Advertisement
E-Paper

চূড়ান্ত পর্যায়ে মতানৈক্য, ভেস্তে গেল ভারতে মাইনসুইপার নির্মাণ প্রকল্প

নৌসেনা সূত্রের খবর, ভারতের জলসীমাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অন্তত ২৪টি মাইনসুইপার প্রয়োজন। কিন্তু ভারতের হাতে রয়েছে মাত্র চারটি। ১২টি নতুন মাইনসুইপার তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। সে প্রকল্প আপাতত বিশ বাঁও জলে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ১৬:১৯
চিনা নৌসেনার মোকাবিলায় সাবমেরিনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারত। কিন্তু মাইনসুইপারও অত্যন্ত জরুরি বাহিনীর জন্য। সে প্রকল্প আপাতত বিশ বাঁও জলে। —ফাইল চিত্র।

চিনা নৌসেনার মোকাবিলায় সাবমেরিনের সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারত। কিন্তু মাইনসুইপারও অত্যন্ত জরুরি বাহিনীর জন্য। সে প্রকল্প আপাতত বিশ বাঁও জলে। —ফাইল চিত্র।

ভারতীয় নৌসেনার জন্য মাইনসুইপার তৈরির প্রকল্প ফের বড়সড় ধাক্কা খেল। দক্ষিণ কোরীয় সংস্থা ক্যাংনাম কর্পোরেশন এবং ভারতের গোয়া শিপইয়ার্ড লিমিটেডের (জিএসএল) যৌথ উদ্যোগে ভারতেই তৈরি হওয়ার কথা ছিল ১২টি মাইনসুইপার। ৩২ হাজার কোটি টাকার সেই প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনায় পৌঁছে বাতিল হয়ে গেল।

ভারতের সুবিশাল জলসীমাকে সুরক্ষিত রাখতে মাইন কাউন্টার মেজার ভেসেল (এমসিএমভি) বা মাইনসুইপার অত্যন্ত জরুরি। সমুদ্রের গভীরে প্রতিপক্ষের নৌসেনা যদি মাইন বিছিয়ে রাখে, তা হলে সেই মাইনকে চিহ্নিত করা এবং নিষ্ক্রিয় করার জন্য মাইনসুইপার প্রয়োজন হয়।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মাইনসুইপার এখন অত্যন্ত জরুরি ভারতীয় নৌসেনার জন্য। চিনা সাবমেরিনগুলি নিঃশব্দে মাইন বিছিয়ে রাখতে সক্ষম এবং গত কয়েক বছর ধরে ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলে তারা প্রায়ই গোপনে হানাও দিচ্ছে। ভারতীয় জলসীমাকে ঘিরে চিনের এই তৎপরতায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক উদ্বিগ্ন। জলসীমাকে নিশ্ছিদ্র করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা ভারত গ্রহণ করেছে। এই মাইনসুইপার নির্মাণ প্রকল্প সেগুলিরই অন্যতম। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনায় গিয়ে যে ভাবে বাতিল হয়ে গেল চুক্তি, তাতে নৌসেনার সমস্যা বাড়ল বই কমল না

নৌসেনা সূত্রের খবর, ভারতের জলসীমাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অন্তত ২৪টি মাইনসুইপার প্রয়োজন। কিন্তু ভারতের হাতে রয়েছে মাত্র চারটি। পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছ থেকে কেনা ওই মাইনসুইপারগুলির কার্যকালও শেষ হওয়ার পথে। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে ডিকমিশন করতে হবে সেগুলিকে। সেই কারণেই ১২টি নতুন মাইনসুইপার তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। সে প্রকল্প আপাতত বিশ বাঁও জলে।

আরও পড়ুন: সীমান্তে ১৪ হাজার বাঙ্কার তৈরির পথে ভারত

মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগের আওতায় এই ১২টি মাইনসুইপার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। গোয়া শিপইয়ার্ডে সেগুলি তৈরি হওয়ার কথা ছিল। ক্যাংনাম কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেগুলি তৈরি করার জন্য পরিকাঠামোও তৈরি হয়ে গিয়েছিল গোয়ায়। জিএসএল তার জন্য ইতিমধ্যেই ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছিল। ৩২ হাজার কোটি টাকার চুক্তি শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যাওয়ায়, গোয়ায় তৈরি হওয়ার পরিকাঠামোর ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

আরও পড়ুন: সীমান্তের ৬০০ মিটার ভিতরে ‘চিনের রাস্তা’

কিন্তু কেন ভেস্তে গেল চুক্তি? প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, রিকোয়েস্ট ফর প্রোপোজালে (আরএফপি) চুক্তির যে রূপরেখা ছিল, ক্যাংনাম কর্পোরেশন আলোচনার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে সেই রূপরেখা কিছুটা বদলাতে চাইছিল। প্রযুক্তি হস্তান্তর, নির্মাণ কৌশল এবং আর্থিক বিষয় নিয়েও কিছু মতানৈক্য হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে।

ক্যাংনামের সঙ্গে চুক্তি ভেস্তে গেলেও ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পক্ষে চুপচাপ বসে থাকা সম্ভব নয়। অত্যন্ত দ্রুত মাইনসুইপার তৈরির পথে পা ফেলতে হবে ভারতকে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তাই জিএসএল-কে নির্দেশ দিয়েছে, নতুন করে ‘এক্সপ্রেশন অব ইনটারেস্ট’ (ইওএল) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে। তার পরে আরএফপি আদান-প্রদান হবে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলে কোনও একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে।

Minesweeper MCMV Indian Navy India South Korea ভারতীয় নৌসেনা ভারত দক্ষিণ কোরিয়া
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy