মেটেরিয়ালস ফর ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি, রাবার রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া এবং কেরালা ইলেকশন কমিশনের সঙ্গে যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেকার ভিলেজ, থিঙ্কবাটর, ইন্ডিয়া ইনোভেশন সেন্টার ফর গ্রাফিন, এবং ইন্টেলিজেন্ট আইওটি সেন্সর এবং কেরালা ব্লকচেইন একাডেমির অধীনে বিভিন্ন সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ইত্যাদি জায়গায় ইন্টার্নশিপ করার বিকল্পও রয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছে। শিক্ষার্থীদের কাছে এর অর্থ ও গুরুত্ব অপরিসীম। নবীন হওয়া সত্ত্বেও তারা ডেটা সায়েন্টিস্ট, ডেটা অ্যানালিস্ট, ডিজিটাল মিডিয়া অ্যানালিস্ট, এআই/মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসোসিয়েট ইঞ্জিনিয়ার-জিআইএস, অ্যাসোসিয়েট-সাইবার সিকিউরিটি অ্যানালিস্ট, সাইবার অ্যাসোসিয়েট সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদির মতো বিশেষজ্ঞ পদে নিযুক্ত হয়।

কেরালা ইউনিভার্সিটি অফ ডিজিটাল সায়েন্সেস, ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি (ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালা) আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়েছিল৷ কেরালা সরকার ২০ বছরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কেরালা (IIITM-K)-কে উন্নত করার পরেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেছে৷ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে এখানে পড়াশুনা চালু করা হয়েছে। তিরুবনন্তপুরমের টেকনোসিটি এবং টেকনোপার্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলি রয়েছে।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণ, ইন্টারনেট অফ থিংস, ইলেকট্রনিক সিস্টেমস এবং অটোমেশন, ইমেজিং প্রযুক্তি, ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং বিগ ডেটা, সাইবার নিরাপত্তা, ব্লকচেইন ইত্যাদি ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল স্তরে শিক্ষার্থীদের সক্ষম করে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে চলেছে।

অত্যাধুনিক ল্যাব, ক্লাস রুম এবং লাইব্রেরির পাশাপাশি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে বিশ্বের সেরা ও স্বীকৃত অনুষদরা। যাঁদের গবেষণাপত্র বিশ্বের অন্যতম সেরা জার্নালগুলিতে প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হয়। আধুনিক প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞ, অনুষদ ও শিক্ষকদের সান্নিধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি প্রাণবন্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কঠোর চিন্তা, উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতার প্রচার করে। এর পাশাপাশি এখানে একটি দক্ষ কেরিয়ার গাইডেন্স এবং প্লেসমেন্ট ইউনিট রয়েছে। যার ট্র্যাক রেকর্ড এক কথায় দুর্দান্ত।

রিয়েল-লাইফ প্রোজেক্টে কাজ করার এবং সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগগুলি শুধুমাত্র কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের বিকল্প নয় বরং শিক্ষার্থীদের কাছে এটি একটি উপার্জনের ক্ষেত্রও বটে! কোচিতে অবস্থিত মেকার ভিলেজটি দেশের বৃহত্তম ইলেকট্রনিক হার্ডওয়্যার ইনকিউবেটর। বর্তমানে প্রায় ৭০টি ইলেকট্রনিক টেক স্টার্টআপ রয়েছে এখানে। ইন্ডিয়া ইনোভেশন সেন্টার ফর গ্রাফিন হল গোটা দেশে গ্রাফিনের জন্য তৈরি করা প্রথম গবেষণা কেন্দ্র। গ্রাফিনের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য এটি একটি বিস্ময়কর উপাদান হিসাবে পরিগণিত হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে এটি আগামী দিনে ইলেকট্রনিক্স শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে৷ কেরালা ব্লকচেইন অ্যাকাডেমি দেশের মধ্যে প্রথম অ্যাকাডেমি যেটি শিক্ষার্থীদের এমন অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত করছে।

উৎসাহী শিক্ষার্থীরা

উৎসাহী শিক্ষার্থীরা

ডিজিটাল কেরালা বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামগুলিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে এমটেক, এমএসসি এবং পিজি ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে তিনটি এমটেক কোর্স পড়ানো হয়, তার মধ্যে দু’টিই এআইসিটিই অনুমোদিত৷ প্রথমটি হল কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, যার মধ্যে কানেক্টেড সিস্টেম এবং ইন্টেলিজেন্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাইবার সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি বিষয়গুলি পড়ানো হয় এবং অন্যটি হল ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্পেশালাইজেশন — যার মধ্যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স হার্ডওয়্যার, সিগন্যাল প্রসেসিং এবং অটোমেশন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স - রোবোটিক্স এবং কম্পিউটেশন, ইত্যাদি বিষয় রয়েছে। এম টেক ডিগ্রির আওতায় সদ্য চালু হওয়া প্রোডাক্ট ডিজাইন কোর্সটি এমন একটি প্রোগ্রাম যার লক্ষ্য পেশাদারদের আরও দক্ষতা করে তোলা।

কম্পিউটার সায়েন্স, ইকোলজি, ইলেকট্রনিক্স, এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স পড়ানো হয় এমএসসি প্রোগ্রামের আওতায়। এর মধ্যে এমএসসি ইলেকট্রনিক্স প্রোগ্রামটি নতুন চালু হয়েছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিককালে বিজনেস অ্যানালিটিক্স, ডিজিটাল গভর্নেন্স, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন, ফিনান্স, হিউম্যান রিসোর্স, ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, অপারেশনস, সিস্টেমস এবং টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে স্পেশালাইজেশন সহএকটি নতুন এমবিএ প্রোগ্রামও চালু করা হয়েছে।

পিজি ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের আওতায় ই-গভর্নেন্স পড়ানো হয়।

এই প্রতিবেদনটি ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি কেরালার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

Education Technology

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy