মৃতের বাবা (বাঁ দিকে) এবং সেই চিকিত্সক।
চিকিত্সকের কাছে রোগী ছুটে যায় সুস্থ হওয়ার আশায়। কিন্তু সেই চিকিত্সকই যদি রোগীকে মেরে ফেলার পরামর্শ দেন তা হলে! হ্যাঁ, অবিশ্বাস্য হলেও এমনটাই নাকি করেছেন আগরার এসএন মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিত্সক।
পেটে অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে এসেছিলেন আগরার যুবক ব্রিজেশ সিংহ। তিনি অনেক দিন ধরেই যক্ষ্মাতে ভুগছিলেন। গত শুক্রবার রাতে বাড়াবাড়ি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে এসেছিলেন বাবা টিকম সিংহ। অভিযোগ, ব্রিজেশকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনও কাজ না হওয়ায় ব্রিজেশের বাবা হাসপাতালেরই এক সিনিয়র চিকিত্সককে ফোন করেন। মাঝ রাতে অচেনা ফোনের আওয়াজে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় খুব বিরক্ত হন তিনি। কান্না ভেজা গলায় ওই চিকিত্সককে টিকম জানান, তাঁর ছেলেকে হাসপাতাল ভর্তি নিতে চাইছে না। ছেলের সঙ্কটজনক পরিস্থিতির কথাও জানান তিনি। সব শুনে ওই চিকিত্সক হাসপাতালের কোনও জুনিয়র চিকিত্সককে ফোনটি দিতে বলেন টিকমকে। কথা মতো এক জুনিয়র চিকিত্সককে ফোন দেন তিনি। ফোনের ওপার থেকে জুনিয়র চিকিত্সককে ওই চিকিত্সক নির্দেশ দেন মুকেশকে ভর্তি করিয়ে নিতে। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। ব্রিজেশকে ভর্তি করানোর পর জুনিয়র চিকিত্সকরা যদি মনে করেন তাঁকে মেরে ফেলতে সেটাও করতে পারেন— এই নির্দেশও দেন তিনি।
এর পর ব্রিজেশকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। তাঁকে তখনকার মতো একটি ইঞ্জেকশন দিয়ে যক্ষ্মা বিভাগে রেফার করেন জুনিয়র চিকিত্সকরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ব্রিজেশের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তার পর তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও ভাবেই বাঁচানো যায়নি তাঁকে। হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিত্সার গাফিলতির অভিযোগ তোলে ব্রিজেশের পরিবার।
শুনুন সেই সেই রেকর্ডিং... কী বলেছিলেন চিকিত্সক
ছেলেকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি টিকম সিংহ। পারেননি হাসপাতালের গাফিলতিতেই! শোকার্ত পরিবার যখন ব্রিজেশের অন্তিম সংস্কারের ব্যবস্থা করছিলেন, সেই সময়ই একটি রহস্য ফাঁস হয়, যা শুনে সকলের চোখ কপালে ওঠে। ব্রিজেশরই এক আত্মীয় টিকমের ফোনটি নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছিলেন, তখনই ওই ফোনে একটি রেকর্ড সামনে আসে। রেকর্ডে হাসপাতালের সিনিয়র চিকিত্সক এবং জুনিয়র চিকিত্সকের সেই রাতের কথোপকথন ধরা পড়ে। হইচই পড়ে যায় ফোনের সেই কথোপকথন নিয়ে।
ব্রিজেশের বাবা টিকম বলেন, “দুই চিকিত্সকের কথোপকথন শোনার পর আমি স্তম্ভিত। এঁদের চিকিত্সক বলতে লজ্জা হয়। যে চিকিত্সক ছেলেকে ভর্তি করানোর নির্দেশ দিলেন, সেই চিকিত্সকই আবার ছেলেকে মেরে ফেলার জন্য জুনিয়র চিকিতসকদের নির্দেশ দিলেন!”
দুই চিকিত্সকের এই কথোপকথন নিয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অজয় অগ্রবালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তিন সদস্যের একটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।”
আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy