Advertisement
E-Paper

ধর্ষণে মিটমাটের রায় বেনজির ভুল: শীর্ষ আদালত

ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা, এ ধরনের অপরাধে নির্যাতিতাকে তাঁরই ধর্ষকের সঙ্গে আপস করতে বলা, আদালতের ‘নজিরবিহীন ভুল’। আজ এ কথা জানাল খোদ শীর্ষ আদালত।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৫ ০৩:১৭

ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা, এ ধরনের অপরাধে নির্যাতিতাকে তাঁরই ধর্ষকের সঙ্গে আপস করতে বলা, আদালতের ‘নজিরবিহীন ভুল’। আজ এ কথা জানাল খোদ শীর্ষ আদালত।

যদিও আদালতের এমন ‘ভুল’-এর নজির একাধিক।

প্রথম ঘটনা: বছর ষোলোর কিশোরীকে ধর্ষণ করেছিল এক যুবক। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল মেয়েটি। চার বছর পরে মহিলা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় যুবক। কিন্তু পরে মাদ্রাজ হাইকোর্ট তার সাজা কমিয়ে দেয়। ধর্ষিতার সঙ্গে দেখা করে মিটমাট করে নিতে বলে আদালত। তারা বলে, মেয়েটির ভাল চেয়েই কোর্টের এই রায়।

দ্বিতীয় ঘটনা: সাত বছরের একটি বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণ করেছিল মদন লাল নামে এক ব্যক্তি। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট অবশ্য ধর্ষণ নয়, শুধুই ‘এক নাবালিকার মর্যাদাহানি’র অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে। আর তাই ধর্ষণের সাজা ন্যূনতম পাঁচ বছর জেল তো দূর অস্ত্, দেড় বছরেরও কম কারাদণ্ড দেয় অপরাধীকে।

প্রথম ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে হইচই ফেলে দিলেও জল বেশি দূর গড়ায়নি। কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হাইকোর্টের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মধ্যপ্রদেশ সরকার। আর সেই মামলায় শীর্ষ আদালত আজ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণের চেষ্টার মতো মামলায় আদালতের বাইরে দু’পক্ষকে আপস করতে বলা, বিচারকের ‘নজিরবিহীন ভুল’।

বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, ‘‘এক জন মহিলার শরীরে যখন আঘাত করা হয়, তখন শুধু তাঁর দেহটাই নয়, তাঁর সম্পূর্ণ সত্তা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এক নারীর অস্তিত্বের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাঁর সম্ভ্রম। সেটা কোনও মাটির মূর্তি নয়। সেই সম্ভ্রমে যখন আঘাত লাগে, তখন তার বিচার করতে গিয়ে সমঝোতার পথে হাঁটা অনৈতিক।’’

তার পরেই ফের বলেন, ‘‘স্পষ্ট করে জানাচ্ছি, কোনও পরিস্থিতিতেই ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার মতো মামলায় আপস করে নেওয়ার কথা ভাবাও চলবে না।’’

একই কথা জানান বিচারপতি প্রফুল্ল সি পন্থ। বলেন, ‘‘শরীর নারীর কাছে মন্দিরের সমান। সেই মন্দিরকে অপবিত্র করা হয় এ ধরনের অপরাধে। অসম্মান করা হয় তাঁর অস্তিত্বকে। আর সম্মান-ই মানুষের জীবনের সেরা উপার্যন।’’

আদালত আরও জানায়, অপরাধীকে কোনও রকম উদারতা দেখানো চলবে না। যেমন বিয়ে করতে বলা, কিংবা টাকাপয়সা নিয়ে মিটমাট করে নিতে বলা দু’পক্ষকে।

আর এই সব অনুচিত কাজই করেছে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট, সমালোচনা করে বলে শীর্ষ আদালত। তারা জানায়, আপস করা হয়েছে গোটা ঘটনায়। ধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত পর্যন্ত করা হয়নি মদন লালকে। স্রেফ ‘মর্যাদাহানি’র মতো দোষে অপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেড় বছরেরও কম কারাবাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। যা সে আগেই জেলে কাটিয়ে ফেলেছিল। ফলে রায় ঘোষণার পরই মুক্তি পেয়ে যায় অপরাধী।

এর পরই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। শীর্ষ আদালত আজ মামলাটি পুনর্বিবেচনা করে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টকে। মাদ্রাজ হাইকোর্টের ঘটনায় অবশ্য সেটুকুও হল না। উল্টে তামিলনাড়ু মহিলা কমিশনের প্রধান বলেছেন, ‘বিরল রায়, তবে ভাল’।

Tamil Nadu rapist Supreme Court new delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy